ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টকশোতে অংশ গ্রহণকারীদের বেশিরভাগ ভণ্ড ॥ বিচারপতি সৌমেন্দ্র

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১৬ জুলাই ২০১৭

টকশোতে অংশ গ্রহণকারীদের বেশিরভাগ ভণ্ড ॥ বিচারপতি সৌমেন্দ্র

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ১৫ জুলাই ॥ এবার টকশোতে অংশগ্রহণকারীদের ‘হিপোক্র্যাট’ বলে অভিহিত করলেন সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার। তিনি শুক্রবার রাতে শেরপুর শহরের নয়আনী বাজারে অবস্থিত মা ভবতাঁরা কালিবাড়ী মন্দির প্রাঙ্গণে তার সম্মানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ওই মন্তব্য করেন। ওই সময় তিনি বলেন, ‘আমি প্রায় দেড়-দুই বছর যাবত টকশো দেখি না। কারণ টকশোতে যারা অংশগ্রহণ করেন তাঁদের মধ্যে গুটি কয়েকজন ছাড়া শতকরা ৬০ ভাগেরও বেশি হিপোক্র্যাট, ভ-। তারা টকশোতে যা বলেন বাস্তবে তা করেন না। তাদের কথা ও কাজের মধ্যে কোন মিল নেই। টকশোতে তারা কথার ফুলঝুড়ি ঝাড়েন। কিন্তু ব্যক্তি জীবনে তারা উল্টো কাজ করছেন। প্রকৃতপক্ষে টকশোতে তারা ভ-ামি করেন। যাদের কথা ও কাজের মধ্যে কোন সমন্বয় নেই, মিল নেই-তারা আমাদের আদর্শ হতে পারেন না। আমরা তাদের পথ অনুসরণ করতে পারি না। তাদের পথই আমাদের অনুসরণ করতে হবে, যারা হিপোক্র্যাট নন, ভ-ামি করেন না এবং যারা প্রকৃত আদর্শবান মহাপুরুষ।’ বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার বলেন, ধর্মীয় মূল্যবোধের মাধ্যমে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে শ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। একমাত্র ধর্মীয় মূল্যবোধই একজন মানুষকে সঠিক পথ দেখাতে পারে। সেটা যে ধর্মই হোক না কেন। সমস্ত বিশ্ব এখন অস্থির। সবাই একদিকে ছুটছেন। কী করে আরও সম্পদ অর্জন করা যায়, কী করে ভাল থাকা যায়, কী করে আরও প্রাপ্তি ঘটে- এ নিয়েই এখন সবাই ব্যস্ত। এর মূল কারণ হচ্ছে ভোগ বিলাস। সম্পদ যত বেশি থাকবে, অশান্তিও তত বেশি থাকবে। যতটুকু সম্পদ প্রয়োজন, ততটুকু সম্পদই থাকা ভাল। অধিক সম্পদে শান্তি নেই। তাই ধর্মীয় মূল্যবোধকে কাজে লাগিয়ে পরবর্তী প্রজন্মকে শ্রেষ্ঠ মানুষ তথা শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের সংবিধান বিশ্বের অন্য যে কোন দেশের সংবিধানের তুলনায় অনেক উন্নত। আমাদের সংবিধানেই ধর্ম, বর্ণ ও জাতি নির্বিশেষে দেশের প্রতিটি মানুষের সম অধিকারের কথা বলা হয়েছে। তাই দেশের পিছিয়ে থাকা সম্প্রদায়কে সামনে এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে। শুধু সম্প্রদায়গত কারণে তাঁদের পিছিয়ে রাখা যাবে না। তাঁদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সকলকে সোচ্চার হতে হবে। তবেই সংবিধানে বর্ণিত প্রতিটি নাগরিকের সম অধিকার নিশ্চিত হবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে আয়োজক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার ও তার স্ত্রী অঞ্জনা রাণী রায়কে ফুলেল শুভেচ্ছায় অভিসিক্ত করেন। স্বর্গীয় সুরেন্দ্র মোহন সাহা ট্রাস্টি বোর্ড, মা ভবতাঁরা মন্দির উন্নয়ন কমিটি ও ৬৪ প্রহরব্যাপী হরিনাম কীর্তন পরিচালনা কমিটি ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন মা ভবতাঁরা উন্নয়ন কমিটির সভাপতি প্রকাশ দত্ত। সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে শেরপুরের জেলা ও দায়রা জজ কিরণ শংকর হালদার, জেলা জজশীপের বিচারক, আইনজীবী, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ ও হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভক্তরা উপস্থিত ছিলেন। পরে বিশিষ্ট রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী সঞ্চিতা হোড় দীপুর নেতৃত্বে স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে ধর্মীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়।
×