ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনের রাস্তা তৈরির পরই রোডম্যাপ সার্থক হবে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৮ জুলাই ২০১৭

নির্বাচনের রাস্তা তৈরির পরই রোডম্যাপ সার্থক হবে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আগে রাস্তা (রোড) তৈরির জন্য নির্বাচন কমিশনকে পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আগে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করুন। অন্যথায় রোডম্যাপ সার্থক হবে না। রাস্তা তৈরির পরই রোডম্যাপ দেয়া সার্থক হবে উল্লেখ করেন। সোমবার সকালে রাজধানীর মওলানা ভাসানী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বিএনপির ভিশন : নারী সমাজের উন্নয়ন ও অগ্রগতির মিশন’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল। এ সময় তিনি চেয়ারপার্সন ঘোষিত ভিশন ২০৩০ সম্পর্কে মহিলা দলের নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেয়ার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন ঘোষিত রোডম্যাপ নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি ইসি একাদশ জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। কিন্তু নির্বাচন করতে হলে সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে একই রাস্তায় নিয়ে আসতে হবে। সেই রাস্তা কোথায়? রোডই যখন নেই তখন ম্যাপে কি হবে? ইলেকশন করবে কে? রাজনৈতিক দলগুলো তো? রাজনৈতিক দলগুলোকে যে আপনি নির্বাচনে নিয়ে যাবেন তার রাস্তা কোথায়? ম্যাপ দিয়ে দিচ্ছেন, এই করতে হবে, রাস্তাই নাই। রাস্তা তো আপনারা খানাখন্দ খুঁড়ে শেষ করে দিয়েছেন। নির্বাচনে যেন বিরোধী দল যেতে না পারে তার ব্যবস্থা করছেন। কথা খুব পরিষ্কার। নির্বাচন কমিশনকে বলতে চাই। আগে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করেন। রাস্তা তৈরি করেন। তাহলে রোডম্যাপ দেয়াটা সার্থক হবে, অন্যথায় হবে না উল্লেখ করেন। বলেন, নির্বাচনে যদি রাজনৈতিক দলগুলোই যেতে না পারে, আবার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি মতো... ওই কুকুর-ছাগল ভেড়া নিয়ে নির্বাচন করতে হবে। মানুষকে নিয়ে তো নির্বাচন করতে পারবেন না। সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সমস্ত বাদ দিন, পথে আসুন। সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলে পথ বের করুন। ক্ষমতাসীনরা যে অপকর্ম করেছে, হত্যা-গুম-খুন-জখম করেছে, দুর্নীতি করেছে, লুট করেছে সেখানে তারা পালাবার পথ খুঁজে পাবে না। পালাবার একটাই পথ আছে, সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, সকল দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। তা না হলে সত্যি সত্যি এদেশের মানুষ পালাবার পথ দেবে না। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসুক, দেশে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক সরকার তা চায় না। তারা জানে ভোটের মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। নির্বাচন কমিশন গঠনের সমালোচনা করে বলেন, প্রশ্নবিদ্ধ ব্যক্তির মাধ্যমে ইসি গঠন করা হয়েছে। তারপরও বলেছি একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করলে সমর্থন পাবেন। গত ১৩ জুলাই রাতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসায় কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের অনুষ্ঠানে পুলিশি হানা প্রসঙ্গে বিএনপির কথা বাদ দিলাম। এই আ স ম আবদুর রব সাহেব ও অন্যান্য ৫/৪টা দল, ডাঃ বদরুদ্দোজা সাহেবের মতো মানুষ, ড. কামাল হোসেন সাহেবের মতো মানুষ তারা রাজনৈতিক আলোচনা করার জন্য আবদুর রব সাহেবের বাসায় গিয়েছিলেন। পুলিশ সেখানে গিয়ে উপস্থিত। বলছে, মিটিং করতে পারবেন না। সমস্যাটা এই জায়গায়। ওরাই সবকিছু করবে। মিটিং করবে, ইলেকশন করবে, বিনা ভোটে নির্বাচন করবে, ক্ষমতায় যাবে, মন্ত্রী হবে, এমপি হবে, হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করবে। আর আমরা আপনারা সাধারণ মানুষ, আমরা শুধু হাততালি বাজাব। এটা হবে না। আমরা এই দেশে সবার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমাদের সেই ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়। সেই অধিকার ফিরিয়ে আনার লড়াইয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বর্তমান সরকারের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে শুধুমাত্র ধনীদের ক্ষেত্রে। অন্যদিকে গরিবরা আরও গরিব হচ্ছে, থাকছে ফুটপাথে উল্লেখ করেন। রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণের প্রশংসা করে বলেন, বিএনপিকে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী করতে পারেন এই নারীরা। গ্রামে, দেশে আমাদের সবচেয়ে বেশি ভোটার নারী। এটা কেন? বিএনপির ধানের শীষ মহিলাদের স্বার্থের কথা ভাবে। মানুষের ভালর কথা বলে। দেশের ভাল বলে ভাল কাজ করে। এই দায়িত্বটা সবচেয়ে বেশি আপনাদের পালন করতে হবে। এ সময় তিনি সবাইকে জেগে ওঠার আহ্বান বলেন, বোনেরা সবাইকে জেগে উঠতে হবে। এটা আমার দেশ। জোর করে কেউ নিয়ে যায়, আমি কি ছেড়ে দেব। অনুষ্ঠানে মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় মহিলা দলের সিনিয়র সহসভাপতি নুরজাহান ইয়াসমীন, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা ফরিদা মনি শহীদুল্লাহ, নুরুন্নাহার, শামুসন্নাহার ভুইয়াসহ অন্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।
×