ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চার কৌশলে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:৫৯, ১৯ জুন ২০১৭

চার কৌশলে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চার কৌশলে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ওভার এ্যান্ড আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার এ্যান্ড আন্ডার শিপমেন্ট, পণ্যের মিথ্যা বর্ণনা এবং একাধিক ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে বড় ধরনের অর্থ পাচার হচ্ছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। রবিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটরিয়ামে ট্রেড সার্ভিস অপারেশনস অব ব্যাংকস শীর্ষক রিভিউ কর্মশালায় এ গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এস কে সুর চৌধুরী। গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. শাহ মোহাম্মদ আহসান হাবীব। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থ পাচার প্রতিরোধের নীতিমালাগুলো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হলেও এগুলোয় আরও উন্নতির সুযোগ রয়েছে। স্বীকৃত ব্যাংকগুলোকে আমদানি-রফতানি মূল্যের ক্ষেত্রে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। বিআইবিএমের গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ট্রেড সার্ভিসের মাধ্যমে কেউ যেন ঋণখেলাপী হতে না পারে সেজন্য যথোপযুক্ত তথ্য সরবরাহ করতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর উচিত হবে অধিক স্বচ্ছতা নির্ধারণের জন্য এসব তথ্য যাচাই করা। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালার প্রয়োজন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, বাণিজ্যকেন্দ্রিক অর্থ পাচার উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু অর্থ পাচার নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে অন্য আর্থিক অপরাধগুলোও ঘটছে। এসব দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ওপর কড়া নজরদারি করছে। প্রতিদিনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের লেনদেন তদারকি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যাংকিং সেবা আরও উন্নতির সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক নীতিমালার ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন করেছে। আরও পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। একই সঙ্গে অর্থ পাচারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সরকারী ব্যাংকগুলো বেসরকারী ব্যাংকগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। ওভার ইনভয়েসিং এবং আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং বন্ধ করতে হবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসেবায় আরও গতিশীলতা আনতে ব্যাংকগুলোকে প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে। ইসলামী ব্যাংকের ডিএমডি মাহবুব উল আলম বলেন, আমাদের এখানে ব্যাংকিং সিস্টেম এখনও উন্নত হয়নি। তাই আন্তর্জাতিক ট্রেড সিস্টেমেও অনেকে পিছিয়ে। তবে আমাদের ইসলামী ব্যাংকে আমরা একটি প্র্যাকটিস শুরু করেছি। আমরা আন্তর্জাতিক কমপ্লায়েন্টস এজেন্ট নিয়োগ করেছি। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তারা আমাদের সহযোগিতা করছে। বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেনÑ এনআরবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহমুদ হোসাইন, ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের অনুষদ সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ বারিকুল্লাহ প্রমুখ।
×