ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গৃহবধূকে হত্যা করে শ্বশুর শাশুড়ি ননদের পলায়ন

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ৪ জুন ২০১৭

গৃহবধূকে হত্যা করে শ্বশুর শাশুড়ি ননদের পলায়ন

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ ফারহানা বেগম(২০) নামের এক সন্তানের জননীকে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টার দিকে কিশোরীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মুছা মোতাপাড়া গ্রামের শ্বশুরবাড়ির বসতঘর হতে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। শারীরিক নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যার পর গৃহবধূ ফারহানার মরদেহটি ঘরের ভেতর ঝুলিয়ে রেখে রাতের আঁধারে বাড়িঘর ছেড়ে আসবাবপত্র, গরু, ছাগল নিয়ে পালিয়ে যায় শ্বশুর আব্দুস সবুর,শাশুড়ি মাহমুজা বেগম,ননদ ছকিনা বেগম ও দেবর জিয়াউর রহমান। পবিত্র রমজান মাসে এই নির্মম হত্যাকা- ঘিরে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসী হত্যাকারীদের গ্রেফতারসহ তাদের ফাঁসি দাবি করে। ঘটনার সময় নিহত গৃহবধূর স্বামী মাজেদুল ইসলাম তৈরি পোশাক কারখানায় কর্মরত থাকায় তিনি ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। অভিযোগ মতে, দুই বছর আগে একই ইউনিয়নের মুছা নয়াপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার মেয়ে ফারহানা বেগমের সঙ্গে মুছা মোতাপাড়া গ্রামের আব্দুর সবুরের ছেলে মাজেদুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় দেড় লাখ টাকা যৌতুক দেয়া হলেও ফারহানার শ্বশুর ও শাশুড়ি আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করে আসছিল। এ নিয়ে তারা প্রায়দিন পুত্রবধূকে মারধর করত। এ নিয়ে গ্রামে আড়াইমাস আগে বিচারসালিশ করা হয়। এতে ফারহানার স্বামী তার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকায় চলে যায়। এই দম্পক্তির ৬ মাস বয়সের মেয়ে মিতি বেগমের ঢাকায় নিউমোনিয়া হলে গত ২৫ মে মাজেদুল তার স্ত্রী ও মেয়েকে তার শ্বশুর গোলাম মোস্তফার বাড়িতে রেখে পুনরায় কর্মস্থলে ফিরে যান। এ অবস্থায় ১ জুন ফারহানার শাশুড়ি মাহমুজা বেগম ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে ফারহানার বাবারবাড়ি গিয়ে নিজের ভুল স্বীকার করে ফারহানাকে তাদের বাড়ি নিয়ে আসে। এখানে এসেই ফারহানার আরেকটি বিপদ দেখা দেয়। শুক্রবার দুপুরে গলার চেন খুলে বিছানায় রাখলে তা হাতিয়ে নেয় ননদ ছকিনা বেগম। চেনটি ফেরত চাইলে এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়। ওই বিবাদে রাত ১০টার দিকে ফারহানাকে তার শ্বশুর,শাশুড়ি ননদ, দেবর বেধড়ক মারপিট করে। এ অবস্থায় ফারহানা নিজেকে বাঁচাতে সন্তান কোলে নিয়ে বাবারবাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য বাড়ি হতে বের হন। গ্রামবাসী জানায়, তারা চিৎকার শুনে বের হয়ে ঘটনাটি দেখতে পেলে তারা আর ফারহানাকে নির্যাতন করবে না বলে পুনরায় বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। সকালে এলাকাবাসী দেখতে পায় ওই বাড়িতে কোন সাড়াশব্দ নেই। এলাকাবাসী বাড়িতে ঢুকে দেখতে পায় ফারহানার মরদেহ ঘরের টেবিলের ওপর একটি পা ও টেবিলের ওপর রাখা হাতলওয়ালা চেয়ারে আরেকটি পা ভাঁজ করা এবং গলায় ওড়না দিয়ে তীরে ঝুলছে। এতে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয় এটি আত্মহত্যা নয় হত্যাকা-। তখন এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়।
×