স্টাফ রিপোর্টার ॥ জোটগতভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে রমজান মাসে প্রার্থী তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু করবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোট (ইউএনএ)। বুধবার রাজধানীর বনানীতে এরশাদের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সম্মিলিত জাতীয় জোটের দ্বিতীয় যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের সময় ভোট বাড়াতে হেফাজতে ইসলামকে জোটে যুক্ত করার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তখন এরশাদ বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কারণ হেফাজতে ইসলাম যখন ঢাকার মতিঝিলে সমাবেশ করেছিল তখন আমরা তাদের পাশে ছিলাম। পানি বিতরণ করেছি। এরপরও মাওলানা শফি হুজুরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা যদি রাজনীতিতে আসে তাহলে আমাদের হয়ত সমর্থন দেশে বলে আশা প্রকাশ করেন এরশাদ।
বৈঠক সূত্রগুলো বলছে, রমজানের মধ্যে জোটের শরিক দলগুলো নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় নিজেদের প্রার্থিতা ঠিক করে তালিকা তৈরি করবেন। সেই তালিকা যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত করে ঈদের পরে জোটের প্রধান লিয়াজোঁ কমিটি ও জোটের চেয়ারম্যান এরশাদের কাছে জমা দেবেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জোটের ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। বৈঠকে জোটের মুখপাত্র এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব এম এ মতিনসহ শরিক দলগুলোর শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্র আরও জানায়, আগামী নির্বাচন পরিকল্পনা, ভবিষ্যত কর্মসূচীসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ঈদের পরে জেলা-উপজেলায় জোটের লিয়াজোঁ কমিটি গঠন ও বিভাগীয় পর্যায়ে জোটের মহাসমাবেশ কর্মসূচীর বিষয়ে আলোচনা হয়। তাছাড়া তৃতীয় রমজানে জোটের ব্যানারে কূটনীতিকদের সঙ্গে এবং ছয় রমজান শরিক দলগুলো নিয়ে জোটের ইফতার পার্টি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠকে জোটের চেয়ারম্যান এরশাদ ব্যক্তি স্বার্থে ভুল বোঝাবুঝির উর্ধে উঠে শরিক দলগুলোর নেতাদের জোটের জন্য কাজ করার আহ্বান জানান। এ সময় তিনি বলেন, যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা জোট গঠন করেছি, তা যে কোন মূল্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। যেন ব্যক্তি স্বার্থে আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত না হয়, সেদিকে সবাইকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। তিনি জাতীয় পার্টির সরকার আমলের উন্নয়ন নিয়ে জনগণের কাছে যাওয়ার আহ্বান জানান। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন জোটের মুখপাত্র এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। তিনি বলেন, দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী নির্বাচন, ঈদের পর মহাসমাবেশ কর্মসূচী, লিয়াজোঁ কমিটি গঠনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
হাওলাদার আরও বলেন, দেশের দুটি বড় দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ২৬ বছর দেশ পরিচালনা করেছে। তাদের অনেক ভুলভ্রান্তি রয়েছে। আজকের সভায় আলোচনা হয়েছে, কীভাবে জাতীয় পার্টির নয় বছরের ক্ষমতায় থেকে দেশের মানুষের জন্য উন্নয়ন কাজ করেছে তার প্রচারণা করা যায়। জোটের শরিক বিএনএ থেকে কোন দল বেরিয়ে গেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি সঠিক নয়। তাছাড়া অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে জোটে সরাসরি নেয়া হয় না। এসব দল ইসলামী মহাজোট ও বিএনএ জোটের মাধ্যমে সম্মিলিত জাতীয় জোটে অন্তর্ভুক্ত হবে।
হেফাজতের সঙ্গে জোটের আলোচনা হয়েছে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে হাওলাদার বলেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে তারা আসবে কিনা তা নিশ্চিত নয়। তারা বলেছে, হেফাজত রাজনীতি করবে না। কিন্তু দেশের জন্য কাজ করবে। ‘আমাদের কথা, সবাইকে রাজনীতি করতে হবে তা কেন? আমরা চাই বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে তারা আমাদের সহায়তা করতে পারে’Ñ বলেও জানান জোটের মুখপাত্র। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য এস এম ফয়সল চিশতীসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: