ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী

যেভাবে বদলে যেতে পারে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৩:৪৪, ২৪ এপ্রিল ২০১৭

যেভাবে বদলে যেতে পারে বাংলাদেশ

পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ঘটছে। এই পরিবর্তন শুধু মানুষের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করছে না, বরং অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য একটি দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের ধারণাকে ত্বরান্বিত করছে। বাংলাদেশও সেই ধারণাকে ধারণ করে অগ্রসর হলে তার পরিধি বাড়ানোর যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে সম্ভাবনার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা ও তার বাস্তবায়নের জন্য সঠিক এবং সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। আর এর জন্য স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই আমরা আগামীর সম্ভাবনা ও সমৃদ্ধির স্বপ্ন দেখালেও তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এক ধরনের পশ্চাৎমুখী চিন্তাধারা কাজ করে। তা থেকে বেরিয়ে এসে নতুন নতুন ধারণা তৈরি করা ও দেশের অর্থনীতির সঙ্গে তার যোগসূত্র গড়ে তোলা দরকার। অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের ‘মানুষের কল্যাণের জন্য অর্থনীতি’ এ বিষয়টিকে তেমনভাবে গুরুত্ব প্রদান করা হচ্ছে না। তার সঙ্গে আমাদের দেশপ্রেম, উদ্যোগ, সচেতনতা, সততা ও নৈতিকতার ক্ষেত্রে এক ধরনের কৃত্রিম দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হচ্ছে। উন্নত চিন্তাধারা ও উদার দৃষ্টিভঙ্গির আধুনিক মানুষ হিসেবে আমাদের চিন্তাধারা প্রসারিত হচ্ছে না। স্বপ্ন দেখতে হয়, স্বপ্ন দেখাতে হয় আর স্বপ্নের বাস্তবায়নের মাধ্যম দৃষ্টান্ত তৈরি করে মানুষের মধ্যে মনোবল গড়ে তুলতে হয়। প্রসঙ্গত পদ্মা সেতু নির্মাণের বিষয়টি উল্লেখ করা যেতে পারে। পদ্মা সেতু একদিন দেশের মানুষের জন্য স্বপ্ন ছিল। কিন্তু তার বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে চলছে। তবে স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে আত্মবিশ্বাস ও আত্মশক্তির মনস্তাত্ত্বিক বিষয়টি কাজ করেছে। কারণ, যখন এক ধরনের অপকৌশলের মাধ্যমে পদ্মা সেতু তৈরির অর্থায়ন বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে তখন দেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে অনেকে এটাকে অবাস্তব বলে মনে করেছিল। কিন্তু যখন তা বাস্তবতায় রূপ নেয় তখন মানুষের মধ্যে এক ধরনের আত্মবিশ্বাস ও আত্মশক্তির প্রেরণা তৈরি করেছে। ফলে এটা শুধু সামগ্রিক চিন্তাধারাকে প্রভাবিত করেনি, ব্যক্তি মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে। এখন মানুষের মধ্যে ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। তার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নে। আমেরিকার রাষ্ট্রপতি জন এফ কেনেডি ১৯৬২ সালে চন্দ্রাভিযানের স্বপ্ন আমেরিকানদের মধ্যে তৈরি করেছিলেন। ১৯৬৯ সালে চাঁদে মানুষের পদচিহ্ন এঁকে দিয়ে সেই স্বপ্ন বাস্তবতা লাভ করেছিল। বঙ্গবন্ধু বাঙালী জাতিকে একটি স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন আর স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে তার সফল বাস্তবায়ন ঘটেছে। এর প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই দেশপ্রেম, সততা ও উন্নত চিন্তাধারা মুখ্য উপাদান হিসেবে কাজ করেছে। এই তিনটি ক্ষেত্রে সমন্বয় ও তার প্রয়োগ ঘটাতে পারলে বদলে যেতে পারে বাংলাদেশ। ২০১২ সালের ১৮ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠকে সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে ‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল’ চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়। এই কৌশলের মূল উদ্দেশ্য ছিল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, সমতা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার নিশ্চিত করা। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে রাষ্ট্র সুশাসন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে একটি অপরিহার্য কৌশল হলো সমাজ ও রাষ্ট্রকে দুর্নীতিমুক্ত রাখা এবং দেশে শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই কৌশলটি বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, সুশীল সমাজ এবং বেসরকারী শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। চরিত্রনিষ্ঠা আনয়নের জন্য মানুষের জীবনের একেবারে গোড়া থেকে, পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। রাজনীতিতেও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (২০১১-২০১৫) আমরা সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি দমনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছি। ‘রূপকল্প ২০২১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রণীত ‘বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পনা ২০১০-২০১১ শীর্ষক দলিলে দুর্নীতি দমনকে একটি আন্দোলন হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। এই আন্দোলনে সবাইকে অংশীদার হতে হবে।’ জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল অনুযায়ী তার বাস্তব প্রয়োগ হচ্ছে কিনা তা ভেবে দেখা দরকার। আর এই কৌশলটি প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সচেতনতার উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের দৃষ্টান্তে অনুপ্রাণিত হয়ে ১ জুলাই, ২০১৫ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ডিজিটাল ভারত গঠনের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এর অনেক আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিলেন তখন অনেকেই বিষয়টিকে সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারেনি। কিন্তু আজ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর বাস্তব প্রয়োগের মাধ্যমে মানুষ ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণার সুফল পাচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর দেশপ্রেম, সততা ও উন্নত চিন্তাধারার প্রতিফলন ঘটেছে। কিন্তু যারা নেতৃত্বের পর্যায়ে আছে তাদের অনেকের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলোর প্রতি এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ও অনীহার জায়গা তৈরি হচ্ছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে মানুষ ব্যক্তিগত ও গোষ্ঠীগত স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে দেশের স্বার্থকে বিসর্জন দিচ্ছে। একটি শ্রেণীর রক্ষণশীল মনোভাব আর অন্যদিকে আরেকটি শ্রেণীর দুর্নীতির মাধ্যমে ভোগবাদী চিন্তা-ভাবনা সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামঞ্জস্যতা দৃশ্যমান করে তুলেছে। ফলে একদিকে সুকৌশলে জঙ্গীবাদের ধারণাকে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে, আর অন্যদিকে অনৈতিকভাবে ভোগবাদী মতবাদ তৈরি করে দেশের সাধারণ মানুষকে শোষণ করার এক ধরনের অপকৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। বিশেষভাবে রাজনীতিতে নীতি ও আদর্শের চেয়ে পেশিশক্তি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টির অপপ্রয়াস চলছে। দেশজ সংস্কৃতিকে ধর্মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক করার কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতা এ বিষয়টিকে ভুলভাবে মানুষের মধ্যে তুলে ধরা হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়, বরং প্রতিটি মানুষ তার নিজ নিজ ধর্ম পালনের মাধ্যমে দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করবে। সংস্কৃতির সঙ্গে অর্থনীতি ও উন্নয়নের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। সংস্কৃতি মানুষের চিন্তাধারা ও সৃজনশীলতাকে বিকশিত করে। আর উন্নত চিন্তাধারার মাধ্যমেই আধুনিক মানসিকতার মানুষ তৈরি হয় ও তার ব্যক্তিত্ব গড়ে ওঠে। আর আধুনিক মানসিকতার মাধ্যমেই অর্থনীতি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে উদার দৃষ্টিভঙ্গি এবং ধারণার তৈরি হয়। সৌদি আরবে বর্তমানে তাদের সংস্কৃতিকে অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। শিল্পের যে নিজস্ব মূল্য রয়েছে তার মূল্যায়নের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দেশটি শুধু নিজের সংস্কৃতিকেই ধারণ করছে না, বরং তার সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য কল্যাণকর সংস্কৃতিকেও প্রাধান্য দিচ্ছে। গত ৫০ বছর ধরে ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে সৌদি আরবের তরুণ-তরুণীদের ইংরেজী শেখানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর প্রতিফলন ঘটেছে সৌদি আরবের প্রথম নারী পরিচালক হাইফা আল মানসুরের চলচ্চিত্র ‘ওয়াজাদা’র মাধ্যমে। চলচ্চিত্রের সবচেয়ে সম্মানসূচক পুরস্কার অস্কারেও এই ছবিটি স্থান করে নেয়। