ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্টুডিও থিয়েটার হলে ‘জেরা’ নাটকের মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

স্টুডিও থিয়েটার হলে ‘জেরা’ নাটকের মঞ্চায়ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নারীর প্রতি অমানবিকতার চিত্র তুলে ধরা এক নাটক জেরা। সেই সঙ্গে প্রযোজনাটির আরেক বার্তা হচ্ছে সন্তানের প্রতি মায়ের নিবিড় মমত্ব। মিশরীয় নাট্যকার ফরিদ কামিল রচিত দ্য ইন্টারোগেশন নাটক অবলম্বনে প্রযোজনাটির রূপান্তর করেছেন তারিক আনাম খান। নির্দেশনা দিয়েছেন ইউসুফ হাসান অর্ক। শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ পরিবেশিত প্রযোজনাটি। নাটকের কাহিনী আবর্তিত হয় একাত্তরের ১৫ ডিসেম্বরের এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে। সারাদেশে তখন কারফিউ জারি করা হয়েছে। দিবাগত রাতে একটি পোড়ো বাড়িতে এক নারীকে ধরে আনা হয় জেরা করবার জন্য। শান্তি কমিটির সদস্য এবং পাকবাহিনী নিযুক্ত একজন বাঙালী দালাল তাকে জেরা করেন। কারণ, সেই নারীর বাসায় খাটের নিচ থেকে বোমা পাওয়া গেছে। মধ্যবয়সী এই নারী দুই সন্তানের জননী। দুই ছেলে রফিক ও সেলিম কাজ করে মোটরগাড়ির গ্যারেজে। জেরা করতে করতে ক্রমেই দালালের ক্রুরতার সঙ্গে নারীটির অসহায়ত্ব উন্মোচিত হয়। একপর্যায়ে নারীটি চিৎকার করে মাথার ওপরে হাত তুলে স্রষ্টার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে। ঠিক সেই মুহূর্তে লোকটি নির্দেশ দেয় যেÑ হাত দুটো যেন অনড় অবস্থায় ওপরেই থাকে। নড়লেই তার সন্তানদের মেরে ফেলা হবে। দুই হাতে দুই ছেলের ভাগ্য। দীর্ঘক্ষণ নানা ছলে হাত নাড়ানোর চেষ্টা করা হলেও নারীটি তার সন্তানদের জীবনের কথা ভেবে পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। হাত নড়ে না, কাঁপে না চোখের পাতাও। সকাল হয়ে যায়। আসে বাঙালীর বিজয়ের দিন ১৬ ডিসেম্বর। প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে নির্দেশক ইউসুফ হাসান অর্ক বলেন, গোটা পৃথিবীজুড়ে চলমান যুদ্ধ-বিগ্রহের সময় অত্যাচার ও শোষণের নৃশংসতা এখন সমান্তরাল। সেই বিবেচনাতেই মিশরীয় এ নাটকটি রূপান্তর করা হয়েছে। প্রযোজনাশৈলীর ক্ষেত্রে বলা যায়, অভিনয়ে ইউরোপীয় বিশুদ্ধ চরিত্রাভিনয়রীতির পাশাপাশি সাজেস্টিভ মঞ্চের আবহে কিছু নাটকীয় উদ্ভাস নির্মাণের স্বাধীনতা নেয়া হয়েছে। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন হাবিব মাসুদ, ফাহিম মালেক ইভান, রুবাইয়া জাবিন প্রিয়তা, আইনুন পুতুল প্রমুখ। সোলনারা তানিয়ার পোশাকসজ্জায় মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন তৌকীর আহমেদ। রবীন্দ্রনাথ ও অজয় রায়ের গান কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত গানের সঙ্গে পরিবেশিত হলো সুরকার অজিত রায়ের সুরারোপিত গান। শনিবার শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে এ সঙ্গীতসন্ধ্যার আয়োজন করে সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ। পরিবেশনায় অংশ নেয় অভ্যুদয় সঙ্গীত অঙ্গনের শিল্পীরা। রবীন্দ্রসঙ্গীত ও অজিত রায়ের সুরারোপিত গানে সজ্জিত সঙ্গীত আসরে পরিবেশিত গানগুলোর শিরোনাম ছিল ‘অন্ধকারের উৎস হতে’, ‘কবে আমি বাহির হলেম’, ‘স্বাধীন স্বাধীন দিকে দিকে’, ‘আয়রে আয়রে সবাই’, ‘আজ বাংলাদেশ’, ‘মধু গন্ধে ভরা’, ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’, ‘শৃঙ্খল ভাঙ্গা সুর বাজে’, ‘সংকোচের বিহ্বলতায় হয়ো না ম্রিয়মাণ’, ‘আজি সপ্ত সাগর’, ‘এখন আর দেরি নয়’, ‘হে মহামানব’, ‘হবে জয় হবে জয়’ ও ‘ধূমকেতু’। নিভৃত প্রাণের গান এক আয়োজনে উপস্থাপিত হলো বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের গান ও কবিতায় সাজানো যুগলবন্দী পরিবেশনা। কখনো সুরের মায়াজালে আবার কখনো বা কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে মুগ্ধ হলো শ্রোতা-দর্শক। শনিবার সন্ধ্যায় ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো ‘নিভৃত প্রাণের গান’ শীর্ষক এ আয়োজন। ঢাকার পঞ্চভাস্কর ও লন্ডনের আনন্দধারা আয়োজিত অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন ইমতিয়াজ আজমেদ। রবীন্দ্র রচনা থেকে পাঠ ও আবৃত্তি করেন ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়।
×