ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষ বৈঠক

পাকিস্তানে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে না আফগানিস্তান

প্রকাশিত: ০৩:২৬, ১ মার্চ ২০১৭

পাকিস্তানে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে না আফগানিস্তান

পাকিস্তান আয়োজিত অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার (ইসিও) শীর্ষ বৈঠকে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিত্ব পাঠাতে অস্বীকার করেছে আফগানিস্তান। দুদেশের মধ্যে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল বিষয়ক বিতর্কের কোন সুরাহা না হওয়ার প্রেক্ষাপটে আফগানিস্তান এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খবর ডন অনলাইনের। আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি বা প্রধান নির্বাহী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ কেউই এ শীর্ষ বৈঠকে যোগ দেবেন না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালাহউদ্দিন রাব্বানিও এ দশ সদস্য রাষ্ট্রভুক্ত ইসিও বৈঠকে যোগ দেবেন না। মন্ত্রিপরিষদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে মঙ্গলবার। পাকিস্তানে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত ও প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত ড. ওমর জাখিলওয়াল পরিবর্তে বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন বলে আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বাগতিক দেশ পাকিস্তান সোমবার এ কথা বলেছে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের একটি বৈঠক শেষ হয়েছে। উজবেকিস্তান ছাড়া অন্য দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা বৈঠকে তাদের যোগদান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পাকিস্তানে এ মাসের প্রথম দিকে কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলার পর আফগানিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা আরও খারাপ পরিস্থিতির দিকে গড়ায়। পাকিস্তান এ হামলাগুলোর জন্য আফগান ভূখ-ে অবস্থানকারী সন্ত্রাসীদের দায়ী করেছে। পাকিস্তানকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করছে যে সন্ত্রাসীরা তাদের বিরুদ্ধে কাবুলের কোন পদক্ষেপ না নেয়ার প্রতিবাদে ইসলামাবাদ আফগানিস্তান সংলগ্ন সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে এবং সীমান্ত বরাবর সন্ত্রাসীদের নিরাপদ স্থানগুলোতে গোলাবর্ষণ করেছে। পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা সার্তাজ আজিজ এ সপ্তাহে বলেছেন যে, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সন্ত্রাস বিষয়ে উদ্বেগ প্রশমনে একটি যৌথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আলোচনা করছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন যে, শীর্ষ বৈঠকের ফাঁকে এ বিষয়টির অগ্রগতি হবে। এ প্রস্তাবিত যৌথ ব্যবস্থার ওপর তাদের আলোচনার ভবিষ্যত সম্পর্কে কী ঘটেছে এ ব্যাপারে কোন পক্ষই কিছু বলছে না। কিন্তু উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিত্ব পাঠানোর বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের সিদ্ধান্ত থেকে বোঝা যায় যে, তারা সূচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে। কাবুল এ পর্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিত্ব পাঠাবে কিনা তা ভেবে আসছিল। আজিজ এর আগে বলেছেন যে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাব্বানির যোগদান নিশ্চিত। কিন্তু পাকিস্তানের প্রত্যাশা ছিল উচ্চ পর্যায়ের উপস্থিতি। ইসিও শীর্ষ বৈঠকের লক্ষ্য হচ্ছে জ্বালানি অবকাঠামো, পরিবহন ও বাণিজ্য খাতে যোগাযোগ ও সহযোগিতার উন্নয়ন। আজিজ বলেন, শীর্ষ বৈঠক শেষে গৃহীত ইসলামাবাদ ঘোষণায় এ অঞ্চলের জনগণের কল্যাণে আরও সংযোগ ব্যবসা ও সহযোগিতা গড়ে তোলার ওপর জোর দেয়া হবে। এ পরিকল্পনায় একটি কেন্দ্রীয় অবস্থানে থাকার কথা আফগানিস্তানের। কিন্তু বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, সংযোগ পরিকল্পনায় দেশটির কম সম্পৃক্ততার কারণে তা ব্যাহত হতে পারে। কিন্তু পররাষ্ট্র সচিব ধারণা বাতিল করে দিয়ে বলেন, আফগানিস্তান এর অংশীদার না হলেও সংযোগ ব্যবস্থা সম্ভব হবে। চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর যেখানে পাকিস্তান থেকে চীনের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত সম্প্রসারিত হচ্ছে সেখানে কাজাখস্থান হয়ে তাজিকিস্তান ও কিরগিজিস্তানের সঙ্গে সংযোগ ব্যবস্থা এর মধ্যেই বিদ্যমান থাকছে। তিনি তারপরও বলেন, আফগানিস্তানে যখন স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে তখন সংযোগ পরিকল্পনায় আফগানিস্তানকে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সে জন্য আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতার প্রয়োজন।
×