ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লিটন আব্বাস

বিশ্বের সেরা ‘ব্যাক আপ টিম’ও রিয়াল!

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ২৩ আগস্ট ২০১৭

বিশ্বের সেরা ‘ব্যাক আপ টিম’ও রিয়াল!

গত মৌসুম থেকে আবারও নিজেদের চেনা রূপে ফিরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। স্প্যানিশ পরাশক্তিরা বিশ্বরেকর্ড গড়ে টানা দুই বছর জিতেছে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ। পাঁচ বছর পর পুনরুদ্ধার করেছে স্প্যান্শি লা লীগার ট্রফি। এবারের মৌসুমের শুরুতেই জিতে নিয়েছে উয়েফা ও স্প্যানিশ সুপার কাপের শিরোপা। রিয়ালের এমন জ্বলজ্বলে সাফল্যের মূল কারণই সাইডবেঞ্চে একঝাঁক তারকা ফুটবলার থাকা। যে কারণে এখন ফুটবল প-িতরা বলছেন, বিশ্বের সেরা ‘ব্যাক আপ টিম’ও রিয়াল মাদ্রিদ। দলীয় শক্তির গভীরতার কারণেই ইউরোপিয়ান ফুটবলের হিংসারপাত্র হয়ে উঠছে রিয়াল। সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে বা বার্নাব্যুর বাইরে রিয়ালকে যারা পরীক্ষায় ফেলতে চায় সেসব ক্লাব জানে যে, রিয়াল যদি নিয়মিত খেলোয়াড়দের মধ্যে থেকে কোনও খেলোয়াড়াকে সরিয়ে দেয় বা বিকল্প খাড়া করায় তাহলে তাদের জন্য কাজটি আরও জটিল হবে। রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান অবিশ্বাস্যভাবে ‘প্ল্যান বি’ নামে পরিচিত হয়ে উঠতে চান এবং এই প্ল্যানে যখন যে খেলোয়াড়রা আসছেন তারাই ভাল করছেন। যাতে করে বিশ্বের সেরা ব্যাক আপ টিম হয়ে উঠেছে রিয়াল। রোনাল্ডো, বেল ও বেঞ্জামার জায়গায় কম যান না অ্যাসেনসিও, ইস্কোরা। লস ব্লাঙ্কোসদের ‘সেরা ব্যাক আপ’ টিম নিয়ে খেলোয়াড়দের মধ্যে যেমন কোন মতানৈক্য দেখেন না জিদান, তেমনি জিজুর মতের একই মত ফুটবল বিশ্লেষকদেরও। ক্যাসিলা, নাচো, অ্যাসেনসিও, কোভাচিচ এবং লুকাস এদের সবাইকেই কিনতে চায় অন্য ক্লাব। এই দলে আছেন গত মৌসুমে আলাভেজে খেলা মার্কোস লরেন্তেও। নাচোকে দলে পেতে চায় সিরি এর ক্লাব রোমা। তবে রিয়ালের সবশেষ তিন ম্যাচে একাদশে না থাকলেও তাকে পাওয়াটা রোমার জন্য প্রায় অসম্ভবই। নাচোর পাশাপাশি লুকাস-ক্যাসিলার দিকে নজর দিয়েছেন রিয়ালেরই সাবেক কোচ রাফায়েল বেনিতেজ। তিনি এখন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব নিউক্যাসলের বস। প্রাক-মৌসুম থেকে শুরু করে স্প্যানিশ সুপার কাপের দুইপর্বে অবিশ্বাস্য পারফর্মেন্স দেখিয়েছেন অ্যাসেনসিও। এরপরই স্প্যানিশ তারকার দিকে হাত বাড়াতে চাইছে আর্সেনাল। একই কারণে কোভাচিচকে দলে টানতে চাইছে ইতালিয়ান জায়ান্ট জুভেন্টাস। গত মৌসুমে দীর্ঘ অপেক্ষার পালা শেষ হয় রিয়ালের। পাঁচ বছর পর স্প্যানিশ লা লীগার শিরোপা পুনরুদ্ধার করে তারা। ২০১১-১২ মৌসুমে শেষবার লা লীগা জিতেছিল রিয়াল। এরপর গত পাঁচ বছরে অনেক শিরোপাই উঠেছে রিয়ালের শোকেসে। দুইবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, একবার কোপা ডেল রে, উয়েফা সুপার কাপ, ক্লাব বিশ্বকাপÑকোন শিরোপাই বাদ যায়নি। আক্ষেপ ছিল শুধু লা লীগা নিয়ে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনা ও নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে এই সময়ে শুধু হতাশাই পেতে হয়েছে তাদের। তবে গত মৌসুমে সেই আক্ষেপ দারুণভাবে ঘুঁচিয়ে দিয়েছে জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা। আগের চারটি মৌসুমের তিনবারই লা লীগা শিরোপা জিতেছিল বার্সিলোনা। দ্বিতীয় স্থানে ছিল রিয়াল। এবার সেই সমীকরণটি উল্টে দিয়েছে তারা। শিরোপা নিশ্চিত হওয়ার পর রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান বলেন, পেশাদার জীবনে এটা আমার সবচেয়ে আনন্দের দিন। খেলোয়াড় হিসেবে আমার এই অভিজ্ঞতা আছে। আর সে কারণেই দিনটিকে সবচেয়ে আনন্দের হিসেবে দেখছি। কারণ কোচ হিসেবে অনুভূতিটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই ক্লাব ও জার্সির হয়ে আমি সবকিছু জয় করেছি, কিন্তু লা লীগা শিরোপা জয় সবকিছুর উর্ধে। গত মৌসুমটা খুব একটা ভাল কাটেনি না লিওনেল মেসির। তবে ব্যক্তিগত অর্জন খুব একটা মন্দ ছিল না! লা লীগার সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে পিচিচি ট্রফি ও ইউরোপের লীগগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ গোলের জন্য গোল্ডেন শ্যূ দুটোই জিতেছেন আর্জেন্টিনার ফরোয়ার্ড। ৩৭ গোল নিয়ে লা লীগার সর্বোচ্চ গোলাদাতা হওয়া মেসি এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো পিচিচি ট্রফি জিতলেন। এর আগে জিতেছিলেন ২০০৯-১০, ২০১১-১২, ২০১২-১৩ মৌসুমে। পিচিচি জয়ের তালিকায় রোনাল্ডোকে পেছনে ফেলেন মেসি। স্পর্শ করেন কিংবদন্তি ফেরেঙ্ক পুসকাসকে। ৬টি পিচিচি ক্রফি নিয়ে এখনও শীর্ষে টেলমো জারা।
×