ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে পরিত্যক্ত ভবনে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রাজশাহীতে পরিত্যক্ত ভবনে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ নগরীর বক্ষব্যাধি (যক্ষ্মা হাসপাতালের) পশ্চিমে স্বাস্থ্য বিভাগের সরকারী জীর্ণ কোয়াটার দীর্ঘদিন আগে বসবাসের অযোগ্য হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সে জীর্ণ ভবনেই বসবাস করছেন বত্রিশটি পরিবার। ভবনটি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়েছে। যে কোন সময় তা ভেঙ্গে পড়তে পারে। সামান্য বাতাসেও যেখানে খসে পড়ে ইট পলেস্তারা, যে কোন সময় ভবনটি ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা জেনেও সেখানে বসবাস করে আসছেন এসব পরিবারের সদস্যরা। রাজশাহী প্যারামেডিক্যাল, যক্ষ্মা হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিক্যাল ও আইডি হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা বসবাস করছেন সেখানে। জীর্ণ এ ভবনে বসবাসকারীরা জানান, সামান্য ৫ থেকে ৬ হাজার বেতনে চাকরি তাদের। দুর্মূল্যের বাজারে এই সামান্য টাকা দিয়ে তাদের সংসার চালানো দুরূহ বিষয়। বসবাসের জায়গা নেই। ভাড়া বাড়িতেও থাকার সাধ্য নেই। তাই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন তারা। এরই মধ্যে ভবনের পলেস্তারা খসে পড়েছে। বেরিয়ে গেছে ছাদের রড। ছাদ বেয়ে বৃষ্টিও পরে ঘরে। একটু জোরে বাতাস হলে খসে পড়ে ইট। বুধবার সরেজমিনে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, নিজস্ব অর্থায়নে তারা ভবনের ভাঙ্গা স্থানগুলো মেরামত করছে। কিন্তু এই মেরামত কোন কাজে আসবেনা জেনেও তারা তা কাজ করছেন। তারা দ্রুত ভবন সংস্কার বা ভেঙ্গে ফেলে নতুন করে ভবন তৈরি করে নিশ্চিত দুর্ঘটরা হাত হতে রক্ষা করার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানান। রাজশাহী প্যারামেডিক্যালের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডাক্তার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, তারা ওই ভবন অনেক আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন। কেউ সেখানে বসবাস করতে পারবেন না বলেও জানানো হয়েছে। তারপরেও সেখানে বাস করছেন কর্মচারীরা। বারবার বারণ করা সত্ত্বেও তারা এ ভবন ছাড়ছেন না। কোন ক্ষয়ক্ষতি হলে কর্তৃপক্ষ দায় নেবে না বলেও জানান তিনি। প্রশাসনিক কর্মকর্তা দিদার রসুল বলেন, এই ভবনগুলো গণপূর্ত বিভাগের। তাই তাদের কিছুই করার নেই। গণপূর্ত বিভাগ উদ্যোগ নিলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন টেন্ডারের মাধ্যমে ভেঙ্গে নতুনভাবে তৈরি করতে পারে। এদিকে মেডিক্যালের তত্ত্বাবধানে ভবনে বসবাসকারীরা বেতনের ৫ ভাগ ভাড়া দিয়ে পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসবাস করছেন বলে জানান কয়েকজন বসবাসকারী। তাদের দাবি ভাড়া দিয়ে থাকলেও কর্তৃপক্ষ ভবনগুলো সংস্কার করছে না। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে গণপূর্ত বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী জান্নাত-ই-নূর ফারাহ বলেন, ওই ভবন অনেক আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এগুলো স্বাস্থ্য বিভাগের হওয়ায় তারা ইচ্ছা করলেই কোন কিছু করতে পারবেন না। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ চাহিদা দিলে তারা প্ল্যান ও এস্টিমেট করে ঢাকায় পাঠাবেন। তবে তিনি পরিত্যক্ত ভবনে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস না করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।
×