ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তদের ৮৫ শতাংশ পরবর্তীতে আর্থ্রাইটিসে ভোগেন

প্রকাশিত: ০৫:০১, ১৪ আগস্ট ২০১৭

চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তদের ৮৫ শতাংশ পরবর্তীতে আর্থ্রাইটিসে ভোগেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রায় ৮৫ শতাংশ পরবর্তীতে কোন না কোন ধরনের আর্থাইটিস সমস্যায় ভোগেন। এসব রোগীর সুবিধার্থে উপযুক্ত ও উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) স্থাপন করা হয়েছে চিকুনগুনিয়া ও আর্থাইটিস ক্লিনিক। রবিবার ক্লিনিকটির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান। এই ক্লিনিকের মাধ্যমে বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়টির বহির্বিভাগ ভবন-১-এর ৪১০নং কক্ষে শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এই ক্লিনিকে সংশ্লিষ্ট রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউমাটোলজি বিভাগ এই ক্লিনিক পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউমাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ শামীম আহমেদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডাঃ এবিএম আব্দুল্লাহ, ফিজিক্যাল মেডিসিন এ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ শামসুন নাহার, শিশু বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ শাহানা আখতার রহমান, মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুর রহিম, ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ শাহিনা তাবাসসুম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রিউমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ মিনহাজ রহিম চৌধুরী। চিকিৎসা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও এপিএলএআর-এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডাঃ সৈয়দ আতিকুল হক, বাংলাদেশ রিউমাটোলজি সোসাইটির মহাসচিব অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আবু শাহীন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান বলেন, চিকুনগুনিয়ার বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। শুরুতে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য জাতীয় পর্যায়ের সেমিনার আয়োজন করা হয়। পরবর্তী ‘চিকুনগুনিয়া : ঢাকা এক্সপ্রিয়েন্স ২০১৭’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। রোগীদের সুবিধার্থে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চিকুনগুনিয়া ও আর্থাইটিস ক্লিনিক’ চালু করা হলো। এ বছর গণমাধ্যমগুলো চিকুনগুনিয়ার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। চিকুনগুনিয়া নিয়ে সংশ্লিষ্ট মাল্টি ডিসিপ্লিনারি বিভাগ, উইং-এর সমন্বয়ে এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে প্রয়োজনীয় গবেষণার উদ্যোগ নেয়া হবে। উপাচার্য তার বক্তব্যে মশক নিধন কার্যক্রম আরও জোরদার করারও আহ্বান জানান। উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার বলেন, চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগী যাতে ব্যথা, যন্ত্রণা থেকে একটু আরাম অনুভব করে চিকিৎসকদের সে বিষয়টিও স্মরণ রাখতে হবে। পাশাপাশি এ বিষয়ে ব্যাপক, ফলপ্রসূ ও সমন্বিত গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা অনেক বেশি কষ্ট পাচ্ছেন। তাদের এ কষ্ট থেকে যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে মুক্তি দিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় করণীয় সবকিছুই করবে। মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডাঃ এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের যেন অতিরিক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা না দেয়া হয়। এ ধরনের রোগীদের কষ্টের মাত্রা চিকিৎসার মাধ্যমে দ্রুত হ্রাস করার বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। এ বিষয়টি নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে বাস্তবতা, রোগীদের কষ্ট ও দুর্ভোগ, রোগীদের সামর্থ্য ও সুবিধার কথা বিবেচনায় রাখতে হবে।
×