ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অভাবের তাড়নায়...

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১১ জুলাই ২০১৭

অভাবের তাড়নায়...

অভাবের তাড়নায় বহু বছর আগে মানুষ দিয়ে হালচাষের দৃশ্য স্বাভাবিক হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীতে এসে যদি সেই দৃশ্য দেখতে হয় তবে তা অস্বাভাবিকই মনে হয়। বউ কিংবা মেয়ে দিয়ে হালচাষের দৃশ্য সিনেমায় দেখা যায়। তেমনই দৃশ্য এবার দেখা গেল ভারতের মধ্যপ্রদেশে। ষাঁড় কিংবা বলদ কেনার অর্থ নেই তার। তাই বলে তো আর হাল-চাষ বন্ধ থাকতে পারে না। অভাব জয়ের লক্ষ্যে তাই সরদার বারেলা নামের এক কৃষক বাবা তার দুই কিশোরী মেয়ের কাঁধে তুলে দিয়েছেন জোয়াল, টানাচ্ছেন লাঙল। এই ছবি ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইন দুনিয়ায়; যা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। মধ্যপ্রদেশে বিভিন্ন ব্যাংক ও সুদখোর মহাজনদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে শোধ করতে পারছেন না অনেক চাষী। ফলে তাদের কাছ থেকে জোর-জুলুম করে টাকা আদায়ের অভিযোগও উঠছে। ঋণের জালে জড়িয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চাষীদের প্রায়ই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলোতে এই সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে। আর এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপে পড়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। গত মাসেই মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌরে বিক্ষোভ করতে গিয়ে ছয় চাষীর মৃত্যুর পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষকদের আন্দোলন শুরু হয়। এবার মধ্যপ্রদেশের সেহর জেলার বসন্তপুর পাঙ্গড়ি এলাকায় নিজের মেয়েদের দিয়ে হালচাষ করানোর ঘটনা কৃষকদের চরম আর্থিক সঙ্কটকে ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। সরদার বারেলা জানান, লাঙল চালাতে বলদ কেনার মতো টাকা নেই তার। তাই মেয়েদের দিয়ে লাঙল চালিয়ে হালচাষ করছেন তিনি। তার দুই কন্যা। ১৪ বছরের রাধিকা আর ১১ বছরের কুন্তীকে টাকার অভাবে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হয়েছে। এখন তারা বাবার হালচাষে নিয়মিত সহযোগিতা করে। জেলা জনসংযোগ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে সরকারী পার্যায়ে খোঁজ-খবর করা হয়েছে। এভাবে নাবালিকা মেয়েদের দিয়ে হালচাষ না করানোর জন্য ওই চাষীকে বলা হয়েছে। সরকারী প্রকল্পের মাধ্যমে ওই কৃষককে সাহায্য করা যায় কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। -ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অবলম্বনে।
×