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মুসলিম অধ্যুষিত দেশ ইন্দোনেশিয়াতে মিশ্র সংস্কৃতি স্থান করে নিয়েছে। সাংস্কৃতিক ভিন্নতা থাকলেও সামগ্রিক জীবনাচরণে তার প্রভাব পড়েনি। এখানে আরবীয়, ভারতীয়, চীনা, মালয় ও ইউরোপীয় সংস্কৃতির মিশ্রণ রয়েছে। ফলে এই দুটি মুসলিম দেশে সংস্কৃতির সঙ্গে ধর্মের কোন ভিন্নতা নেই। মূলত ধর্ম যার যার সংস্কৃতি সবার এই উপলব্ধি এখনও পর্যন্ত আমাদের দেশে শতভাগ মানুষের মধ্যে গড়ে উঠেনি। যে কোন ধর্মের মানুষ তার নিজস্ব সংস্কৃতিকে লালন করবে, আর যদি তা করতে পারে তবে বাংলাদেশ বদলে যাবে। শিক্ষা, গবেষণা ও ইতিহাসের সঙ্গে উন্নয়নের যোগসূত্র রয়েছে। পশ্চাৎমুখী শিক্ষা মানুষের মধ্যে অনগ্রসরতা তৈরি করে। আবার প্রকৃত ইতিহাসকে যদি শিক্ষার অংশ হিসেবে গ্রহণ না করা হয় তবে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। আবার শিক্ষার সঙ্গে গবেষণার মেলবন্ধন না থাকলে অগ্রগতি ধরে রাখা যায় না। কোন রক্ষণশীল গোষ্ঠীর চাপে পড়ে আধুনিক শিক্ষা থেকে সরে দাঁড়ালে আগামী প্রজন্ম তার নিজের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে তার সমন্বয় ঘটাতে পারবে না। তাই আধুনিক শিক্ষা, গবেষণা ও প্রকৃত ইতিহাসকে প্রাধান্য দিয়ে নীতি ও আদর্শের সঙ্গে আপোস করা যাবে না। যদি আপোস না করা যায় তবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। অগ্রসরমান বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশকে সমানভাবে এগিয়ে যাবার জন্য নতুন নতুন শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করতে হবে। বর্তমানে যে শিল্প-কারখানাগুলো বিদ্যমান রয়েছে তার বাইরে বর্তমান ও আগামীর সম্ভাবনাময় শিল্পের দিকে চিন্তাধারার প্রসার ঘটানো দরকার। এক্ষেত্রে ভারত ও চীনের কর্মকৌশলকে দৃষ্টান্ত হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে। এই দুটি দেশ রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজি ট্রান্সফারের মাধ্যমে তাদের শিল্প-কারখানার পরিধি বাড়িয়ে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল করেছে। বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত উড়োজাহাজ তৈরির শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেনি। আগামী পৃথিবীর উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বিভিন্ন ধরনের ম্যাটেরিয়াল মুখ্য ভূমিকা রাখবে। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ধরনের ম্যাটেরিয়াল নিয়ে গবেষণার কাজ এগিয়ে চলেছে। যেমন-পরিবেশবান্ধব ম্যাটেরিয়াল এনার্জি উৎপাদনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার হতে পারে কিনা, মানুষের প্রয়োজনীয় অঙ্গ-প্রতঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে কোন্ ধরনের ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা যায়, বিভিন্ন ধরনের মাইক্রো চিপ্স তৈরির ক্ষেত্রে কোন্ ধরনের ম্যাটেরিয়াল সর্বোত্তম হবে এমনই বিভিন্ন ধরনের কাজ পৃথিবীব্যাপী চলছে। কিন্তু এ্যাডভান্স বিভিন্ন ধরনের ম্যাটেরিয়াল উৎপাদনের কোন শিল্প-কারখানা বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে না। কাজেই বাংলাদেশে এর বিস্তার ঘটানোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের নাসার মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে কার্যকর কর্মকৌশল গ্রহণ করাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তবে আশার কথা, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ক্ষেত্রে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে। এর সফল উৎক্ষেপণ হলে বাংলাদেশে যোগাযোগের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ঘটনার সূচনা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সমুদ্র বিজয় বাংলাদেশকে বদলে দিতে পারে। ২০১২ সালের ১৪ মার্চ ‘ইটলস’ কর্তৃক ঘোষিত রায়ে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের ১ লাখ ১১ হাজার ৬৩১ বর্গকিলোমিটারের এক বিশাল এলাকা লাভ করে। এই এলাকাগুলোর মধ্যে ছিল আঞ্চলিক জলসীমা, অর্থনৈতিক অঞ্চল, সম্প্রসারিত মহীসোপানের অবাধ অধিকার ও ১১টি গ্যাস ব্লক। পরবর্তীতে নেদারল্যান্ডসের স্থায়ী সালিশী আদালতের রায়ে বাংলাদেশ ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকা অধিকার অর্জন করে। এই বিশাল সমুদ্র অঞ্চলের স্রোতকে ব্যবহার করে বাংলাদেশ বিদ্যুত উৎপাদনে স্বনির্ভর হতে পারে। এছাড়া সী মাইনিং অর্থাৎ সমুদ্রের তলদেশে যে অসীম সম্পদের ভা-ার রয়েছে তা উত্তোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার উন্নয়নের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে পারে। বদলে যাচ্ছে সময়। দিন বদলের পালায় প্রতিদিনই পরিবর্তন ঘটছে উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার কর্মকৌশলের। আগামী দিনের বাস্তবমুখী কর্মকৌশলের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করা সম্ভব। আর সেই প্রত্যাশায় তাকিয়ে আছে আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। লেখক : শিক্ষাবিদ, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর [email protected]
×