ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

শংকর পাল চৌধুরী

হারিয়ে যাচ্ছে শাহজিবাজার রাবার শিল্প

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২ জুলাই ২০১৭

হারিয়ে যাচ্ছে শাহজিবাজার রাবার শিল্প

হারিয়ে যাচ্ছে মাধবপুর উপজেলার শাহজিবাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের রাবার শিল্প । বিক্রয় মূল্য হ্রাস, জীবন চক্র হারানো রাবার গাছ, লোকবলের অভাব, সনাতন আমলের রাবার উৎপাদন পদ্ধতি, পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, রাবার গাছ চুরিজনিত নানান কারণে প্রতি বছরই লোকসান গুনছে এ প্রতিষ্ঠানটি। ২১শ’ ৪ একরের এ রাবার বাগানে বর্তমানে শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তার সংখ্যা ৪৯২ জন। নিয়মিত শ্রমিক রয়েছে ৩৮০ জন, অনিয়মিত ৮৫ জন। রাবার গাছ রয়েছে ২ লাখ ৫৭ হাজার, ১ লাখ ২৮ হাজার গাছ ইতিমধ্যেই জীবন চক্র হারিয়েছে। ১৯৮০ সালে মালয়েশিয়া থেকে আরআরআইএম ৬০০ জাতের রাবার এনে গ্রাফটিং নার্সারি করে এ বাগান সৃজন করা হয়েছিল। প্রয়োজন শেষে নার্সারির আর খবর রাখেনি কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে আরও উন্নত জাতের রাবার উদ্ভাবন হয়েছে। অধিক উৎপাদনের জন্য উন্নত জাতের রাবারের চাষ করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তাগণ। শাহজিবাজার রাবার বাগান ব্যবস্থাপক শ্যামল কান্তি দেব জানায়, রাবার বাগানের এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে এ বাগান থাকবে না। তিনি বলেন শাহজিবাজার রাবার বাগানের অধিকাংশ রাবার গাছ জীবন চক্র হারানোর ফলে গাছ থেকে কষ পাওয়া যায় না। রাবার ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানি শুল্ক কম থাকায় বিদেশ থেকে রাবার আমদানি করায় দেশে উৎপাদিত রাবার বিক্রি হচ্ছে না। রাবার বাগানে সরকারী কোন ভর্তুকি বা সহায়তা পাওয়া যায় না কিন্তু সরকারী নিয়মে বর্ধিতহারে শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন দিতে হচ্ছে। শাহজিবাজার রাবার বাগানকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করতে হলে বিদেশ থেকে রাবার আমদানি কমাতে হবে। উন্নতজাতের রাবার চারা আমদানি করে রাবার উৎপাদনে আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ করা প্রয়োজন। শ্যামল কান্তি দেব বলেন, জীবন চক্র হারানো রাবার গাছ কেটে নিজেরাই রাবার তৈরির কাজে ব্যবহার করছেন। রাবার পণ্য উৎপাদনকারী কারখানাগুলো দেশীয় রাবার কিনতে গেলে ১৫ শতাংশ মূসক এবং ৯ শতাংশ বিক্রয় কর দিতে হয়। অন্যদিকে রাবারের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ এই নীতির কারণে রাবারের পণ্য উৎপাদনকারীরা দেশীয় রাবার না কিনে বিদেশ থেকে রাবার আমদানি করছে। শাহজিবাজার রাবার শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সুদৃষ্টি কামনা করছেন এলাকাবাসী।
×