ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহী ও হবিগঞ্জ মেয়র বরখাস্তের আদেশ স্থগিত

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৫ এপ্রিল ২০১৭

রাজশাহী ও হবিগঞ্জ মেয়র বরখাস্তের আদেশ স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে দ্বিতীয় এবং হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জি কে গউছকে তৃতীয় দফায় সাময়িক বরখাস্তের আদেশ হাইকোর্ট স্থগিত করে দিয়েছেন। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বিএনপি সমর্থিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপীল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেছে। অন্যদিকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর রায় ফাঁসের মামলায় ১০ বছরের কারাদ-প্রাপ্ত ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামকে এক বছরের জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দীকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশ পালন না করায় তিন সচিবসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দায়ে কেন ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চগুলো এ আদেশ প্রদান করেছে। মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও মেয়র জি কে গউছকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ হাইকোর্ট স্থগিত করে দিয়েছে। বুলবুল ও গউছের দুটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেয়। তাদের সাময়িক বরখাস্তের ওই আদেশ কেন ‘আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না’- তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছে আদালত। স্থানীয় সরকার সচিব, উপ সচিব; রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপার; রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসককে এই রুলের জবাব দিতে হবে। হাইকোর্টের একই বেঞ্চ আগের দিন সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বরখাস্তের আদেশও স্থগিত করেছিল। ওই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপীল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় একটি ‘নোট’ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। রাজশাহী নগর বিএনপি সভাপতি বুলবুল ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জি কে গউছও মঙ্গলবার শুনানির সময় হাইকোর্টে উপস্থিত ছিলেন। তাদের পক্ষে শুনানি করেন যথাক্রমে আমিনুল হক হেলাল ও খন্দকার মাহবুব হোসেন। আদেশের পর দুই আইনজীবী বলেন, তাদের মক্কেলদের মেয়র পদে দায়িত্ব পালনে আইনগত কোনা বাধা নেই। “আমাদের প্রত্যাশা ছিল বিচার বিভাগের কাছে সঠিক বিচারটাই পাব। আমি আস্থাশীল ছিলাম। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে যে বিপন্ন করা হচ্ছে, আমাদের আমলাতন্ত্রকে যে দুর্বল করা হচ্ছে বা ভুল বোঝানো হচ্ছে সেটি বাংলাদেশের বিচার বিভাগ উপলব্ধি করতে পেরে যে আদেশ দিয়েছে তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।” ব্যারিস্টার ফকরুলের জামিন ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর রায় ফাঁসের মামলায় ১০ বছরের কারাদ-প্রাপ্ত ব্যারিস্টার ফকরুল ইসলামকে এক বছরের জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। নিম্ন আদালতের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ব্যারিস্টার ফকরুলের আপীল শুনানিতে মঙ্গলবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। গত বছরের ৬ ডিসেম্বর ব্যারিস্টার ফকরুলের আপীল গ্রহণের পর থেকে শুনানি চলছে হাইকোর্টে। আপীল গ্রহণের পর জামিন চেয়ে আবেদন করেন ব্যারিস্টার ফকরুল। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত মঙ্গলবার এক বছরের জামিন মঞ্জুর করে। আদালতে ব্যারিস্টার ফকরুলের পক্ষে শুনানি করেন জয়নুল আবেদীন ও মিজানুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ ও সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোরশেদ। জাবির রেজিস্ট্রার ॥ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দীকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রেজিস্ট্রারকে এই রুলের জবাব দিতে হবে। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সাইয়েদা ফাহমিজা বেগমের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি মোঃ আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষক ফাহমিজা বেগম ২০০৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই মাসের অনুমোদিত ছুটিতে ছিলেন। তা সত্ত্বেও ওই তারিখ থেকেই তাকে বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বরখাস্তের সেই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ওই শিক্ষক। তিন সচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল ॥ আদালতের নির্দেশ পালন না করায় তিন সচিবসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দায়ে কেন ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। ভূমি সচিব, পরিবেশ সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব, নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, ভোলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ ১৪ জনকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোঃ আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করে। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আলী মোস্তফা খান, সঙ্গে ছিলেন সাইদ আহমেদ কবির। পরে আইনজীবী সাইদ আহমেদ কবির জানান, ভোলা সদরের চর মংলা মৌজার ভোলা খাল দখল বিষয়ে আদালত ২০১৫ সালে রুলসহ একটি আদেশ দিয়েছিল। কেন ভোলা খাল দখলমুক্ত করার নির্দেশ দেয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছিল।
×