ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এশিয়া কাপ সামনে রেখে হকি স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ৫ জুলাই ২০১৭

এশিয়া কাপ সামনে রেখে হকি স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম বড় হকি স্টেডিয়ামগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশের ঢাকার মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়াম। এখানে বহু আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু সেগুলোর সবগুলোই দিনের বেলায়। রাতের আলোয় একটিও নয়। কারণ একটিইÑ ফ্লাডলাইট নেই যে। আর এ কারণেই আগ্রহ থাকার পরও এত বছর ধরে বড়মাপের কোন আন্তর্জাতিক আসর আয়োজন করতে পারেনি বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন (বাহফে)। তবে এবার তাদের সেই আক্ষেপর দিন শেষ হলো বলে। ৩২ বছর পর আবারও এশিয়া কাপ হকির আয়োজন করতে যাচ্ছে তারা। অধিকাংশ খেলাই অনুষ্ঠিত হবে রাতে। সেটা কিভাবে? বাংলাদেশের স্বাগতিক হওয়ার অন্যতম শর্ত ছিল এই স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইট স্থাপন করা। সেই শর্ত পূরণ করার পথে একধাপ এগিয়ে গেল বাহফে। কেননা ইতোমধ্যে হকি স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। চলতি সপ্তাহেই কাজ শুরু হবে ফ্লাডলাইট স্থাপনের। ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাদেক আশা করছেন নির্ধারিত সময়েই শেষ হবে কাজ। তবে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজনে প্রেসবক্সসহ অবকাঠামোগত আরও কিছু উন্নয়ন প্রয়োজন বলে মনে করছেন তিনি। মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট স্থাপনের শেষ সময়সীমা ১ সেপ্টেম্বর। এর মধ্যে কাজের অগ্রগতি জানতে চেয়ে একাধিকবার চিঠি দিয়েছে বিশ^ হকি সংস্থা (এফআইএইচ)। বাহফের নির্বাচন আর আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি ফ্লাডলাইট স্থাপনের কাজ শেষ না হয় তবে টুর্নামেন্টটি স্থানান্তরিত হতে পারে মালয়েশিয়ায়। তবে সেই আশঙ্কা করছে না বাহফে। তাদের পূর্ণ মনোযোগ এখন ফ্লাডলাইট বসানো নিয়ে। এ লক্ষ্যে স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেছেন ফেডারেশন ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন কর্মকর্তারা। লাইট পোস্টের স্থান চূড়ান্ত ও নকশা অনুমোদনের পর জলদিই কাজ শুরু করে দিতে চাচ্ছে তারা। স্টেডিয়ামের ভেতরে মাঠের চার কোণায় বসবে চারটি টাওয়ার, যেখানে দুই হাজার ওয়াটের ১২০টি লাইট বসানো হবে। লাক্সের মাত্রা হবে ন্যূনতম ১৩০০। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফ্লাডলাইট বসানোর দায়িত্ব দিয়েছে ট্রান্সকম ইলেক্ট্রনিক্সকে। এ কাজে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা। আব্দুস সাদেক বলেন, ‘ফ্লাডলাইট যেহেতু নতুন ইন্সটল হচ্ছে। তারা দেখবে লাইটিং ঠিক আছে কি না। আমরা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। সেপ্টেম্বরের মধ্যে এটার কাজ অবশ্যই শেষ হয়ে যাবে।’ অক্টোবর থেকে অনুষ্ঠেয় ১১ দিনব্যাপী এশিয়া কাপ হকি টুর্নামেন্টের জন্য ফ্লাডলাইট লাগানোর কাজ ছাড়াও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বাহফে পাচ্ছে আরও অতিরিক্ত দুই কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে সাদেক আরও বলেন, ‘এত বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য যে ধরনের ভালমানের ড্রেসিং রুম প্রয়োজন তা আমাদের নেই। এমনকি বাথরুম, প্রেসবক্স আমাদের সুন্দর না। এ জিনিসগুলোর আমাদের উন্নয়ন করতে হবে।’ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন ছাড়াও ঘরোয়া হকিতে আকর্ষণীয় টুর্নামেন্ট আয়োজন করার ইচ্ছা আছে বাহফের। ঠিক সময়ে ফ্লাডলাইট স্থাপন সম্ভব হলে নিয়মিত এ ধরনের আয়োজন করে দেশের হকিকে আরও সমৃদ্ধ করা সম্ভব। সেই সঙ্গে ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক লীগ আয়োজনের পরিকল্পনাও দেখবে আলোর মুখ। বিশ্ব হকিতে নীল টার্ফে ফ্লাডলাইটের ঝলকানি। আর তাতেই স্টিকের যাদুতে খেলোয়াড়দের দুর্দান্ত লড়াই উপভোগে মশগুল গ্যালারির দর্শকরা। জনপ্রিয়তার পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবেও হকি আজ বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। পাশের দেশ ভারতই সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত। বিদেশের মাটিতে হকির লড়াইটা বেশ উপভোগ্য হলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তা একেবারেই ভিন্ন। বাইরের দেশগুলো নীল টার্ফ, ফ্লাডলাইটসহ সব আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করলেও বাংলাদেশ এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে। যদিও অনেক কষ্টে নীল টার্ফ মিললেও নানা জটিলতায় বাংলাদেশ পায়নি ফ্লাডলাইটবিশিষ্ট কোন হকির মাঠ। তবে অনেক আক্ষেপের কাঠখড় পুড়িয়ে অবশেষে সেই অভাব পূরণ হতে চলেছে।
×