ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যে কোন সময় বরখাস্ত হতে পারেন

ট্রাম্পের রোষানলে ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ১৮ জুন ২০১৭

ট্রাম্পের রোষানলে ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিচার দফতরের দ্বিতীয় শীর্ষ ক্ষমতাধর ব্যক্তির বিরুদ্ধে শুক্রবার টুইটারে ব্যাপক আক্রমণ করেছেন। ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল রড রোসেনস্টেইন গতবছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের বিষয়ে তদন্ত করছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে তিনি যে কোন সময় বরখাস্ত হতে পারেন। এএফপি ও ওয়াশিংটন পোস্ট। ট্রাম্প বলেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছিল কি না তা নিয়ে তিনি এখন তদন্তাধীন রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তার প্রশাসন জটিলতার মধ্যে রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারাভিযানের পুরো সময়টা জুড়েই তার রুশ যোগসাজশ বহুল আলোচিত বিষয় ছিল। শুক্রবার সকাল জুড়ে তিনি ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল রড রোসেনস্টেইনকে টার্গেট করে একাধিক টুইট করেন। মায়ামির উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় লেখেন ‘এফবিআই ডিরেক্টরকে বরখাস্ত করায় আমাকে নিয়ে এখন তদন্ত করা হচ্ছে। এমন এক ব্যক্তি তদন্তটি করছেন যিনি এক সময় এফবিআই ডিরেক্টরকে প্রতিপক্ষকে হেনস্থাকারী বলে মন্তব্য করেছিলেন।’ রোসেনস্টেইন এর আগে কোমির সমালোচনা করে মেমো লিখেছিলেন। ট্রাম্প যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছেন এ থেকে বিষয়টি প্রথমবারের মতো জানা গেল। ট্রাম্প কোমিকে সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে রাশিয়ার যোগাযোগ নিয়ে একটি তদন্ত বন্ধ করতে অনুরোধ করেছিলেন। ফেব্রুয়ারিতে তিনি কোমিকে এই অনুরোধ করেন বলে মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে কোমি বরখাস্ত হওয়ার পর জানা যায়। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করার জন্য একজন বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে রবার্ট মুলারকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। মুলার নিজেও একজন এফবিআইর সাবেক ডিরেক্টর। ট্রাম্প ইতোপূর্বে অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইর ডিরেক্টরের পদ থেকে জেমস কোমিকে বরখাস্ত করেছেন। কারণ কোমি রুশ হস্তক্ষেপ নিয়ে ট্রাম্প ও সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ফ্লিনের বিষয়ে তদন্ত বন্ধ করতে অস্বীকার করেছিলেন। একই ইস্যুতে ফ্লিনও চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন। তদন্ত কাজে গতি আনার জন্য এই কাজে নিযুক্ত কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মুলার আরও ক্ষমতা চেয়েছেন। মুলারের মুখপাত্র বলেছেন, তদন্ত প্যানেলে ইতোমধ্যেই ১৩ জন এ্যাটর্নি নিয়োগ পেয়েছেন। এদের সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন। মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের সাবেক এ্যাটর্নি রোসেনস্টেইনের প্রশাসনের একজন দক্ষ আইনজীবী হিসেবে খ্যাতি রয়েছে। তার আরেকটি পরিচয় ছিল তিনি দলমতের উর্ধে থেকে কাজ করতেন। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের সময় বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের বিষয়ে তদন্ত নিয়ে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্টই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন তাকে নিয়ে সমালোচনা করছেন। কোমি বরখাস্ত হওয়ার পর তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার জন্য রোসেনস্টেইনই মুলারকে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেন। ওয়াশিংটন পোস্টের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ট্রাম্প বিচার বিভাগের কাজে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছেন কি না, তিনি সে বিষয়ে তদন্তের মুখে রয়েছেন। তবে রোসেনস্টেইনও যথেষ্ট ঝুঁকির মুখে রয়েছেন। কারণ ট্রাম্প তাকে যে কোন সময়ই বরখাস্ত করতে পারেন। এছাড়া মুলারের তদন্ত নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলতে পারেন। ট্রাম্প ও তার ঘনিষ্ঠ লোকদের বিষয়ে রাশিয়ার নির্বাচনে সংশ্লিষ্টতা নিয়ে একাধিক তদন্ত হয়েছে? কিন্তু এ পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি ? ওয়াশিংটন পোস্ট জানাচ্ছে, তার বিরুদ্ধে এবার সরাসরি তদন্ত করছেন মুলার ? সেই তদন্তে সহায়তা করতে এগিয়ে এসেছেন একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সিনিয়র কর্মকর্তারা। তাদের মধ্যে রয়েছেন ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সে প্রধান ড্যানিয়েল কোটস ও এনএসএ প্রধান এ্যাডমিরাল মাইক রজার্স? ট্রাম্প বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন কিনা, সেটি খতিয়ে দেখতে চান মুলারের টিমের কর্মকর্তারা। গতবছর নির্বাচনে রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতা তদন্তের মধ্যে নতুন এই তদন্ত বেশ গুরুত্ব বহন করছে। কয়েক দিন আগে খবর বেরোয় যে ট্রাম্প রবার্ট মুলারকে বরখাস্ত করতে চান। এর কয়েক দিন যেতে না যেতেই মুলারের হাতেই ট্রাম্পের বিষয়ে তদন্ত কাজ এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেল। মুলারকে বহিষ্কারের চাপ মূলত তার তদন্ত কাজের বাধা সৃষ্টি করার জন্যই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
×