ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

বিএডিসির আমন বীজ দ্বিগুণ দামে বিক্রি

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ৫ জুলাই ২০১৭

বিএডিসির আমন বীজ দ্বিগুণ দামে বিক্রি

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ বাগেরহাটের শরণখোলায় চলতি আমন মৌসুমে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) সরবরাহকৃত উচ্চ ফলনশীল আমন বীজ নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি করা হচ্ছেÑ বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ডিপো থেকে চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম হওয়ার অজুহাতে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে সরকার নির্ধারিত ৪০০ টাকা মূল্যের বীজ প্রায় ৮০০ টাকায় বিক্রি করছেন কতিপয় ডিলার। ফলে কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন। সময়মতো বীজতলা তৈরি করতে না পারলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কৃষক, এ আশঙ্কায় বাধ্য হয়ে তারা চড়া দামে বীজ কিনে নিচ্ছেন। আবার অনেকে চড়া দাম দিয়েও বীজ পাচ্ছেন না। কোন রকম দামাদামি করলে বীজ নেই বলেও ফেরত দেয়া হচ্ছে অনেককে। ফলে বীজ নিয়ে উপজেলার সর্বত্র কৃষকদের মধ্যে একটা চাপা ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। তবে উপজেলা কৃষি বিভাগের দাবি, বীজের কোন সঙ্কট নেই। কৃষকদের হতাশ হওয়ারও কিছু নেই। কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি হলেও আমনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে না। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে শরণখোলা উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ৯ হাজার ৬৭৫ হেক্টর জমিতে ১২ হাজার কৃষক আমন চাষাবাদের প্রস্তুতি নিয়েছেন। কৃষকদের বীজ সঙ্কট নিরসন ও উচ্চ ফলনশীল (উফশী) দান চাষাবাদের জন্য বিআর-১১, ব্রি-৫২, ব্রি-৪৯ জাতের বীজ ধান বিএডিসির মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সরবারহ করা হয়। এ জন্য গত ১ জুন থেকে উপজেলায় ৫ ব্যবসায়ীকে ডিলার হিসেবে নিয়োগ দেন বিএডিসি কর্তৃপক্ষ। মৌসুমের শুরু থেকেই এলাকার চাহিদা অনুযায়ী ডিপো থেকে বীজ উত্তোলন করেন ডিলাররা। কিন্তু বীজের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে অধিক মুনাফর আশায় কৃষকের কাছে তা দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছে ডিলাররা। উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের বাজার যথাযথ মনিটরিং না থাকায় ডিলাররা ইচ্ছেমতো ১০ কেজি ওজনের এক বস্তা বীজ নির্ধারিত মূল্য ৪০০ টাকার পরিবর্তে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি করছেন। উপজেলার কদমতলা গ্রামের চাষী সাখাওয়াত হোসেন, খাদা গ্রামের চাষী আমলগীর হোসেনসহ অনেকেই অভিযোগ করেন, ১০ কেজি ওজনের ধানের বস্তার দাম সরকারীভাবে ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা। অথচ ডিলাররা বীজ সঙ্কটের কথা বলে তাদের কাছ থেকে সুযোগ বুঝে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা রাখছে। পরবর্তী সময়ে যদি বীজ না পাওয়া যায় এ ভয়ে বেশি দামে বীজ কিনতে হচ্ছে তাদের। স্থানীয় ডিলারদের দাবি, সকল জাতের বীজ মিলিয়ে উপজেলায় (১০ কেজি ওজনের) প্রায় ১ লাখ বস্তা ধান প্রয়োজন। প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তবে অতিরিক্ত দামে বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করেন তারা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌমিত্র সরকার বেশি দামে বীজ বিক্রি করার কথা শুনছেন। তবে বীজের কোন সঙ্কট নেই। এটা স্থানীয় ডিলারদের কারসাজি। কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি ও বা বেশি দামে বিক্রির প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে খুলনা বিভাগের বিএডিসির পরিচালক আনোয়ার হোসেন জানান, সরকারী বীজের কোন সঙ্কট নেই। তবে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে যেভাবে বরাদ্দ দেয়া হয় সে অনুপাতে ডিলারদের মাঝে বীজ বিতরণ করা হয়।
×