ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি

যৌথ প্রযোজনার সিনেমায় সরকারের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ নেই

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৩০ জুন ২০১৭

যৌথ প্রযোজনার সিনেমায় সরকারের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঈদ-উল ফিতরে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নবাব’ ও ‘বস-২’ মুক্তির ক্ষেত্রে সরকারের কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগ ছিল না বলে জানিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়। ‘যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্র মুক্তির বিষয়টি স্পষ্টীকরণ’ শিরোনামের এক বিবৃতিতে বুধবার তথ্য মন্ত্রণালয় এ কথা জানায়। এ ছবি দুটি যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নীতিমালা মানছে না বলে অভিযোগ আনে চলচ্চিত্রাঙ্গনের পরিচালক-শিল্পী ও কলাকুশলীদের নিয়ে গড়া ১৬টি সংগঠন। ঈদ-উল ফিতরের পর এ বিষয়ে সুরাহা না হলে তারা এফডিসিতে টানা ধর্মঘট ডাকবেন বলে হুমকি দেয়। তথ্য মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে জানায়, সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত দু’টি চলচ্চিত্র ‘নবাব’ ও ‘বস-২’ মুক্তির বিরোধিতা করে পত্র-পত্রিকা, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, অনলাইন, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত কিছু মন্তব্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে। এতে বলা হয়, যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে এবং এ নীতিমালার আলোকে যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণের বিষয়টি তদারক করার জন্য এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে প্রধান করে চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক, শিল্পীদের প্রতিনিধির সমন্বয়ে ‘যৌথ প্রযোজনা চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রিভিউ কমিটি’ রয়েছে। এ প্রিভিউ কমিটি যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য চিত্রনাট্য কলাকুশলীর সংখ্যাসহ পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব নীতিমালা অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অনুমোদন দেয়ার পরই কেবল যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করা যায়। যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণ শেষে আবারও এ প্রিভিউ কমিটির কাছে জমা দিতে হয় জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, প্রিভিউ কমিটি ফের নির্মিত চলচ্চিত্রটি নীতিমালা অনুযায়ী নির্মাণ হয়েছে কি-না, তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছাড়পত্র দিলেই চলচ্চিত্রটির নির্মাতা বা প্রযোজক তা সেন্সর সনদের জন্য সেন্সর বোর্ডে জমা দেন। সেন্সরবোর্ড অন্যান্য চলচ্চিত্রের মতোই সেন্সর আইন অনুযায়ী চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে কি-না তা পরীক্ষা করে। কর্তন-বিয়োজনের পরামর্শ থাকলে তা দেয়। সেই অনুযায়ী নির্মাতা বা প্রযোজক কর্তৃক কর্তন-বিয়োজন করে পুনরায় সেন্সর বোর্ডে জমা দিলে বোর্ড ফের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আইন অনুযায়ী সনদ প্রদান করে। সেন্সর সনদপ্রাপ্ত যে কোন চলচ্চিত্রের মতোই যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্র মুক্তির বিষয়টি চলচ্চিত্রটির নির্মাতা বা প্রযোজক, পরিবেশক, প্রদর্শকদের নিজস্ব বিষয়। এ সামগ্রিক প্রক্রিয়ায় কোথাও সরকারের পক্ষ থেকে কোন প্রভাব বিস্তার করা বা আইনের বাইরে পা ফেলার সুযোগ নেই বলে বলা হয় বিবৃতিতে। এতে আরও বলা হয়, যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র দু’টিতেও একই নীতি অনুসৃত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে কোথাও কোন প্রভাব বিস্তার করা বা আইনের বাইরে থাকার সুযোগ ছিল না। যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্র ‘বস-২’-এর বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে দেয়া লিখিত অভিযোগটিও বিধি অনুযায়ী মন্ত্রণালয় সঙ্গে সঙ্গেই প্রিভিউ কমিটির কাছে পাঠিয়েছে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, প্রিভিউ কমিটি অভিযোগটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সর্বসম্মতিক্রমে অনাপত্তি ছাড়পত্র প্রদান করে। প্রিভিউ কমিটির ‘অনাপত্তি’ ছাড়পত্র পাবার পর ‘বস-২’-এর নির্মাতা বা প্রযোজক সেন্সর সনদের জন্য সেন্সর বোর্ডে জমা দেন। সেন্সর বোর্ড আইন অনুযায়ী চলচ্চিত্রটি দেখে সনদপত্র প্রদান করে। ছবি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির বিষয়টি চলচ্চিত্রটির নির্মাতা বা প্রযোজক, পরিবেশক, প্রদর্শকদের একান্ত নিজস্ব বিষয়। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিতে সরকার ও সরকারের সকল সংস্থা বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে তথ্য মন্ত্রণালয় কোন ব্যক্তিস্বার্থ রক্ষা বা হীন উদ্দেশ্যে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য প্রদান বা গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকার জন্য সকলকে অনুরোধ জানিয়েছে।
×