ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নবগঙ্গা পুনঃখননে অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১৯ এপ্রিল ২০১৭

নবগঙ্গা পুনঃখননে অনিয়ম

নিজস্ব সংবাদদাতা, চুয়াডাঙ্গা, ১৮ এপ্রিল ॥ দেশের পতিত জলাশয়গুলো খনন করে দরিদ্র মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। তার ধারাবাহিকতার অংশ হিসাবে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী নবগঙ্গা নদী পুনঃখনন কাজ শুরু হয়েছে। তবে নদী পুনঃখনন কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেছেন চুক্তি অনুযায়ী কাজ বুঝে নেয়া হবে। কোন প্রকার অনিয়ম বরদাশত করা হবে না। এদিকে সংশ্লিষ্ট এলসিএস (ঠিকাদার) প্রতিষ্ঠানের দাবি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিয়ম মেনে খনন কাজ শেষ করা হবে। খনন কাজে দুর্নীতি প্রতিরোধে ২০ মার্চ গ্রামবাসী জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছে মৎস্য বিভাগ। এ প্রকল্পের আওতায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পদ্মবিলা ইউনিয়নের ধুতরহাট ব্রিজ থেকে বালিয়াকান্দি ব্রিজ পর্যন্ত নবগঙ্গা মরা নদী পুনঃখননের কাজ শুরু হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি খনন কাজের উদ্বোধন করা হয়। ৩১ মার্চ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সময় বাড়িয়ে তা করা হয়েছে ৩০ এপ্রিল। প্রায় দুই কিলোমিটার নদী খনন কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে দেড় কোটি টাকা। ৮ হাজার ফুট নবগঙ্গা নদী পুনঃখননের কাজ বাস্তবায়ন করছে ৬ জন এলসিএস (ঠিকাদার)। যার প্রতি ঘনফুট মাটি কাটার ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৪ টাকা। স্থান ভেদে দুই থেকে পাঁচ ফুট গভীর ও প্রস্থে ৪০-৮০ ফুট খনন করার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। বুড়ো পাড়া গ্রামের সেলিম মল্লিক সলিম, আবু তালেব, লায়েকসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, কাজের স্পটে এসে দেখছি নদীর যে দুপাড় আছে। এই দুপাড়ের কিছু উঁচু উঁচু জায়গা ছিল। সেই জায়গাগুলো কেটে উপরে তুলে দিয়েছে। আর তলদেশের মাটি কোন জায়গায় ৩ ফুট, ৪ ফুট ও ২ ফুট খনন করতে হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ৪ ফুট তো দূরের কথা এক ইঞ্চি জায়গা খনন হয়নি। যে অবস্থার নদী ছিল সেই অবস্থায় আছে। খাল খননের নামে পুকুর চুরি হচ্ছে। কাজের নামে অনিয়মই হচ্ছে বেশি। পদ্মবিলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এ নবগঙ্গা নদী খনন করা হলে এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। নদী তীরবর্তী কয়েক হাজার মানুষ গৃহস্থলীর কাজ করতে পারবে। নদীতে মাছ চাষের ফলে আমিষের ঘাটতি পূরণ হবে। তার মতে ঠিকাদাররা ভালভাবে কাজটি করছে। এলসিএস (ঠিকাদার) কামাল উদ্দিন বলেন, নবগঙ্গা নদীর পুনঃখনন কাজ ৬টি গ্রুপের মাধ্যমে করা হচ্ছে। ১টি গ্রুপের কাজ ১০ লাখ টাকা ও বাকি ৫টি গ্রুপের কাজ ২৮ লাখ টাকা করে ধরা হয়েছে। আমার কাজটি হচ্ছে ২৮ লাখ টাকায়। প্রথমে নদীর পানি সেঁকে ফেলা হয়েছে। পরে মেশিনের সাহায্যে মাটি কেটে নদীর পাড় বাঁধার কাজ চলছে। আমরা সিডিউল মোতাবেক নিয়ম মেনেই কাজটি করছি। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, মৎস্য বিভাগের আওতায় এ প্রকল্পের খনন কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হবে। কোন প্রকারের অনিয়ম বরদাশত করা হবে না।
×