স্টাফ রিপোর্টার ॥ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তার কারণে রবিবার দুপুর বারোটা থেকে বঙ্গভবনের অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গভবনসহ আশপাশের এলাকায় যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে রাখা হচ্ছে সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ, গুরুত্বপূর্ণ ভবন, স্থাপনা ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ। দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক স্থানসহ জনবহুল জায়গাগুলোতে বসানো হয়েছে অতিরিক্ত সিসি ক্যামেরা। ঢাকার প্রবেশ পথগুলোতে ইতোমধ্যেই বাড়তি চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, এবার মহান স্বাধীনতা দিবসে সারাদেশে পুলিশ, র্যাব ও
গোয়েন্দাদের পাশাপাশি বাড়তি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দেশে একের পর এক জঙ্গী আস্তানা আবিষ্কৃত হওয়া এবং জঙ্গীদের গ্রেফতার হওয়ার প্রেক্ষিতে এবারের নিরাপত্তা থাকছে কঠোর। আপৎকালীন মুহূর্ত মোকাবেলায় র্যাবের হেলিকপ্টার প্রস্তুত থাকছে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকছে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাবসহ গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রবেশ পথে বসানো হচ্ছে একাধিক আর্চওয়ে মেটাল ডিটেক্টর। তার আশপাশে বসানো হচ্ছে অসংখ্য সিসি ক্যামেরা।
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধান বিচারপতি, বিচারকগণ, বিদেশী কূটনীতিক, উর্ধতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, নগরীর বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বাড়তি নিরাপত্তার পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হচ্ছে যানবাহন চলাচলের উপর। রাজধানীতে বসেছে অসংখ্য চেকপোস্ট।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও তার আশপাশের স্থান, জাতীয় জাদুঘর, ধানম-ির ঘটনাবহুল ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর), সচিবালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও থাকছে কড়া নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে। ক্যামেরাগুলো পুলিশ ও র্যাব যৌথভাবে মনিটরিং করছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানান, সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মহান স্বাধীনতা দিবসে সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সরকারী-বেসরকারী নানা ধরনের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য অনেক আগ থেকেই সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। সারাদেশেই গোয়েন্দা নজরদারি চলছে।
পুলিশ মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক জানান, যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশের তরফ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন। আপৎকালীন মুহূর্ত মোকাবেলায় র্যাবের হেলিকপ্টারসহ সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাহিনীর মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। শুক্রবার ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রবিবার মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিবর্গ, সামরিক ও আধা-সামরিক, দেশী-বিদেশী কূটনীতিকবৃন্দ, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন। আগত অতিথিবৃন্দের যানবাহন সুষ্ঠুভাবে চলাচলের জন্য বঙ্গভবনের আশপাশ এলাকায় রবিবার দুপুর বারোটা থেকে বঙ্গভবনের অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
যেসব রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে ॥ জিরো পয়েন্ট থেকে গুলিস্তান আন্ডারপাস রাজউক ক্রসিং পর্যন্ত সকল প্রকার বাণিজ্যিক যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। আহাদ বক্স হতে ইত্তেফাক পর্যন্ত সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। আলিকো গ্যাপ থেকে দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা ও রাজউক ক্রসিং পর্যন্ত সকল প্রকার গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। পার্ক রোডের উত্তর মাথা থেকে ইত্তেফাক অভিমুখী কোন প্রকার যানবাহন চলাচল করবে না। দৈনিক বাংলা থেকে রাজউক অভিমুখী ও ২৪ তলা ভবন থেকে রাজউক অভিমুখী বাণিজ্যিক গাড়ি চলাচল করবে না।
যেখান দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে ॥ শুধু হানিফ ফ্লাইওভার ব্যবহারকারী যানবাহনসমূহ নির্ধারিত সড়ক দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। এছাড়া শাপলা চত্বর ও দৈনিক বাংলা থেকে রাজউক-গুলিস্তানগামী সকল বাস দৈনিক বাংলা, ইউবিএল, প্রেসক্লাব হয়ে যাতায়াত করবে কিংবা অন্য কোন সুবিধাজনক বিকল্প রাস্তায় চলাচল করতে পারবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: