ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

গ্রাম সালিশের নামে প্রকাশ্যে অমানবিক সাজা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে

প্রকাশিত: ০০:৪৭, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

গ্রাম সালিশের নামে প্রকাশ্যে অমানবিক সাজা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে

সংসদ রিপোর্টার ॥ গ্রাম সালিশ বা বিচারের নামে প্রকাশ্যে অমানবিক সাজা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ ধরণের ঘটনা যাতে না ঘটে এ ব্যাপারে সরকার সচেতন রয়েছে। গ্রাম্য সালিশদার, মেম্বার বা চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অমানবিক সাজা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ হবে। রবিবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য রহিম উল্লাহ’র প্রশ্নের লিখিত জবাবে এসব তথ্য জানান আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক। তিনি জানান, গ্রাম্য সালিশদার, মেম্বার, চেয়ারম্যানগণ কর্তৃক প্রকাশ্যে বিচারে অমানবিক সাজা, যেমন চালু কেটে দেওয়া, কান ধরে উঠবস করানো, নাকে খত দেওয়া, গলায় জুতার মালা পরানো, ঝাড়– পেটা করে বাজারে ঘুরানো ইত্যাদি সাজা অমানবিক হওয়ায় তা বন্ধে এসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি এবং স্থানীয় প্রশাসনের সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা প্রদানের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং এলজিআরডি মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। সরকারি দলের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, দেশের জেলা আদালত হতে আয় হয়। বিগত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জেলা জজ আদালতসমূহ হতে মোট আয় হয়েছে ১০৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আয় হয়েছে ৪৯ কোটি ৪৭ হাজার টাকার। সরকারি দলের অপর সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়ার অপর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আনিসুল হক জানান, আইন মন্ত্রণালয় সারা দেশের আদালতে মামলা জট কমিয়ে বিচার কাজ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বর্তমান সরকার ২০১৪ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর হতে ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশের আদালতে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ৪০ লাখ ৬৪ হাজার ৫৩৭টি। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ ডিজিটালাইজেশন করার জন্য বর্তমান সরকার ই-জুডিসিয়ারী শীর্ষক একটি প্রকল্প শুরু করতে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার দলিল নিবন্ধনে প্রাচীন পদ্ধতি থেকে আধুনিক ডিজিটাল পদ্ধতি প্রবর্তনের জন্য ইতোমধ্যে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি প্রবর্তনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার প্রস্তুতের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এতে করে জনগণ দ্রুত তাদের মূল দলিল ফেরত পাবে, পাশাপাশি ভূমি রেজিস্ট্রেশনের জাল-জালিয়াতি বন্ধ হবে। অধিকন্তু সরকারের রাজস্ব আদায়ও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে। ই-পেমেন্ট অর্থাৎ অনলাইনের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন ফি, কর, ভ্যাট ইত্যাদি আদায়ের পরিকল্পনাও বর্তমান সরকারের রয়েছে।
×