ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীর পদ্মার তীরে ডিজিটাল বাংলাদেশের হাতছানি

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রাজশাহীর পদ্মার তীরে ডিজিটাল বাংলাদেশের হাতছানি

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ জেলার পবা উপজেলার নবীনগরে গড়ে উঠছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক’। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের সঙ্গে বৃহৎ এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে হাইটেক শিল্পের বিকাশ, মৌলিক অবকাঠামো তৈরির মাধ্যমে হার্ডওয়্যার শিল্প প্রতিষ্ঠা করা,আইটি/আইটিইএস শিল্প প্রতিষ্ঠা এবং সংশ্লিষ্ট কার্য পরিচালনার জন্য বিদেশী কোম্পানি আকৃষ্ট করতে সহায়ক পরিবেশ তৈরির জন্য এ হাইটেক পার্ক। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বৃহৎ এ প্রকল্প। জানা যায়, গত বছরের ২২ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকে প্রকল্পটি অনুমোদন লাভ করে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রমত্তা পদ্মার পারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যম-িত আন্তর্জাতিক মানসম্মত এই হাইটেক পার্ক গড়ে ওঠার পর সেখানে জ্ঞানভিত্তিক শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে প্রায় ১৪ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। যা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তির বিস্তারসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্কটি প্রায় ৩১ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই পাঁচতলা বিশিষ্ট ইনকিউবেশন সেন্টার ও বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। চলতি মাসেই ১০ তলা মাল্টিটেন্যান্ট বিল্ডিং (এমটিবি) ও পুরো জায়গাটিতে মাটি ভরাটের কাজের টেন্ডারসহ অন্যান্য টেন্ডারসমূহ পর্যায়ক্রমে আহ্বান করা হবে বলে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে। প্রকল্প সূত্র জানায়, প্রতি তলায় ২০ হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা এই প্রকল্পে ২ লাখ বর্গফুট জায়গায় ছেলেমেয়েরা কাজ করার সুযোগ পাবে। এ ছাড়াও সাবস্টেশন ও জেনারেটর ভবন, গভীর নলকূপ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, ড্রেন, প্রধান রাস্তা, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, সীমানা প্রাচীর, গেট ও ব্যারাক, ইলেক্ট্রিক্যাল কাজ এবং জিমনেশিয়ামসহ অন্য আনুষঙ্গিক উপাদানগুলো প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আগামী ২০১৯ সালের জুনে শেষ হবে এ প্রকল্প। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমদ পলক এমপি বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রুয়েট, রাজশাহী মেডিক্যাল, রাজশাহী কলেজসহ রাজশাহীতে প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের কথা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালে রাজশাহীতে এক জনসভায় এই অঞ্চলের জন্য একটি হাইটেক পার্ক প্রতিষ্ঠার কথা বলেছিলেন। বৃহস্পতিবার তিনি হাইটেক পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে রাজশাহীবাসীর স্বপ্ন পূরণ করতে রাজশাহীকে একটি প্রযুক্তি নগরী হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করে দিলেন। প্রযুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থানে একটি ডিজিটাল ইকোনমিক হাব হিসেবে রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম বলেন, ‘আমরা ৩১ একরেরও বেশি জায়গা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক গড়ে তুলছি। আশা করছি এখানে ১৪ হাজারেরও বেশি তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হবে। আমরা আইটি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং তাদের কর্মসংস্থানের বিষয়টি বিবেচনা করে দেশের বিভিন্ন স্থানে মোট ২৯টি হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এবং আইটি ট্রেনিং এ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এছাড়া বেসরকারী উদ্যোগে আরও ১১টি আইটি পার্ক কার্যক্রম চালাচ্ছে।’ হাইটেক পার্ক, রাজশাহী প্রকল্পের পরিচালক একেএএম ফজলুল হক জানান, এই প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত প্রকল্প হওয়ায় সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করে এটির বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
×