ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কিশোরীগঞ্জে ২ কোটি টাকা নিয়ে হায় হায় কোম্পানি হাওয়া

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ৭ মে ২০১৭

কিশোরীগঞ্জে ২ কোটি টাকা নিয়ে হায় হায় কোম্পানি হাওয়া

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ হায় হায় কোম্পানির খপ্পরে পড়ে সঞ্চয়ের দুই কোটি টাকার প্রতারণার শিকার হয়েছে কিশোরীগঞ্জ উপজেলার তিন হাজার নারী-পুরুষ। শুক্রবার রাতে বনি ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড নামের প্রতারণাকারী প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অফিসে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়। এ নিয়ে গোটা উপজেলায় তোলপাড় চলছে। অভিযোগে জানা যায়, সঞ্চয়ের টাকা জমা দিয়ে মোটা অংকের ঋণসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদানের নামে ওই কোম্পানিটি ২০০৮ সালের ১৫ আগস্ট উপজেলা শহরের থানা সংলগ্ন মকবুল হোসেনের বাড়ি ভাড়া নিয়ে অফিস খুলে বসে। কোম্পানির ম্যানেজার উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের কাচারীপাড়া গ্রামের নারিয়া মামুদের ছেলে আমিনুর রহমান প্রতিটি ইউনিয়নে সমিতি গঠনের লক্ষ্যে ফিল্ড সুপারভাইজার নিয়োগ দিয়ে ৯টি ইউনিয়নে ৪৫টি সমিতি গঠন করে। এতে প্রায় তিন হাজার সদস্য করা হয়। হায় হায় কোম্পানিটির ম্যানেজার ও ফিল্ড সুপারভাইজার স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় গ্রামের সহজ সরল নারী ও পুরুষ তাদের কথা অনুযায়ী বিশ্বাস করে জমানো টাকার দ্বিগুণ ও মোটা অংকের লোন পাওয়ার আশায় সমিতিতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রতি সপ্তাহে ১০০ টাকা থেকে ১০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা করে আসছিল। সদস্যরা জানায়, কোম্পানির শর্ত অনুযায়ী আট বছরের আগে কেউ টাকা তুলতে বা লোন নিতে পারবে না। প্রতি সদস্য তাদের সঞ্চয়ের টাকার আট বছর পর ঋণসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবে। ঠিক সে সময় তারা সদস্যদের সঞ্চয়ের প্রায় দুই কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পুটিমারী ইউনিয়নের ঘোনপাড়া সমিতির দলনেত্রী লাভলী বেগম বলেন, আমার সমিতির ২৭ সদস্য গত আট বছরে ওই কোম্পানিতে চার লাখ ৮০ হাজার টাকা জমা দিয়েছে। নির্ধারিত সময়ের আট মাস অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পরও টাকা উত্তোলন করতে না পেরে আমরা সবাই মিলে ফিল্ড অফিসার মাজেদুলকে আটক করে নিয়ে আসি। কিন্তু তার বউ রোকসানা বেগম চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাদের টাকা ফেরত দিবে মর্মে মুচলেখা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। কিন্তু ওইদিন রাতেই মাজেদুল সপরিবারে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। এরকম সদস্য মফুজা বেগম, আব্দুল করিম, মাছুদা বেগম, গোলাপজানসহ সকলেই জানান, আমরা অনেক কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে মাজেদুলের কথা শুনে টাকা জমা দিয়েছি। পুটিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সায়েম লিটন বলেন, সমিতির সদস্যরা মাজেদুলকে আটক করে আমার কাছে নিয়ে এসেছিল। সে গরিব সদস্যদের জমানো টাকা ফেরত দেবে মর্মে মুচলেকা দেয়ায় আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু রাতেই জানতে পাই সে সপরিবারে পালিয়ে গেছে। এদিকে কোম্পানির ম্যানেজার আমিনুর ইসলাম ও ফিল্ড অফিসার মাজেদুলের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
×