ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কিন কর্মকর্তা এলিস ওয়েলস আসছেন কাল

প্রকাশিত: ০৪:৫২, ২৮ আগস্ট ২০১৭

মার্কিন কর্মকর্তা এলিস ওয়েলস আসছেন কাল

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক জোরদারে ঢাকায় আসছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত এ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এলিস ওয়েলস। আগামীকাল মঙ্গলবার দুদিনের সফরে তিনি ঢাকা আসছেন। এটিই হবে তার প্রথম ঢাকা সফর। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য জানায়। ঢাকা সফরকালে এলিস ওয়েলস পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন। এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এলিস ওয়েলস ২৮ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা, ইসলামাবাদ ও কলম্বো সফর করবেন। সফরকালে তিনি এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার বিষয়ে সরকারী কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আগামী পহেলা সেপ্টেম্বর কলম্বোতে তিনি ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সে বক্তব্য রাখবেন। ওই কনফারেন্সে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিও জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নেবেন। এলিস ওয়েলসের ঢাকা সফরের মূল ফোকাস হবে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমন। বিশেষ করে গত বছরের পহেলা জুলাই হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার পর এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদারে বিশেষ আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে তাই সফরকালে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় ঢাকা। সে কারণেই এলিসের এই সফর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়তে চায়। আর দক্ষিণ এশিয়ার ভৌগোলিক কৌশলতগত কারণে বাংলাদেশকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছরের শুরুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। শুরু থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে জোরালো সম্পর্ক গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে ঢাকা। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন মার্কিন সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নতুন করে আলোচনাও শুরু করেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) নিয়ে ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চালিয়ে আসছিল বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা এখনও পায়নি। সে কারণে এই ইস্যুতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে। পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক গত জুন মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন। সে সময় তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঢাকা-ওয়াশিংটন উন্নয়ন সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সন্ত্রাস ও সহিংসতা দমন এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বৈশ্বিক ইস্যুতে আলোচনা করেন তিনি। এর আগে গত ৩০ জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডেপুটি এ্যাসিস্ট্যান্ট এবং হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক লিসা কার্টিসের ঢাকা সফরের কথা ছিল। তবে অনিবার্য কারণে সেই সফর স্থগিত হয়ে যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এই প্রথমবারের মতো দেশটির কোন শীর্ষ কর্মকর্তা ঢাকা সফরে আসছেন। সে কারণে এই সফরকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে ঢাকা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরই বিশ্ব নেতাদের মধ্যে প্রথম যারা ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যতম। বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম ট্রাম্পকে অভিনন্দন বার্তা পাঠায়। সেই অভিনন্দন বার্তায় ট্রাম্পের নেতৃত্বগুণের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, আগামীতে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে তিনি আশা করছেন।
×