ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মিনিকেট বিশেষ কোন চাল নয়, মোটাচাল কেটে চকচকে করা

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মিনিকেট বিশেষ কোন চাল নয়, মোটাচাল  কেটে চকচকে করা

সংসদ রিপোর্টার ॥ বাজারে মিনিকেট বলতে কোন চাল নেই! বাজার থেকে মিনিকেট চাল কিনে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা। বাজারে যে চাল মিনিকেট হিসেবে বিক্রি হচ্ছে সেগুলো আসলে সাধারণ চালকে বিশেষ পলিশিং মেশিনে কেটে চিকন ও চকচকে করে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এই চালের স্বাভাবিক খাদ্যমান ও পুষ্টিগুণ নেই বলে মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস)। রবিবার জাতীয় সংসদ ভবনে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ গবেষণার ফল উপস্থাপন করেছে বিআইডিএস। তারা স্বাভাবিক খাদ্যমানহীন এই চাল বাজারজাতকরণ বন্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির পরামর্শ দিয়েছে। বৈঠকে ব্যাংক জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ লুটপাটের ঘটনা রোধ করার উপায় বের করতে বিআইডিএসকে গবেষণা পরিচালনা করার পরামর্শ দিয়েছে কমিটি। পাশাপাশি শেয়ার বাজার স্থিতিশীল রাখার উপায় বের করতে আরও কার্যকর গবেষণা পরিচালনার সুপারিশ করা হয়েছে বৈঠক থেকে। কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সময় কমিটির সদস্য পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, রফিকুর ইসলাম, মুহিবুর রহমান মানিক, মোঃ তাজুল ইসলাম অংশ নেন। কমিটির বিশেষ আমন্ত্রণে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান সভায় অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে বিগত এক দশকে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিসের (বিআইডিএস) প্রধান গবেষণা কার্যক্রম, গবেষণার প্রাধিকার, সমস্যা ও সমাধান এবং গবেষণা কার্যে ব্যয়িত অর্থ সম্পর্কে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রদান ও আলোচনা করা হয়। বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক সাংবাদিকদের বলেন, বিক্রেতারা ক্রেতাদের চরমভাবে ঠকাচ্ছে। বাস্তবে বাজারে মিনিকেট বলে কোন চাল নেই, সবই মেশিনে কাটা পলিশ করা চাল। এতে মানুষ পুষ্টিগুণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই এই চাল বন্ধে কৃষি মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয়কে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। বৈঠকে জানানো হয়, ২০০৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিআইডিএস মোট ১০৭টি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে, যার মধ্যে শতকরা ৪৪ দশমিক ১৭ ভাগ বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে, শতকরা ৫২ দশমিক ৩৬ বেসরকারী অর্থায়নে এবং ৩ দশমিক ৪৭ ভাগ বিআইডিএসের নিজস্ব অর্থায়নে সম্পন্ন করা হয়েছে। বৈঠকে জানানো হয়, বিআইডিএসের এক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে বাজার থেকে মিনিকেট নামে যে চাল কেনা হয় তা আসলে সাধারণ মোটা চাল বিশেষ পলিশিং মেশিনে কেটে চিকন ও চকচকে করে বেশি দামে বিক্রি করে মুনাফা লাভের একটি ফন্দি এবং এই চালে স্বাভাবিক খাদ্যমান নষ্ট হয়ে যায়। এই গবেষণালব্ধ ফলাফলটি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার করে জনসচেতনতা সৃষ্টির পরামর্শ দেয়া হয়। বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে কোন প্রকল্প নেয়ার আগে গবেষণা করে বাস্তবভিত্তিক এবং দেশের কল্যাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পরামর্শ দেয়া হয়। মাংসের মান নিয়ন্ত্রণে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ॥ পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতি জেলায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সুপারিশ করা হয়েছে। রবিবার সংসদ সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে এ তথ্য জানানো হয়। মীর শওকাত আলী বাদশার সভাপতিত্বে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, কামাল আহমেদ মজুমদার, এইচএম ইব্রাহীম, মুহা. গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস, ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু, খন্দকার আজিজুল হক আরজু, এ্যাডভোকেট মুহম্মাদ আলতাফ আলী এবং শামছুন নাহার বেগম অংশ নেন। বৈঠকে পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১১ এর বাস্তবায়ন ও প্রায়োগিক ফলাফল, প্রতি জেলায় মডেল উন্নত পোনা উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন, বাংলাদেশ মেরিন ফিসারিজ ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রকল্পের আওতায় মৎস্য জরিপ কার্যক্রম অগ্রগতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের অধীন সকল দফতরের শূন্য পদ পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কমিটি সুপারিশ করে।
×