ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

চামড়া পাচার রোধে কঠোর অবস্থানে পুলিশ ও বিজিবি

কোরবানিতে গরু আসবে, চামড়া যাবে না

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২৩ আগস্ট ২০১৭

কোরবানিতে গরু আসবে, চামড়া যাবে না

হাসান নাসির, চট্টগ্রাম অফিস ॥ দেশে খামারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও কোরবানির ঈদে ভারতীয় গরুর ওপর নির্ভরতা এখনও কাটেনি। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে উদ্বিগ্নতা। কারণ, দেশীয় গরুতে চাহিদা মিটবে বলা হলেও দাম কেমন হবে তা নিয়ে পরিলক্ষিত হচ্ছে উৎকণ্ঠা। গরু আসুক সীমান্তের ওপার থেকে, এমনই চাওয়া কোরবানিদাতাদের। তবে চামড়া পাচার ঠেকাতে সোচ্চারও রয়েছে। বরাবরের মতো এবারও চামড়া পাচার রোধে কঠোর অবস্থানে পুলিশ এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি। অর্থাৎ গরু আসবে, চামড়া যাবে না। ভারতে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর গরু পাচার বন্ধে সীমান্তে কড়াকড়ি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কোরবানির ঈদেও ভারতের গরু এসেছে তুলনামূলক কম। গরু আমদানি হ্রাস পাওয়ায় দেশে খামারিদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। কেননা, প্রতিবছরই কোরবানির সময় ভারত থেকে গরু আসায় তারা তাদের লালিত পশুর মূল্য কম পাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ খামারিদের। সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপিত হওয়ায় এবার দেশে গরু লালনপালন বেড়েছে। আশা করছেন, এবার তারা মূল্য পাবেন। কিন্তু শেষ সময়ে ভারত থেকে গরু এসে পড়ে কিনা তা নিয়ে খামারিদের মধ্যে যেমন উৎকণ্ঠা আছে, তেমনি কোরবানিদাতাদের মাঝেও রয়েছে উদ্বিগ্নতা। কেননা, গরু এলে নিজের পোষা পশুর মূল্য পাবেন না খামারিরা। আবার না এলে বেশি দামে কিনতে হবে কোরবানিদাতাদের। তবে বিজিবিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র বলছে, আগস্ট মাসের শুরু থেকেই সীমান্তপথে ভারতীয় গরু আসা বেড়েছে। নাফ নদীপথে মিয়ানমার থেকেও আসছে গরু। বিজিবির তথ্যে দেখা যায়, সীমান্তবর্তী ৩১ করিডর দিয়ে গত জুন পর্যন্ত বছরের প্রথম ছয় মাসে গরু এসেছে ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৯৯৫টি। গরুগুলো এসেছে সম্পূর্ণ বৈধভাবে সরকারকে ট্যাক্স পরিশোধের মাধ্যমে। যেহেতু কোরবানির ঈদ সামনে সেহেতু জুলাই থেকে গরু আমদানি বাড়তে থাকে। আগস্ট মাসে গরু আসছে সবচেয়ে বেশি। বিজিবি সূত্র জানায়, বৈধপথে গরু আমদানি বাড়ছে, গরু আসবে। তবে অবৈধ পথে আমদানি হতে দেয়া হবে না। দেশের খামারিরা এখনও আশাবাদী যে, এবার তারা ভাল দাম পাবেন। কিন্তু সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে চিন্তার ছাপ। নগরীর বাজারগুলোতে এখনই ট্রাকযোগে কোরবানির পশু এসে জমা হতে শুরু করেছে। বিকিকিনি না হলেও পশুর বাজার জমে উঠবে সপ্তাহখানের মধ্যে। তবে এবার বন্যার কারণে গরু রাখা এবং খাবারের সঙ্কট থাকায় কোরবানিদাতারা আগেভাগে কোরবানির পশু কিনবেন না বলেই ব্যবসায়ীদের ধারণা। দেশে বছরে কোরবানির গরুর চাহিদা এখন ৫৫ থেকে ৬০ লাখ। মানুষের আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় কোরবানিদাতার সংখ্যাও বছরে প্রায় ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী সারাদেশে গরুর খামার রয়েছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার। তবে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে এ সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। অনেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে সামর্থ্য অনুযায়ী গরু কিনে লালনপালন করে থাকেন কিছু লাভের আশায়।
×