ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিটিং সার্ভিস বন্ধ না হলে কঠোর ব্যবস্থা ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৬ এপ্রিল ২০১৭

সিটিং সার্ভিস বন্ধ না হলে কঠোর ব্যবস্থা ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর সড়কে ‘সিটিং সার্ভিসে’র নামে যাত্রী হয়রানি বন্ধে পরিবহন মালিকদের নেয়া উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বুধবার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম দেখতে এসে কাদের সাংবাদিকদের বলেন, শুধু বাড়তি ভাড়া আদায়ের জন্য বাসগুলোকে সিটিং সার্ভিস করা হয়েছিল। এখন মালিকরাই সেটা বন্ধ করেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। সিটিং সার্ভিস বন্ধ না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি মঙ্গলবার এক সভার পর সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে রাজধানীতে ‘সিটিং, গেটলক কিংবা স্পেশাল সার্ভিস’ নামে কোন বাস চালানো যাবে না। পাশাপাশি যাত্রীদের থেকে কোনভাবেই বাড়তি অর্থ আদায় করা যাবে না। বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা টাঙ্গাতে হবে সব বাসে। সেই সঙ্গে রুট পারমিটের শর্ত অনুযায়ী বাস পরিচালনার জন্য মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সমিতির নেতারা। অন্যথায় কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রোড পারমিটে সিটিং সার্ভিস বলে কোন শব্দ নেই। দেখা গেছে, অফিস আওয়ারে হাজার হাজার যাত্রী রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু গাড়ি সিটিং বলে চলে যাচ্ছে। যাত্রীরা যেতে পারছেন না। সিটিংয়ের নামের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার সময় পুরো পথের ভাড়া নেয়া হচ্ছে। আবার রাস্তা থেকে যাত্রীও তোলা হচ্ছে। আমরা মনে করি দীর্ঘদিন ধরে চলা এই অনিয়ম বন্ধ হওয়া জরুরী। পরিবহন মালিক প্রতিনিধিদের সভায় যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করা, সরকার নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী ভাড়া আদায়, প্রতি গাড়িতে ভাড়ার তালিকা টাঙ্গানো এবং গাড়ির ছাদ থেকে ক্যারিয়ার, সাইড এ্যাঙ্গেল ও অতিরিক্ত সিট খুলে ফেলারও সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতে চালক ও সহকারীদের শাস্তি দেয়া হলেও মালিকরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইনে চালক হেলপারের পাশাপাশি মালিকদেরও অপরাধের জন্য শাস্তির আওতায় আনার বিধান রাখা হচ্ছে। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ, মালিক ও শ্রমিকসহ সকলের স্বার্থ সংরক্ষণ করেই আইন করা হচ্ছে। ব্যক্তিগত কারও বিরুদ্ধে এই আইন নয় বলেও জানান সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রয়োজনে আরও কঠোর আইন চূড়ান্তভাবে পাস করা হবে। তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন আইন- ২০১৭ এর খসড়া শুধুমাত্র নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে। সেখানে অনেকেই মতামত দিচ্ছেন। সবার মতামতের ভিত্তিতে এই আইনটি করা হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা চেষ্টা করছি পরিবহন সেক্টরকে শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসতে। এজন্য সব চেষ্টাই করা হচ্ছে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পরিবহন চালানো যাবে না। তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত পরিবহন ভাড়া মেনে চলতে মালিকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেউ যাত্রীদের থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হবে। বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোসাম্মাৎ জোহরা খাতুনের নেতৃত্বে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে সকাল দশটা থেকে শুরু হয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম। ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় চার চালককে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দেন তিনি। এছাড়া দুটি গাড়িকে ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয় এবং ১৩ গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। জরিমানা আদায় করা হয় ১৫ হাজার টাকা।
×