ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে গলায় দড়ি পেঁচানো সহকারী পুলিশ কমিশনারের লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ৩০ এপ্রিল ২০১৭

রাজশাহীতে গলায়  দড়ি পেঁচানো  সহকারী পুলিশ  কমিশনারের  লাশ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) অফিসার্স মেসের একটি কক্ষ থেকে মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) সাব্বির আহম্মেদ সরফরাজের লাশ পাওয়া গেছে। এসি সাব্বির আহম্মেদ সরফরাজ মহানগরীর রাজপাড়া জোনে কর্মরত ছিলেন। তিনি অবসরপ্রাপ্ত আরএমপির কমিশনার ওবাইদুল্লাহর ছেলে। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, শনিবার সকালে সহকর্মীরা মেসের নিজ রুমে এসি সাব্বির আহম্মেদ সরফরাজের লাশ জানালার গ্রিলের সঙ্গে দড়ি দিয়ে গলায় বাঁধা অবস্থায় দেখতে পায়। পরে তারা রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ অফিসার্স মেস কর্তৃপক্ষকে জানায়। এসি সাব্বির আহম্মেদ সরফরাজ আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। ইতোমধ্যে পুলিশের ক্রাইম সিনের সদস্যরা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তার বাবা আরএমপির সাবেক কমিশনার এম ওবায়দুল্লাহ ঢাকা থেকে ফিরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লাশ দেখার পর পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের সঙ্গে ছেলের লাশ দেখে ফিরে বাবা সাবেক কমিশনার এম ওবায়দুল্লাহ জানান, তার কোন বক্তব্য নেই। ময়নাতদন্ত হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টই বলে দিবে পরবর্তী করণীয়। সেখানে হত্যার আলামত মিললে ও আত্মহত্যার সিনট্রম পাওয়া গেলে পরে সে অনুযায়ী পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। জানা গেছে, ৩১তম বিসিএস উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন সরফরাজ। আরএমপির মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতেখায়ের আলম জানান, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের পেছনে আরএমপির একটি অফিসার্স মেসে মাঝে মাঝে গিয়ে বিশ্রাম করতেন সরফরাজ। শনিবার সকালে ওই কক্ষেই তার গলায় নাইলনের দড়ি পেঁচানো লাশ পাওয়া যায়। এর আগে সকালের দিকে ঘটনাস্থল থেকে ঘুরে এসে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) ফরেনসিক বিভাগের অধ্যাপক এনামুল হক জানান, এসি সরফরাজের গলায় লাইলনের দড়ির ফাঁস আছে। তিনি সোফায় বসা অবস্থায় ছিলেন। দড়ির অন্য অংশ জানালার গ্রিলের সঙ্গে আটকানো ছিল। সোফায় কোনভাবে পা স্লিপ করে গলায় ফাঁস লেগে তিনি মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধরণা করা হচ্ছে। ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। পরিদর্শন করে একই কথা বলেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের রাজশাহীর ইনচার্জ তৌহিদুল আরিফ। তিনি বলেন, প্রাথমিক অবস্থায় আত্মহত্যা বলে মনে হয়েছে। রাজশাহী মহানগর পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) ও মুখপাত্র ইফতে খায়ের আলম জানান, ঘরের দরজা যেহেতু ভেতর থেকে বন্ধ ছিল তাই পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে এটা আত্মহত্যা। তারপরেও বিষয়টি পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা গভীরভাবে তদন্ত করছেন। জানা গেছে, নগরীর উপশহরের একটি বাসায় স্ত্রী ও তিন বছরের এক মেয়েকে নিয়ে থাকতেন সরফরাজ। মাঝেমধ্যে বিশ্রামের জন্য অফিসার মেসে যেতেন। গত রাতে তিনটা পর্যন্ত তিনি ডিউটি পালন করে মেসে বিশ্রামের জন্য আসেন। সকালে তার লাশ পাওয়া যায়। তার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের বাবুপুর গ্রামে। তার স্ত্রী সুচনা একজন চিকিৎসক। চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা তিনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরফরাজের স্বজনরা জানিয়েছেন, স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না তার। এ কারণেই আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন তিনি।
×