ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

কোরীয় উপদ্বীপ নিয়ে সুর নরম করলেন ট্রাম্প

ফিরে গেল মার্কিন রণতরী

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২০ এপ্রিল ২০১৭

ফিরে গেল মার্কিন রণতরী

কয়েকদিন হুঁশিয়ারি দেয়ার পর উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার পূর্বসূরির মতো সুর নরম করেছেন। পিয়ং ইয়ংয়ের রাশ টেনে রাখার ভার বেজিংকে দিয়ে কোরিয়া উপদ্বীপের কাছ থেকে সরে গেছে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী কার্ল ভিনসেন। এএফপি ও নিউইয়র্ক টাইমস। ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর উত্তর কোরিয়া আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলার পর ট্রাম্পের নির্দেশে গত সপ্তাহে কোরিয়া উপদ্বীপের কাছে কার্ল ভিনসেন রণতরী পাঠানো হয়। ট্রাম্প একে অনেক শক্তিশালী নৌবহর বলে আখ্যায়িত করেন। অস্ট্রেলিয়া উপকূলের কাছে রণতরীটির নৌ-মহড়ায় অংশ নেয়ার কথা থাকলেও সেটি শেষ পর্যন্ত সেদিকে না পাঠিয়ে কোরিয়া অভিমুখে পাঠানো নয়। উদ্দেশ্য ছিল উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে সতর্ক করা। রণতরীটি এখন দক্ষিণ অভিমুখে রওনা হয়েছে। ভারত মহাসাগরে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া শেষে রণতরীটিকে ফের জাপান সাগরে পাঠান হতে পারে। মার্কিন নৌবাহিনীর শনিবার প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে কার্ল ভিনসেন ইন্দোনেশিয়ার জাভা ও সুমাত্রা দ্বীপের মধ্যবর্তী সুন্ডা প্রণালী অতিক্রম করছে। কার্ল ভিনসেন জাপান সাগরে মিশন শুরু করেছে, হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র শন স্পাইসার একথা বলার মাত্র চার দিন পর মার্কিন নৌবাাহিনী ছবিটি প্রকাশ করে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস মঙ্গলবার বলেন, তারা উত্তেজনা নিরসন ও কোরিয়া উপদ্বীপ অঞ্চল পরমাণু মুক্ত রাখতে বেজিংয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। এর আগে ২০১০ সালের জুলাইতে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বিমানবাহী রণতরী জর্জ ওয়াশিংটনকে জাপান সাগরের দিকে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে পরে তার গতিপথ পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পিয়ং ইয়ংয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বেজিং প্রভাব খাটাবে, এমন সম্ভাবনা খুব কম। অন্যদিকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সঙ্কট নিরসনের জন্য ওয়াশিংনের জন্য বেজিংয়ের ওপর নির্ভর করা ছাড়া খুব বেশি বিকল্প নেই। চলতি মাসে আরও আগের দিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে ট্রাম্পের সঙ্গে তার বৈঠককালেও উত্তর কোরিয়া প্রসঙ্গ এসেছিল। সেখানে ট্রাম্প চীনের কাছ থেকে যথাযথ সহযোগিতা পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন। উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ধৈর্য্য ফুরিয়ে আসছে বলেও ট্রাম্প শি’কে জানিয়েছিলেন। ফ্লোরিডার মার এ লাগোর পাম বিচে দুই নেতার মধ্যে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কোরিয়া উপদ্বীপের কাছাকাছি এলাকা জুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি রয়েছে। কেবল মাত্র দক্ষিণ কোরিয়াতেই রয়েছে ২৮ হাজারের বেশি মার্কিন সৈন্য। এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশে রয়েছে বিমান ও নৌ-ঘাঁটি। ওয়াশিংটন চাইছে বেজিং যেন উত্তর কোরিয়া থেকে কয়লা আমদানি করা বন্ধ করে। এ বিষয়ে চীনের পদক্ষেপ ইতিবাচক বলে মনে করেন ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। তবে মার্কিন সরকারী কর্মকর্তারা যাই বলুন বিশ্লেষকরা অবশ্য সেটি মনে করেন না। ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স ফর ডেমোক্র্যাসিসের গবেষক এ্যান্টোনি রুগিয়েরো বলছেন, ‘উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে লেনদেনে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত চীনের ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেয়া পর্যন্ত চীন কখনোই প্রতিবেশী দেশটির বিরুদ্ধে সত্যিকার অর্থে চাপ প্রয়োগের মতো কিছু করবে না। ফেব্রুয়ারিতে উত্তর কোরিয়া পরমাণু পরীক্ষা চালানোর পর জাতিসংঘ দেশটির ওপর সর্বশেষ যেসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে অন্যান্য দেশের মতো চীনও সই করেছিল। চীন উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে কয়লা আমদানি না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও চীন কয়লা আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করেনি।
×