ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষার্থীদের নামের ভুয়া তালিকা

পটুয়াখালীতে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত !

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ১০ জুন ২০১৭

পটুয়াখালীতে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত !

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী, ৯ জুন ॥ সদর উপজেলার উত্তর-পূর্ব মৌকরন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ে যে পরিমাণ ছাত্রছাত্রী রয়েছে তার থেকে বেশি শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করে ও তাদের উপস্থিতি দেখিয়ে উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আল-ইমরান। আর বিদ্যালয়ের শিক্ষা সামগ্রী ক্রয়ের জন্য সরকারী বরাদ্দের ৪০ হাজার টাকার বড় একটি অংশ নিজেই পকেটস্থ করেছে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক। তবে এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলেও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তাই তিনি রয়েছেন বহাল তবিয়তে। জানা যায়, ২০১৬ সালে বিদ্যালয়টির ৩য় শ্রেণীর মোঃ বায়জীদ রোল নং-৮ এবং মোঃ বাইজিদ রোল নং-১১ নামে দু’জন ছাত্রের নামে উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় চলতি বছরে ৪র্থ শ্রেণীতে তাদের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে, তবে ওই দুই নামে কোন ছাত্রের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। অন্য ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বায়জীদ নামে কোন ছাত্র নেই তাদের স্কুলে। কে এই বায়জীদ এবং বাইজিদ তার কোন উত্তরও দিতে পারেনি বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরাও। এভাবেই বিদ্যালয়টির বিভিন্ন ক্লাসের ২৩ ছাত্রছাত্রীর নাম ব্যবহার করে তাদের নামে উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন করে তা আত্মসাত করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আল ইমরান। এদিকে বিদ্যালয়ে পাঁচজন শিক্ষক কর্মরত থাকলেও নিয়মিতভাবে তারা বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন না। রোটেশন করে প্রতিদিন দুই থেকে তিন জন শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন। এর ফলে ছাত্রছাত্রীরাও এখন আর বিদ্যালয়ে আসতে উৎসাহ বোধ করছেন না। একাধিকবার খোঁজ নিয়ে বিদ্যালয়টির মোট ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিত ১৫ থেকে ২০ জনের বেশি পাওয়া যায়নি। আর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ লুৎফর রহমান জানান, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সরকারী অর্থ তছরুপের অভিযোগে প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আল ইমরানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখন মানসিকভাবে অসুস্থ বোধ করছি, আমি বিব্রত, এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। বরিশাল স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল থেকে জানানÑসরকারী নীতিমালা অমান্য করে উজিরপুর উপজেলার ধামুরা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে উপবৃত্তির তালিকা তৈরির নামে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে চার শ’ টাকা করে ৩০ হাজার টাকা আদায় করে আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগে জানা গেছে, ধামুরা ডিগ্রী কলেজের ৭৪ শিক্ষার্থী উপবৃত্তির আওতায় আসার কথা থাকলে সেখানে নাম এসেছে ৬৫ জনের। অধ্যক্ষের নির্দেশে কলেজের ডিগ্রী দ্বিতীয় বর্ষের ৭৪ শিক্ষার্থীর কাছ থেকেই উপবৃত্তির ফরম ক্রয় বাবদ ২০০ টাকা ও ডাচ্ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং (রকেট)-এর এ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ফরম দিয়ে ২০০ টাকা করে সর্বমোট ৪০০ টাকা করে উত্তোলন করা হয়েছে। কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শুভ জয়ধর, শিমু, সেতু, সাথীসহ একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগে জানা গেছে, তাদের কাছ থেকে উপবৃত্তির ফরম নেয়ার সময় ২০০ টাকা ও ডাচ্ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং (রকেট)-এর এ্যাকাউন্ট খোলার ফরম নেয়ার সময় ২০০ টাকা করে মোট ৪০০ টাকা করে আদায় করা হয়েছে। তারা আরও জানান, উপবৃত্তির তালিকাভুক্ত করার জন্য এভাবেই ৭৪ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে চার শ’ টাকা করে আদায় করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। টাকা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজ অধ্যক্ষ কালাম সরদার বলেন, আমার জানামতে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। যদি কোন টাকা রাখা হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দেয়া হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঝুমুর বালার সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
×