ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ভাল ॥ আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৬ মার্চ ২০১৭

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ভাল ॥ আওয়ামী লীগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দলটির মতে, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি অনেকাংশে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ভালো। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের রাষ্ট্রের মানবাধিকারের ওপর নজর দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী এ দলটি। রবিবার দুপুরে ধানম-িতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে দলটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং মুখপাত্র ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন দেয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা উচিত। হাছান মাহমুদ বলেন, আমেরিকায় চলতি বছরের এ পর্যন্ত ৬শ’ লোক নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে এবং গত বছর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১১শ’ লোক নিহত হয়েছে। যাদের অধিকাংশ কালো মানুষ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহতরা হিস্পানিক, কালো রেড ইন্ডিয়ান বা ধর্মীয় ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠীর লোক। এ সকল হত্যাকা-ের বিরুদ্ধে প্রায়ই যুক্তরাষ্ট্রে আন্দোলন দানা বেঁধে উঠতে দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্রে ‘কালো মানুষের জীবনও মূল্যবান’- এ শিরোনামে আন্দোলন গড়ে উঠেছে। তিনি বলেন, আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জঙ্গীবাদ দমনে যেভাবে দক্ষতা দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও তা দেখাতে পারেননি। আমেরিকায় পুলিশের গুলিতে অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। আর বাংলাদেশে পুলিশের গুলিতে তখনই কেউ মারা যায়, যখন সন্ত্রাসীরা পুলিশের ওপর হামলা করতে পাল্টা গুলি করে। ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস দারিদ্র্যবিমোচনে ভূমিকা রাখছেন’ মর্মে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের এমন বক্তব্যের বিষয়ে দলটির এই মুখপাত্র বলেন, ‘দেখুন, অর্থমন্ত্রী অনেক সময় অনেক কথা বলেন। এটা তার ব্যক্তিগত মত হতে পারে। তিনি অনেক সময় এমন বক্তব্য দেন এবং প্রত্যাহার করেন। হয়তো কিছুদিন পর এটাও তিনি প্রত্যাহার করবেন।’ দায়িত্বশীল জায়গা থেকে সরকার এবং দলীয় মতের বাইরে এমন বক্তব্য দিতে পারেন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক সৌন্দর্য। অর্থাৎ আওয়ামী লীগে যে-কেউ তার মত প্রকাশ করতে পারে, এটিরই উদাহরণ হচ্ছেÑ অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য। তিনি অকপটে তার ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করেছেন।’ হাছান মাহমুদ বলেন, ক্ষুদ্র ঋণের কুফলে দেশের প্রান্তিক দরিদ্রগোষ্ঠীর মানুষ ঋণের আষ্টেপৃষ্ঠে বন্দী হয়ে যায়। এতে তারা দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হতে থাকে। প্রকৃত অর্থে ক্ষুদ্রঋণ হচ্ছে সম্মানের সঙ্গে ভিক্ষাদান। আমাদের দেশে এই বিষয়টি বিস্তৃতি লাভ করে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার মাইক্রো ক্রেডিটের পরিবর্তে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক এবং একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ঋণের পরিবর্তে ক্ষুদ্র অনুদান প্রকল্প গ্রহণ করেন। দেশের প্রতিটি খাতে সরকারের অভূতপূর্ব সফলতার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুদ্র ঋণের পরিবর্তে ক্ষুদ্র অনুদান প্রকল্প হাতে নেয়ায় দেশের এ অভাবনীয় উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম ক্রিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×