ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

শিশু একাডেমিতে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিচারণ

প্রকাশিত: ০৫:১১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

শিশু একাডেমিতে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিচারণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিচারণমূলক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে বুধবার বিকেলে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষাসৈনিক ড. শরিফা খাতুন ও ভাষাসৈনিক রওশন আরা বাচ্চু। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য কবি কাজী রোজী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম এনডিসি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির পরিচালক আনজীর লিটন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আফরোজ চুমকি বলেন, বাংলা ভাষার প্রতিটি অক্ষরের মাঝে ভাষাশহীদরা মিশে আছেন। তাদের মতো দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হবে। এখনও বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃত করার জন্য একটি মহল তৎপর রয়েছে। যারা বায়ান্ন দেখেনি, একাত্তর দেখেনি, তাদের এ ইতিহাস জানানো আমাদের কর্তব্য। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কবি কাজী রোজী বলেন, প্রাণের বিনিময়ে বাংলা ভাষা এখন প্রাণ পেয়েছে। ভাষাসৈনিক ড. শরিফা খাতুন বলেন, আজকে শিশুরা যে ভাষায় কথা বলে, তা অর্জন করতে আমাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। ভাষা আন্দোলনের অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি নিজেকে গর্বিত মনে করছি। বায়ান্ন সালের একুশে ফেব্রুয়ারি প্রথম আমি গুলির আওয়াজ শুনতে পাই। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস শিশুদের মাঝে বলতে পেরে আমি নিজেকে গর্বিত মনে করছি। ভাষাসৈনিক রওশন আরা বাচ্চু বলেন, একুশ ছিল বাঙালী জাতির বেঁচে থাকার লড়াই। আমরা এমন এক সময় ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি, যে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ছেলের সঙ্গে একজন মেয়ে কথা বললে ১০ টাকা জরিমানা হতো, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কোন ছেলেমেয়ে মেলামেশা করতে পারত না। ওই পরিস্থিতিতে আমরা ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, আমন্ত্রিত ছড়াকারদের ছড়াপাঠ ও পুরস্কার বিতরণ। এ সময় শিশুদের ছড়া পাঠ করে শোনান, কবি আসলাম সানি, রফিকুল হক দাদুভাই, একুশে পদকপ্রাপ্ত ছড়াকার সুকুমার বড়ুয়াসহ আরও অনেকে। সাংস্কৃতিক আয়োজনে অংশগ্রহণ করে একাডেমির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও রাঙামাটি জেলা শাখার প্রশিক্ষণার্থীরা। ‘সাংস্কৃতিক ঘাটতি ও প্রগতির অন্ধকার’ শীর্ষক গণবক্তৃতা অনুষ্ঠিত ॥ ‘সাংস্কৃতিক ঘাটতি ও প্রগতির অন্ধকার’ শীর্ষক এক গণবক্তৃতা হয় জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বুধবার সকালে। গণবক্তৃতায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি হাশেম খান। সঞ্চালনা করেন জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তথ্যমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, পহেলা বৈশাখ, একুশে ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, ঈদ উৎসবসহ বাঙালীর ৭টি উৎসব রয়েছে। এগুলোকে ধর্মীয় মোড়ক দেয়া যাবে না। এগুলো সার্বজনীন। তেমনি কপালে লাল টিপ দেয়া বা ঘোমটা দেয়া ধর্ম দিয়ে বিচার করলে হবে না। এটা বাঙালীর সংস্কৃতি বলে অভিহিত করেন তথ্যমন্ত্রী। পদাতিকের নাটক ‘কালরাত্রি’ মঞ্চস্থ ॥ পদাতিক নাট্য সংসদের ৩৮তম প্রযোজনা ‘কালরাত্রি’ নাটক মঞ্চায়ন হয় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে বুধবার সন্ধ্যায়। লামিসা শিরীন হোসাইনের ‘লোন সার্ভাইভার’ গল্প অবলম্বনে এর নাট্যরূপ দিয়েছেন ড. তানভীর আহমেদ সিডনী এবং নির্দেশনা দিয়েছেন ওয়াহিদুল ইসলাম। নাটকের কাহিনী গড়ে উঠেছে একাত্তরের রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে। এই লড়াইয়ে সব শ্রেণী পেশার মানুষ সকল স্বার্থকে ভুলে এক কাতারে এসে দাঁড়িয়েছিল। তবে এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ও আশপাশের এলাকাকে অবলম্বন করে রচিত হয়েছে নাটকটির গল্প। নাটকে দেখা যায় একজন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের প্রাণিত করছে লড়াইয়ে নামতে। অসহযোগ আন্দোলনের পর্ব থেকে তারা পাকিস্তান রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল। মার্চের কালরাতে বেঁচে যাওয়া জগন্নাথ হলের একজন ছাত্র জানায় সে রাতের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভয়াল চিত্র আর তার সঙ্গে ছিলেন একজন শিক্ষক। সব এসে দাঁড়ায় এক স্থানে। মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর পথ প্রদর্শকের চোখে যে বাংলাদেশ বেঁচেছিল এর কথাই বলা হয়েছে নাট্য কাহিনীতে। নাটকের অভিনয় শিল্পীরা হলেনÑ শাখাওয়াত হোসেন শিমুল, সানজিদা পারভীন, মোঃ ইমরান খাঁন, ইকরামুল ইসলাম, সালমান শুভ চৌধুরী, জিনিয়া আজাদ, তাসমী চৌধুরী, আবু নাসেম লিমন, স্বরূপ, ফরহাদ সুমন, শরীফুল ইসলাম, অর্ণব, সুমন, জবা, মশিউর রহমান, সৈয়দা শামছি আরা সায়েকা ও জেনিতা রহমান হিয়া।
×