ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

পশ্চিমা মিত্রদের উদ্বেগ

রিয়াদ-দোহা বিরোধ মেটাতে ট্রাম্পের উদ্যোগ ব্যর্থ

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রিয়াদ-দোহা বিরোধ মেটাতে ট্রাম্পের উদ্যোগ ব্যর্থ

সৌদি আরব ও কাতরের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির যে উদ্যোগ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়েছিলেন সেটি ব্যর্থ হয়েছে। সৌদি যুবরাজ ও কাতারের আমিরের মধ্যে শুক্রবার রাতে ফোনে আলাপ হয়। ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুদেশের সরকারের মধ্যে কয়েক মাস পর প্রথম যোগাযোগ হয়। সৌদি নেতৃত্বাধীন কায়েকটি উপসাগরীয় দেশ কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর মধ্য মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন নিরাপত্তা স্বার্থ ক্ষুন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে ট্রাম্প অচলাবস্থা নিরসনের উদ্যোগ নেন। নিউইয়র্ক টাইমস। কাতারের ওপর সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। সৌদি আরব ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর ও বাহরাইন এই জোটে রয়েছে। সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন এবং ইরানের সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক রাখার অভিযোগ ওই দেশগুলো গ্যাস সম্পদ উপসাগরীয় ক্ষুদ্র দেশ কাতারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। অভিযোগগুলো অস্বীকার করে কাতার দাবি করেছিল তাদের প্রভাবশালী আলজাজিরা টিভি নেটওয়ার্কের ওপর রাশ টেনে ধরতেই প্রতিবেশী দেশগুলো তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প বিরোধ মেটাতে এক সপ্তাহ ধরে চেষ্টা করেন। কুয়েতের আমিরকে সঙ্গে নিয়ে তিনি এই উদ্যোগ শুরু করেন। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে কুয়েতের আমিরের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, আমি আশা করি আপনারা খুব শীঘ্রই একটি সমাধানে পৌঁছাতে পারবেন। কিন্তু শুক্রবার রাতে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানির মধ্যে ফোনে আলাপের পর দেখা গেল সহসা দুদেশের মধ্যে বিবাদ কাটছে না। দুই শীর্ষ স্থানীয় ব্যক্তির মধ্যে ফোন আলাপের পর কাতারের সরকারী বার্তাসংস্থার দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, দুদেশের মধ্যে বিরোধ নিরসনে সৌদি প্রিন্স যে দুজন দূত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কাতারের আমির তাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে ওই বিবৃতির ভাষায় সন্তুষ্ট হতে পারেনি রিয়াদ। কাতার তথ্য বিকৃত করেছে বলে সৌদি সরকারী বার্তা সংস্থা পাল্টা এক বিবৃতিতে দাবি করে। রিয়াদ মনে করে এই বিরোধে তাদের নতি স্বীকারকারী হিসেবে দেখানো হয়েছে। এরপর দুদেশের মধ্যে যোগাযোগ আবার বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কাতার ও সৌদি আরব দুই দেশের পশ্চিমা মিত্রদের উদ্বেগ বেড়েছে। দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ মেটানোর জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনসহ পশ্চিমা কূটনীতিকরা গত দুই মাস ধরে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প নিজে বিরোধ অবসানের চেষ্টা করেন। তবে শেষ পর্যন্ত তার এ উদ্যোগ সফল হয়নি। সৌদি আরব ও কাতারের মধ্যে শুক্রবারের ফোনালাপ ব্যর্থ হলেও কোন কোন বিশ্লেষক মনে করেন দুপক্ষ সম্ভবত আলোচনার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। লন্ডনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা রয়েল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের মাইকেল স্টেফান বলছেন, সমস্যা যতই বড় হোক দুপক্ষকে আসলে সমাধানের পথে এগোচ্ছে। সঙ্কটের প্রথম দিকে ট্রাম্প একটি পক্ষ অবলম্বন করায় তার পক্ষে মধ্যস্থতা করা এখন কঠিন হচ্ছে বলে কেউ কেউ মনে করেন। উল্লেখ্য, কাতারে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি অবস্থিত।
×