ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এখনও অনেক কিছু শিখতে চান ভেনাস

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ১৭ জুলাই ২০১৭

এখনও অনেক কিছু শিখতে চান ভেনাস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন ভেনাস উইলিয়ামস। কিন্তু শেষটা ভাল হয়নি তার। আশা জাগিয়েও ব্যর্থ হলেন আমেরিকান টেনিসের এই জীবন্ত কিংবদন্তি। টেনিসের ওপেনযুগে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে তার গ্র্যান্ডসøাম জয়ের স্বপ্নকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছেন গারবিন মুগুরুজা। শনিবার ভেনাস উইলিয়ামসকে পরাজিত করে ক্যারিয়ারের প্রথম উইম্বলডন জয়ের স্বাদ পান স্পেনের এই টেনিস তারকা। কনচিতা মার্টিনেজের পর স্পেনের দ্বিতীয় প্রমীলা খেলোয়াড় হিসেবে উইম্বলডন জয়ের অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়লেন মুগুরুজা। তবে ফাইনালে হারলেও এখনই ভেঙ্গে পড়ছেন না ভেনাস উইলিয়ামস। বরং মুগুরুজার কাছে এই হার থেকেই কিছু না কিছু শিখতে চান তিনি। এ বিষয়ে ৩৭ বছর বয়সী ভেনাস উইলিয়ামস নিজের অভিমত প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘আপনি হারা কিংবা জেতা উভয় ম্যাচ থেকেই কিছু না কিছু শিখতে পারবেন। তাই আমার জন্যও নিশ্চিত এখান থেকে নিশ্চিত কিছু শেখার আছে। আমি কিছু বড় বড় শট খেলেছি যেগুলো সঠিকভাবে ল্যান্ড করেনি। সম্ভবত এখানেই কম ভুল করার প্রয়োজন ছিল।’ সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে সাতটি গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছেন ভেনাস উইলিয়ামস। যার পাঁচটিই আবার উইম্বলডনে। তবে ২০০৮ সালের পর আর কোন মেজর শিরোপা নিজের শোকেসে তুলতে পারেননি তিনি। যদিওবা এই বছরটা দারুণ কাটছে তার। মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেনেও ফাইনাল খেলেছিলেন তিনি। কিন্তু সেবার ছোট বোন সেরেনা উইলিয়ামসের কাছে হার মানেন বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান এই তারকা। কিন্তু পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে উইম্বলডনেরও ফাইনাল খেলেন তিনি। ২০০৩ সালের পর এ বছরেই প্রথম দুই গ্র্যান্ডসøামের ফাইনালের টিকেট কাটেন ভেনাস। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার, দুটিতেই কোর্ট ছেড়েছেন পরাজয়ের হতাশা নিয়ে। তবে আমেরিকান তারকা এখনও শুধু ফাইনালে উঠেই আটকে থাকতে চান না বরং ভাসতে চান শিরোপা-উচ্ছ্বাসেও। সেই লক্ষ্যেই মৌসুমের বাকি সময়টাতে ভাল খেলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ভেনাস উইলিয়ামস। এ প্রসঙ্গে ভেনাস বলেন, ‘মেজর টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলতে পারাটাও কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়, তবে আমি শুধু ফাইনালে খেলতে চাই না বরং শিরোপাও জিততে চাই। এখন আমি ভাল ফর্মে। এ বছরে বেশ কয়েকবারই শিরোপা জয়ের মতো অবস্থান তৈরি করেছিলাম। শেষ দুটি সপ্তাহও দুর্দান্ত কেটেছে আমার। এখন মৌসুমের বাকি সময়টাতে ভাল খেলতে চাই আমি।’ বিশ্ব টেনিসের সবচেয়ে প্রাচীন টুর্নামেন্ট উইম্বলডন। গ্র্যান্ডসøামের বাকি তিন টুর্নামেন্টের চেয়ে উইম্বলডনের বেশ কিছু আলাদা বিশেষত্ব রয়েছে। নিয়ম-কানুনে রয়েছে ভিন্নতা এবং কড়াকড়ি। তারমধ্যে একটি ‘সাদা পোশাক’। উইম্বলডনে ‘অল হোয়াইট’ হয়ে একজন খেলোয়াড়কে কোর্টে নামতে হয়। এক্ষেত্রে কোন ছাড় দেয় না কর্তৃপক্ষ। জার্সি, ট্রাউজার, জুতা, মোজা এমনকি অন্তর্বাস ও ব্রাও অন্য রঙয়ের হলে চলবে না। পুরোটাই হতে হবে সাদা। এবার আসরের প্রথম রাউন্ডে ভেনাস উইলিয়ামস পোশাকের নিচে গোলাপি রংয়ের ব্রা পরেন। ম্যাচ শেষে তারজন্য জবাবদিহি করতে হয় ভেনাসকে। এরপর আর কোন ম্যাচে তাকে সাদা বৈ অন্য রংয়ের ব্রা পরতে দেখা যায়নি। ভেনাস অন্য রং নিয়ে খেলতে পারলেও পরবর্তীতে অন্য দু’জন খেলোয়াড় কোর্টেই নামতে পারেননি। ডাবলসে খেলতে কোর্টে যান হাঙ্গেরির জিসম্বোর পিরোস ও চীনের ইবিং। তখনও তারা কোর্টে নামেননি। কোর্টের পাশের চেয়ারে বসে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় তাদের কাছে হাজির হন একজন কর্মকর্তা। তিনি তাদের লকার রুমে গিয়ে অন্তর্বাস পরিবর্তন করে আসতে বলেন। তারা তখন সাদা ছাড়া অন্য রংয়ের অন্তর্বাস পরে ছিলেন। বিষয়টি লক্ষ্য করে কর্তৃপক্ষ তাদের এই আদেশ দেয়। অন্তর্বাস সাদা না হলে খেলতে পারবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়া হয়। যে কারণে বাধ্য হয়েই তারা অন্তর্বাস পরিবর্তন করে সাদা পরে তারপর কোর্টে নামেন। উইম্বলডনে ‘অল হোয়াইট’ হয়ে খেলার আইন অনেক পুরনো। আগে সামান্য ছাড় ছিল। কিন্তু ২০১৪ সালে আইনটি কড়াকড়ি করা হয়। সাদা পোশাকের ব্যাপারে কোন ছাড় নয় বলে জানিয়ে দেয় উইম্বলডন কর্তৃপক্ষ। ২০১৩ সালে রজার ফেদেরারকে নিয়ে বড় ঝামেলা হয়। সেবার তার জুতার সোলের অংশটা ছিল কমলা রংয়ের। ওই অবস্থায় তিনি ম্যাচটি খেলেন। কিন্তু ম্যাচ শেষে তাকেও এ জন্য জবাবদিহি করতে হয়েছিল। পরে ওই জুতা পরে আর কোর্টে নামতে পারেননি রজার ফেদেরার।
×