ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গেজেট থেকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার নাম বাদ দেয়ার আবেদন

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ২২ মে ২০১৭

গেজেট থেকে ভুয়া  মুক্তিযোদ্ধার নাম বাদ দেয়ার আবেদন

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের কানাইনগর এলাকার মতিউর রহমানকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখ করে তার নাম মুক্তিযোদ্ধার গেজেট তালিকা থেকে বাদ দেয়ার দাবি জানিয়ে সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন তার মৃত ছোট ভাইয়ের স্ত্রী হাসিনা মমতাজ। এদিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটিতে গত ১৮ মে মতিউর রহমান উপস্থিত হলেও তার মক্তিযোদ্ধার মূল সার্টিফিকেট দেখাতে পারেননি বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান। এর আগে তাকে আরও একবার ডাকা হয়েছিল বলেও তিনি জানান। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আবেদনের কপি থেকে জানা যায়, বক্তাবলী ইউনিয়নের কানাইনগরের বাসিন্দা মতিউর রহমান ১৯৯১ সালে তার মৃত বড় ভাই হাবিবুর রহমানের মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্রে তার ভাইয়ের নাম মুছে নিজের নাম লিখে মুক্তিযোদ্ধা সনদ জাল করে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে এবং ২নং সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে বলে বেড়াচ্ছে। সম্প্রতি মতিউর রহমানের ছোট ভাই মজিবুর রহমানের স্ত্রী হাসিনা মমতাজ সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে তাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করে মতিউর রহমানের নাম মুক্তিযোদ্ধা গেজেট তালিকা থেকে বাদ দেয়ার আবেদন করেন। এ বিষয়টি তদন্ত করতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা সমাজ সেবা অফিসারের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু সমাজ সেবা অফিসারের কাছেও মতিউর রহমান হাজির হননি বলে ইউএনও জানান। এদিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় চলছে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের কার্যক্রম। মতিউর রহমানকে একাধিকবার যাচাই-বাছাই কমিটিতে ডাকা হলেও সর্বশেষ গত ১৮ মে যাচাই-বাছাই কমিটিতে তিনি হাজির হন। সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ও সদর উপজেলার ইউএনও তাসমিন জেবিন বিনতে শেখ জানান, মতিউর রহমানের নামে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আমরা যাচাই-বাছাই কমিটিতে তাকে ডেকেছি। প্রথমবার তিনি আসেননি। গত ১৮ মে তিনি যাচাই-বাছাই কমিটি হাজির হয়েছিলেন। তিনি কোথায় যুদ্ধ করেছেন, কিভাবে করেছেন একজন মুক্তিযোদ্ধাকে যে ধরনের প্রশ্ন করা হয় তাকেও এ ধরনের প্রশ্ন করা হয়েছিল। ওই দিন তিনি তার মতো করে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধার মূল সার্টিফিকেট তিনি দেখাতে পারেননি। বিষয়টি যাচাই-বাছাই কমিটি সিদ্ধান্ত নিবেন। বক্তাবলীর মীরগঞ্জ এলাকার মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন মোড়ল জানান, কানাইনগরের মতিউর রহমান একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। যখন ৯ মাস যুদ্ধ চলছিল তখন সে ঢাকাতে লুটতরাজ করেছে। বউ মেরেছে। তার যখন ফাঁসি রায় হয়েছে তখন সে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে। সে মুক্তিযুদ্ধ করেনি। সে মুক্তিযোদ্ধা না। সে রাজাকারী করেছে। ফাঁসি থেকে বাঁচতে সে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে। এ বিষয়ে মতিউর রহমান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে, লাল মুক্তিবার্তায় ও মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় আমার নাম আছে। শেখ মুজিবুর রহমান থাকতে যে তালিকা হয়েছে সেই তালিকায়ও আমার নাম আছে। সার্টিফিকেট দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হয় না। যাচাই-বাছাই করার পর তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নাম আসে।
×