ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

আবহাওয়ার পূর্বাভাস সিস্টেম উন্নয়ন

১১ কোটি ডলার ঋণ দিল বিশ্বব্যাংক

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ৬ এপ্রিল ২০১৭

১১ কোটি ডলার ঋণ দিল বিশ্বব্যাংক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আবহাওয়া পূর্বাভাস ও আগাম সর্তকর্বাতা উন্নয়নে ১১ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ) মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ আঞ্চলিক আবহাওয়া ও জলবায়ু সেবা’ শীর্ষক প্রকল্পে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। এ লক্ষ্যে বুধবার বাংলাদেশ সরকার এবং আইডিএর মধ্যে একটি ঋণচুক্তি সই হয়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) ভারপ্রাপ্ত সচিব কাজী শফিকুল আযম এবং আইডিএর পক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান চুক্তিতে সই করেন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আইডিএ বিনা সুদে এই ঋণ প্রদান করছে। তবে ঋণের ওপর শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিজ চার্জ প্রযোজ্য। ৬ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৮ বছরে বাংলাদেশকে ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে হবে। জানা গেছে, প্রকল্পটি বাংলাদেশে আবহাওয়া, পানি, দুর্যোগ ঝুঁকি এবং জলবায়ু সম্পর্কিত তথ্য সেবা পদ্ধতি শক্তিশালীকরণে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, রাজশাহী এবং নওগাঁ এই ৪ জেলায় আকস্মিক বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং অনাবৃষ্টির বিষয়ে কমিউনিটি পর্যায়ে পাইলটিং ভিত্তিতে আগাম সতর্কবার্তা প্রদান ব্যবস্থা চালু করা হবে। এতে করে এসব এলাকার ১০ লাখেরও বেশি মানুষ উপকৃত হবে। প্রকল্পের আওতায় দেশব্যাপী এগ্রো-মেট্রোলজিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম পোর্টাল স্থাপনের পাশাপাশি ৪৮৭টি উপজেলায় এগ্রো-মেট ইনফরমেশন কিওস্কি এবং ৪ হাজার ৫১টি ইউনিয়নে এগ্রো-মেট ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করা হবে। এতে করে ৩০ হাজারেরও বেশি কৃষক পরিবার আবহাওয়া এবং পানি সম্পর্কিত তথ্য প্রাপ্তির সুযোগ তৈরি হবে। ফলে তারা আবহাওয়া অবস্থা হিসেবে রেখে সময়োপযোগী পরিকল্পনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম হবে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে চিমিয়াও ফান বলেন, বাংলাদেশ প্রায়ই প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়। আবহাওয়ার নির্ভুল পূর্বাভাস এবং তথ্যাদির অভাবে অর্থনীতির অন্যতম প্রধান খাত কৃষির উৎপাদনশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ১৬ শতাংশ কৃষি থেকে আসে এবং মোট জনগোষ্ঠীর ৪৫ শতাংশ এই খাতে নিয়োজিত। তিনি বলেন, আবহাওয়া ও জলবায়ু সম্পর্কিত নির্ভুল এবং বৈজ্ঞানিক তথ্য নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রকল্পটি দুর্যোগ প্রস্তুতি শক্তিশালীকরণে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে কৃষকদের জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করবে, ফলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে। অনুষ্ঠানে শফিকুল আযম বলেন, দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। আবহাওয়া ধরন কোন একটি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এ বিষয়টি অনুধাবন করে আমরা এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বৃহত্তর সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি করছি। একই সঙ্গে আবহাওয়া ও জলবায়ু মনিটারিং ফ্রেমওয়ার্ক আধুনিকায়নের মাধ্যমে কমিউনিটি পর্যায়ে আগাম সতর্কবার্তা প্রদানে ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। সূত্র জানায়, সরকারের তিনটি সংস্থাÑ বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যৌথভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৯৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের পরিমাণ প্রায় ৯০৪ কোটি টাকা (১১ কোটি ৩০ লাখ ডলার)। অবশিষ্ট অর্থ সরকারের নিজস্ব তহিবল থেকে যোগান দেয়া হবে। প্রকল্পটি জুলাই ২০১৬ হতে জুন ২০২১ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হবে।
×