ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাবে ঢাকা

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২২ মার্চ ২০১৭

গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাবে ঢাকা

তৌহিদুর রহমান, চট্টগ্রাম থেকে ॥ আগামী ২৫ মার্চের আগেই বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে গণহত্যাবিষয়ক তথ্য-উপাত্ত পাঠানো হবে। সে অনুযায়ী মিশনগুলো তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরবে। এছাড়াও ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। এতে সফল হতে হলে বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় করতে হবে বাংলাদেশকে। আবার গণহত্যাবিষয়ক জাতিসংঘের আরেকটি দিবস থাকায় এ স্বীকৃতি পাওয়া বিশেষ জটিলতার মধ্যে পড়তে পারে। তবে গণহত্যা দিবস পালনে স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্য বাংলাদেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কূটনৈতিক তৎপরতার উদ্যোগ নিয়েছে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম মঙ্গলবার চট্টগ্রাম থেকে কোস্টগার্ডের জাহাজ তাজউদ্দিনে করে সমুদ্র এলাকা পরিদর্শনকালে জনকণ্ঠসহ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলাদেশের পাশে যারা ছিল সেই রাষ্ট্রগুলোকে ও রাষ্ট্রের জাতীয় সংসদ বা আইনসভাগুলোকে আমরা এর স্বীকৃতির জন্য বলব। যে রাষ্ট্রগুলো আমাদের পাশে ছিল, আমরা আশা করি এ দিবসটির স্বীকৃতি তারা সবার আগে দেবেন। এটা হবে প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ। পরে আসবে বাকি দেশগুলোকে উদ্বুদ্ধ করার কাজ। তিনি বলেন, ঘটনাটি ৪৫-৪৬ বছর আগের। এখন যারা আইনপ্রণেতা, রাষ্ট্রনেতা আছেন তাদের নতুন করে বিষয়টি জানাতে হবে। ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছিলেন, দুই লাখেরও বেশি নারী নির্যাতিত হয়েছিলেন, সেটি পাকিস্তানী বাহিনী ২৫ শে মার্চ ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামে শুরু করেছিল। পাকিস্তানী বাহিনী নয় মাস এটি অব্যাহত রেখেছিল। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ ইতোমধ্যে ২০১৫ সালে ৯ ডিসেম্বর গণহত্যা সনদ গ্রহণ করেছে। সেখানে দিবসটিকে সরাসরি আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস না বলে গণহত্যার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে একটি দিবস ঘোষণা করেছে। সে ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস এটি হবে না। তবে যেটা সম্ভব সেটি হলো এটা যে গণহত্যা ছিল তার স্বীকৃতি আদায় করে নেয়া। এটি করার জন্য আমাদের কিছু ‘ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং’ দরকার। আমাদের সেভাবে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদের কয়েকজন কর্মকর্তাকে আমরা ইতোমধ্যে জাতিসংঘে ও জেনেভায় মানবাধিকার পরিষদে পাঠিয়েছি। আমাদের ওই দু’টি সংস্থার স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কী কী কাজ করতে হবে তারা তা খোঁজ নিয়ে দেখবেন। সেখানে তারা ‘ফ্যাক্টস ফাইন্ড’ করবেন এবং করার পর আমরা সেগুলো বিশ্লেষণ করে আমরা আমাদের কর্মপন্থা নির্ধারণ করব। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, আগামী ২৫ মার্চের আগেই বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে গণহত্যাবিষয়ক তথ্য-উপাত্ত পাঠানো হবে। সে অনুযায়ী মিশনগুলো তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরবে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টায় বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। তিনি আরও বলেন, আমরা যুদ্ধ করেছি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। ১৯৭১ সালে সব রাষ্ট্রের অবস্থান বর্তমানের মতো ছিল না। কোন কোন রাষ্ট্র বিরোধিতা করতে পারে। যত বেশি সম্ভব রাষ্ট্রের স্বীকৃতি আদায়ে আমরা চেষ্টা করব। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা উদাহরণ হিসেবে রুয়ান্ডার গণহত্যাকে জাতিসংঘের স্বীকৃতির বিষয়টি নিতে পারি। রুয়ান্ডার গণহত্যার জন্য আলাদাভাবে একটি দিবস পালনকে জাতিসংঘ সমর্থন করে। রুয়ান্ডার গণহত্যার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের গাফিলতি একটি বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন ছিল। আমাদের দেশের মানুষের স্বাধিকার আদায়ের যে সংগ্রাম তাকে দমন করার জন্য পাকিস্তানী বাহিনী গণহত্যা চালিয়েছিল। তিনি বলেন, আমাদের উদ্যোগটি নতুন উদ্যমে শুরু হলো। এখানে আমাদের যতটুকু রসদ দরকার তা সবই আছে। এই ইতিহাসের মধ্য দিয়ে আমরা বেড়ে ওঠেছি। কেউ যদি নিজেকে বাঙালী বা বাংলাদেশী হিসেবে দাবি করেন তাকে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে ২৫ মার্চ পাকিস্তানী বাহিনী এ দেশে গণহত্যা চালিয়েছে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি অসম্ভব কোন কাজ নয়। রেণু সংগ্রহের চেষ্টা জার্মানির বিভিন্ন জায়গার গাছে গাছে থোকায় থোকায় ফুল ফুটেছে। এসব ফুল থেকে রেণু সংগ্রহের চেষ্টায় মৌমাছি। ছবিটি সোমবার তোলা।Ñএএফপি স্বাগত জানায় তোতা মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের কেএল টাওয়ারের মিনি চিড়িয়াখানার প্রধান গেটে এই তোতা পাখিটিকে রাখা হয়েছে। চিড়িয়াখানায় প্রবেশের সময় তোতাটি সবাইকে স্বাগত জানায়। আগতরা বিষয়টিকে উপভোগ করে।Ñএএফপি
×