ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঠিকাদারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

সেতু নির্মাণে অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ৬ মে ২০১৭

সেতু নির্মাণে অনিয়ম

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ ভূরুঙ্গামারীতে সেতু নির্মাণে চলছে নানা অনিয়ম। রাতের অন্ধকারে চলছে ঢালাইয়ের কাজ। ব্রিজের ঢালাই কাজে অনিয়ম দেখতে পেয়ে শত শত বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী উপস্থিত হলে বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্রমিক ও এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী কাজ বন্ধ করে পালিয়ে যায়। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। তিনি এলজিইডির কুড়িগ্রাম নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানান। নির্বাহী প্রকৌশলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঠিকাদারের শাস্তি ও সেতুর কাজ পুনরায় করার ঘোষণা দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের রংপুর ডিভিশন রুরাল ইনফেকশন ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের থানাঘাট এলাকায় ফুলকুমর নদের ওপর ৪৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি সেতুর কাজ চলছে। যার প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় দুই কোটি ১১ লাখ ১৪ হাজার ৬০ টাকা। এর মধ্যে এক কোটি ৬৩ লাখ চার হাজার টাকা চুক্তির টেন্ডারে কুড়িগ্রামের উজ্জল কুমার দে নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটির নির্মাণকাজ করছে। বর্তমানে পাইলিংয়ের কাজ চলছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতা ওয়াহেদুজ্জামান। এ পর্যায়ে পাইলিংয়ের কাজ করা হলে কাজ নি¤œমানের অভিযোগ তোলে স্থানীয়রা। তারা দেখতে পায় ৮১ ফুট পাইলিং হওয়ার কথা। কিন্তু ঠিকাদার রাতের আঁধারে ৮১ ফিটের গর্তে ৩টি রডের খাঁচা ব্যবহার করার কথা থাকলেও সেখানে ৩০ ফুট উচ্চতার একটি রডের খাঁচা ফেলানো হয়। খাঁচাতে সিমেন্ট ব্যবহার না করে শুধু বালু আর পাথর দিয়ে পাইলিংয়ের কাজ করে। সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করা হয় মাত্র ছয় ফুট। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয়রা কাজে বাধা দেয়। কাজ ফেলে পালিয়ে যায় শ্রমিক ও এলজিইডির উপ-প্রকৌশলী মোবাইদুল ইসলাম। বিষয়টি জানতে পেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান নুরন্নবী চৌধুরী খোকন সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা তাকে এসব বলেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান বিষয়টি এলজিইডির কুড়িগ্রাম নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিষয়টি জানালে নির্বাহী প্রকৌশলী ওইদিন বিকেলে সরেজমিনে যান। এর আগে কাজ বন্ধ করে এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলীসহ ঠিকাদারের লোকজন পালিয়ে যায়। ব্রিজের পাইলিং কাজে নিয়োজিত শ্রমিক রহিমসাদু ব্রিজের পাইলিংয়ের কাজে নিন্মমানের কাজ করার কথা স্বীকার করে বলেন, আমাদের যেভাবে কাজ করার জন্য ঠিকাদার নির্দেশনা দিয়েছে সেভাবে কাজ করেছি। এর আগে আরও ১৭টি পাইলিংয়ের কাজ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, ব্রিজের কাজ ঠিকই চলছিল। কিছু লোক সমস্যাটা তৈরি করেছে। ভূরুঙ্গামারী এলজিইডির প্রকৌশলী এন্তাজুর রহমান বলেন, ঠিকাদার চুরি করতে গেছে ইঞ্জিনিয়ার ছাড়া। তাহলে তো এমন হবে। কাজ একটু কমবেশি হয়। তাই বলে এত চুরি করলে তো সমস্যা। তাদের প্রভাব আছে সহকারী ইঞ্জিনিয়ারকে তুলে নিয়ে গিয়ে রাতের আঁধারে কাজ করেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এসেছেন তিনি পদক্ষেপ নেবেন। এলজিইডির কুড়িগ্রাম নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমিন বলেন, সরেজমিনে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। এতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অফিশিয়ালি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×