ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আকিল জামান ইনু

সুখী মানুষের অভ্যাস

প্রকাশিত: ০৭:১৪, ৩ জুলাই ২০১৭

সুখী মানুষের অভ্যাস

আপনি কি একজন সুখী মানুষ? আপনার মাথায় আসতে পারে সুখ বলতে আমি কী বুঝচ্ছি। সুখ বলতে যে যা-ই বোঝাক এবং সুখী যে যেভাবেই হোক না কেন (অবশ্যই মন্দ কাজ করে সুখী হওয়ার কথা বলছি না), সুখের অনুভূতিটা সবারই এক। সুখের কথা বললে আমাদের অনেকের চোখে ভেসে উঠে দীর্ঘ ক্লান্তিময় এবং ব্যস্ত একটা সপ্তাহ পার করার পর সমুদ্রের টানে সমুদ্রের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়া কিংবা পাহাড়ের মায়ায় ধরা দিয়ে পাহাড়ী অরণ্যে হারিয়ে যাওয়া, খুব ভাল করে একবেলা খাওয়া, একটা ভাল বই পড়া কিংবা বন্ধুদের নিয়ে উদ্দেশ্যহীন ভ্রমণে বেরিয়ে পড়া। ছোট ছোট এই বিষয়গুলো সুখী মানুষ হতে কাজে লাগে। পেনসিলভানিয়ার মনোবিজ্ঞানী সেলিগম্যান পৃথিবীর সব মানুষকে তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন। ঞযব চষবধংধহঃ খরভব যারা মনে করেন- এত ক্ষুদ্র জীবনে যতটুকু সময় পাওয়া যায় ততটুকু উপভোগ করতে হবে তারা এ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। এ শ্রেণীর মানুষগুলো জীবনের প্রায় প্রতিটি সৌন্দর্যের এবং প্রতিটা মুহূর্তের স্বাদ নিতে চান। অতীত, ভবিষ্যত এবং বর্তমানের সবটুকু সুখ নিয়ে এ শ্রেণীর মানুষ বাঁচতে চায়। ঞযব ঊহমধমবফ খরভব উদ্যোক্তা এবং নিজের স্বপ্নকে পূর্ণতা দানকারী মানুষ এ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। এ ধরনের মানুষকে সমাজ আপাত চোখে অনেক অসুখী বলে মনে করে, কিন্তু ভেতরে ভেতরে তারা সুখী মানুষ বটে। তারা নিজের স্বপ্নকে পূর্ণতা দেবার জন্য এতটাই কাজের মাঝে ডুবে থাকেন যে সমাজ এদের অসামাজিক বলেও আখ্যায়িত করতে পারে। ঞযব গবধহরহমভঁষ খরভব এ শ্রেণীর মানুষদের আমরা জনসাধারণ মহৎ হৃদয়ের মানুষ কিংবা সাদা মনের মানুষ বলে থাকি। এরা সমাজের নানা ধরনের উন্নয়ন করে থাকেন এবং সমাজ এবং দেশের জন্য আত্মোৎসর্গ করেন। আপনি যদি এই তিন শ্রেণীর কোনটির মাঝেই না পড়েন তবে দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই। সুখী হতে হলে কিছু অভ্যাস আপনাকে কব্জা করতে হবে। চলুন দেখে নেই সুখী হওয়ার কয়েকটি কৌশল – নিজেই নিজেকে খুশি রাখার চেষ্টা করুন আপনি যতই ভাবছেন যে কেউ আপনাকে হাসি খুশি আর সুখে রাখার চেষ্টা করবে ততই ভুল করছেন। নিজের খুশিটা নিজেরই তৈরি করে নিতে হবে। আপনার চারপাশের পরিবেশটাকে সেভাবে সাজানোর চেষ্টা করুন। আর তা যদি না পারেন তবে সেই পরিবেশ থেকে খুশি, সুখ আর আত্মতৃপ্তিটুকু নিজেই খুঁজে নিন। একটা কথা মনে রাখবেন, সৌন্দর্য এবং সুখ কখনোই আপনার কাছে এসে ধরা দিবে না, বরং নিজেকেই তা কুড়িয়ে নিতে হবে। তাহলে এখনই থেকে লেগে পড়ুন নিজেকে সুখী করতে এবং সুখী দেখতে। পছন্দের পরিবেশে পছন্দের মানুষদের সঙ্গে থাকুন এতটুকু পড়ে পাঠক নিশ্চয়ই ভাবছেন খুব তো ভারি ভারি উপদেশ দেয়া হচ্ছে, চাইলেই কি নিজের চারপাশটা বদলানো যায়? না, অবশ্যই না। চাইলেই আপনি আপনার চারপাশটা আমূলে বদলে দিতে পারবেন না। তবে ধীরে ধীরে আপনার অন্তর্নিহিত সুখী মানুষটা ঠিকই পরিবেশ বদলে ফেলতে থাকবে। তাই ভাল লাগে এমন মানুষদের সংসর্গে থাকুন, ভাল লাগে এমন কাজ করুন এবং নিজের অসুস্থ অসুখী পরিম-ল থেকে বেরিয়ে এসে আবার নিজের পুরনো ‘আমি’ টাকে খুঁজে নিন। দেখবেন আপনা আপনি মন ভাল হতে শুরু করেছে। অনেক সময় বিবাহিত নারীদের ক্ষেত্রে এমন হয়, বিয়ের পর পরিবারের স্বার্থে নিজেকে উজাড় করে দেন এবং একটা সময় অতিবাহিত হওয়ার পর শ্বশুরবাড়ির পরিবেশ কিংবা শুধুমাত্র পরিবারের সদস্যদের মাঝে নিজেকে বেশ অসুখী এবং বড্ড একলা মনে হয়। তাদের জন্য এই পদ্ধতিটা বেশ কাজের। পর্যাপ্ত ঘুম ঘুম আপনার শারীরিক ক্লান্তিকে দূর করতে সাহায্য করে। ঘুম কম হলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কাজকর্মের ব্যাঘাত ঘটে। এতে ঝঃৎবংং ঐড়ৎসড়হব এর কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায়। সুখী মানুষদের খুব ভাল ঘুম হয় কিংবা চাইলে উল্টোটাও ঘটতে পারে আপনার ক্ষেত্রে, ঘুম হোক আপনার সুখের কারণ।
×