ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তৃণমূলে স্থানীয় সরকারের সুফল

১০৮০ ইউনিয়নে গ্রাম আদালত কাজ করছে

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ১০ এপ্রিল ২০১৭

১০৮০ ইউনিয়নে গ্রাম আদালত কাজ করছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তৃণমূল পর্যায়ে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সুফল পৌঁছে দিতে দেশে গ্রাম আদালত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ শেষে এখন দ্বিতীয় পর্যায়ের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। ইউএনডিপি, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে এক হাজার ৮০টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালত কাজ করে যাচ্ছে। এ আদালতের মাধ্যমে গত সাত বছরে ৭০ লাখের বেশি গ্রামীণ জনগোষ্ঠী বিচারিক সহায়তা পেয়েছেন। রবিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে প্রকল্পটির ২য় পর্যায়ের কার্যক্রমের ওপর আয়োজিত এক সভায় গ্রাম আদালতের জাতীয় প্রকল্প পরিচালক ইকরামুল হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেনÑ স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ইইউ প্রতিনিধি মারিও রনকোনি, ইউএনডিপির পরিচালক সুদীপ্ত মুখার্জি ও প্রকল্প সমন্বয়ক সরদার এম আসাদুজ্জামান প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন, দেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ পাইলট প্রকল্প ২০০৯-২০১৫ সাল মেয়াদে ১৪টি জেলার ৫৭টি উপজেলার ৩৫১টি ইউনিয়নে বাস্তবায়িত হয়েছে। এখন দ্বিতীয় পর্যায়ে ইউএনডিপি, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) ও বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগের অর্থায়নে জানুয়ারি ২০১৬ থেকে দেশের ৮টি বিভাগের ২৭টি জেলার ১২৮টি উপজেলার এক হাজার ৮০টি ইউনিয়নে কাজ শুরু করা হয়েছে। গত সাত বছরে ৭০ লাখের বেশি গ্রামীণ জনগোষ্ঠী বিচারিক সহায়তা পেয়েছেন এ আদালতের মাধ্যমে। বিপুলসংখ্যক বিরোধ নিষ্পত্তির কারণে প্রকল্পটি দেশে-বিদেশের স্টেকহোল্ডারদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে দাতা সংস্থা গ্রাম আদালতের দ্বিতীয় ধাপের কার্যক্রম চালু করা হচ্ছে। প্রথম পর্যাযের চেয়ে দ্বিতীয় ধাপে কার্যক্রমের এলাকা আরও অনেক বেশি। সভায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল মালেক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার তৃণমূলে স্থনীয় সরকার ব্যবস্থার সুফল পৌঁছে দিতে সুপ্রাচীন প্রতিষ্ঠান জেলা পরিষদের নির্বাচন সম্পন্ন করেছেন। অতীতের চারদলীয় জোট সরকার এ নির্বাচন করার সাহস পায়নি। বর্তমান সরকার বিভিন্ন সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে। গ্রাম আদালত এমন একটি সেবা যা জনগণের জীবনযাত্রার মানকে উন্নত করতে পারে। এটি বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে শান্তি ও সম্প্রীতি বাড়াতে কাজ করছে। গ্রাম আদালতের মাধ্যমে গ্রামের হাজার হাজার বিরোধ নিষ্পত্তি হচ্ছে। যদি এ আদালত কাজ না করত তাহলে হাজার হাজার মামলা হত। এতে মামলা জট আরও বেড়ে যেত। গ্রাম আদালতের সুফল জনগণ পেয়েছে বলেই দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। সভায় বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ প্রকল্পের প্রথম ও ২য় পর্যায় বাস্তবায়নের জন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ৪০ মিলিয়ন ইউরোর বেশি অর্থ সহায়তা দিয়েছে। এর সঙ্গে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগণের কাছে বিচারিক সুবিধা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার আরও ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা করেছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২ কোটি ১০ লাখ গ্রামীণ ও দরিদ্র জনগণকে উন্নত আইনী সহায়তা দেবে। গ্রাম আদালতকে সাহায্য করতে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৯১৪ ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিনিধি ও কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ৩ হাজার ৫২৯ গ্রাম পুলিশ প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। এ প্রকল্পের প্রথম ছয় বছরে ৮৭ হাজার ২০০ মামলার মধ্যে ৬৯ হাজার ২০০টি মামলা সাফল্যের সঙ্গে সমাধান করা হয়েছে।
×