ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৮ আরএসও জঙ্গী নেতা চার্জশীট থেকে বাদ কৃষক অন্তর্ভুক্ত

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ১ মার্চ ২০১৭

৮ আরএসও জঙ্গী নেতা চার্জশীট থেকে বাদ কৃষক অন্তর্ভুক্ত

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ টেকনাফে বিজিবির দায়েরকৃত মামলার এজাহারভুক্ত ৮ আরএসও জঙ্গীর নাম চার্জশীট থেকে বাদ দেয়া এবং একজন কৃষকের নাম অন্তর্ভুক্ত করার ঘটনায় কক্সবাজারে তোলপাড় চলছে। এ বিষয়ে আদালতপাড়া থেকে শুরু করে জেলাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। চিহ্নিত আরএসও ক্যাডারদের চার্জশীট থেকে বাদ দেয়ার ঘটনায় ভাবিয়ে তুলেছে সচেতন মহলকেও। এদিকে দেশের অখ-তা, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন এবং জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী এজাহারভুক্ত আসামিদের (আরএসও জঙ্গী) বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র দাখিল করায় আদালতে নারাজি তথা অধিকতর তদন্তের আবেদন জানাতে পারে বিজিবি। সম্প্রতি বিদেশী নাগরিকসহ গোপন বৈঠককালে বিজিবির অভিযানে তিন আরএসও ক্যাডারকে আটক করা হয়। তাদের গোপন বৈঠকস্থল থেকে ধরে ১১ আসামির বিরুদ্ধে বিজিবির হাবিলদার মোঃ বাবুল মিয়া বাদী হয়ে মামলা করেন টেকনাফ থানায়। সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৩০ জুলাই বিকেলে টেকনাফ শামলাপুর গ্রামে মৌলভি সৈয়দ করিমের বাড়িতে পার্শ্ববর্তী দেশের (মিয়ানমার) কিছু নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনের নেতাকর্মীর সঙ্গে টেকনাফ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভি রফিক ও তার সহোদর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মৌলভি আজিজসহ কয়েক ব্যক্তি গোপন বৈঠক করছিল। তারা বাংলাদেশের অখ-তা, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন, জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য হত্যা, গুরুতর জখম ও অপহরণসহ রাষ্ট্রের সম্পত্তির ক্ষতিসাধন তথা সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য গোপনে ষড়যন্ত্রমূলক ওই বৈঠকে মিলিত হয় বলে বাদী মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন। গোপন বৈঠক থেকে আরএসওর সাবেক সামরিক কমান্ডার খ্যাত হাফেজ ছলাহুল ইসলাম, মৌলভি সৈয়দ করিম ও মোঃ ইব্রাহিমকে আটক করে পুলিশ-বিজিবি যৌথবাহিনী। মামলায় ৮ পলাতক আসামির মধ্যে আরাকান বিদ্রোহী গ্রুপের (আরএসও) প্রথম সারির নেতা মাস্টার আইয়ুবসহ ৬ চিহ্নিত জঙ্গীর নাম উল্লেখ থাকলেও তৎক্ষণাৎ তাদের পিতার নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করতে পারেনি বিজিবি। তবে পরবর্তী সময়ে আসামিদের পিতার নাম ও ঠিকানা তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে জমা করেন বাদী। এজাহারে পলাতক ওসব জঙ্গীর পূর্ণ ঠিকানা না থাকায় মামলা থেকে নিজেদের দায়মুক্ত করতে তখন থেকে মরিয়া হয়ে ওঠে রোহিঙ্গা জঙ্গীরা। মোটা অঙ্কের টাকার মিশন নিয়ে একাধিক ধান্ধাবাজ নেতার মাধ্যমে দুই হাতে বিভিন্ন স্থানে খরচ করে তারা। শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র (সন্ত্রাসবিরোধী আইন) মামলা থেকে রেহাই পেয়ে যায় জঙ্গীরা। এজাহারে উল্লেখ থাকলেও সঠিকভাবে শনাক্ত করা যায়নি দাবি করে অভিযোগপত্র দাখিলকারী কর্মকর্তা শেখ আশরাফুজ্জামান (ওসি তদন্ত) বলেন, ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে বাদ পড়া আসামিদের নাম সম্পূরক চার্জশীটে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। জানা যায়, একজন কৃষককে আরএসও ক্যাডারদের সঙ্গে চার্জশীটভুক্ত আসামি করায় টেকনাফ থানার ওসি আবদুল মজিদসহ একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইজিপি বরাবরে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী এম আলী।
×