ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ আটে এক পা রিয়াল মাদ্রিদ ও বেয়ার্নের

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

শেষ আটে এক পা রিয়াল মাদ্রিদ ও বেয়ার্নের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সহজ জয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের কোয়ার্টার ফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছে দুই পরাশক্তি রিয়াল মাদ্রিদ ও বেয়ার্ন মিউনিখ। বুধবার রাতে শেষ ষোলোর প্রথম লেগের ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল ৩-১ গোলে হারিয়েছে অতিথি ইতালিয়ান ক্লাব নেপোলিকে। ঘরের মাঠ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে গ্যালাক্টিকোদের হয়ে গোল করেন করিম বেনজামা, টনি ক্রুস ও কাসেমিরো। ৭ মার্চ ইতালির নেপলসে ফিরতি লেগে বড় কোন অঘটন না ঘটলে কোয়ার্টার ফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত জিনেদিন জিদানের দলের। আরেক ম্যাচে মিউনিখের এ্যালিয়েঞ্জ এ্যারানায় বেয়ার্ন ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে ইংলিশ ক্লাব আর্সেনালকে। প্রথমার্ধে ১-১ গোলে সমতা বিরাজ করলেও দ্বিতীয়ার্ধে গানার্সদের নিয়ে ছেলেখেলায় মত্ত হয় বাভারিয়ানরা। বেয়ার্নের হয়ে জোড়া গোল করেন থিয়াগো আলকান্টারা। একটি করে গোল করেন আরিয়েন রোবেন, রবার্ট লেভানডোস্কি, টমাস মুলার। ৭ মার্চ লন্ডনের বিখ্যাত এমিরেটস স্টেডিয়ামে ফিরতি লেগে অসাধ্য সাধন করার মিশনে নামবে আর্সেনাল। তবে দলটির কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার এখনই যেন হাল ছেড়ে দিয়েছেন। নিজেদের মাঠে শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে রিয়াল। প্রথম মিনিটেই গোল পেতে পারত তারা। রোনাল্ডোর দারুণ এক পাসে বল পেয়েও গোল করতে পারেননি বেনজামা। তবে অষ্টম মিনিটেই বার্নাব্যুকে স্তব্ধ করে দেন লরেঞ্জো ইনসাইন। প্রায় মধ্যমাঠ থেকে নেয়া এই ইতালীয় ফরোয়ার্ডের শট রুখতে পারেননি রিয়াল গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। ১২ মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগ মিস করেন বেনজামা। তবে ১৮ মিনিটে বেনজামার হেডেই সমতায় ফেরে রিয়াল। কারভাহালের ক্রসে দারুণ হেড করে গোল করেন তিনি। ২৯ মিনিটে গোলের আর একটি সুযোগ মিস করে রিয়াল। এবার মিস করেন রোনাল্ডো। বিরতির পর ৪৯ মিনিটে রোনাল্ডোর বাড়ানো বলে গোল করেন টনি ক্রুস। ৫৪ মিনিটে প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে নেয়া কাসেমিরোর ভলি নেপোলির জাল খুঁজে পায়। চলতি বলে অচমকা শটে দৃষ্টিনন্দন গোলটি করেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। এরপর গোলের আরও বেশ কয়েকটি সুযোগ নষ্ট করে রিয়াল। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে এরআগে দুইবার দেখা হয়েছে নেপোলি ও রিয়ালের। ১৯৮৭ সালের সেই লড়াইয়ে দুটি ম্যাচের একটিতে জেতে রিয়াল আর বাকি ম্যাচটি ড্র হয়। ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান শিষ্যদের পারফর্মেন্সে সন্তোষ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে বেনজামার পারফর্মেন্সে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন ফরাসী কিংবদন্তি। বেনজামাও তৃপ্ত নিজের পারফর্মেন্সে। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, এটা অসাধারণ একটা রাত। আমরা দুর্দান্ত খেলেছি। শুধু আমি নয়, দলের সবাই। ঠিক যে ভয় করছিল আর্সেনাল সেটাই হয়েছে। বেয়ার্ন মিউনিখের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে ইউরোপ সেরার আসর থেকে তাদের বিদায় অনেকটাই নিশ্চিত। গত মৌসুমেও ঠিক একই ব্যবধানে বাভারিয়ানদের কাছে হেরেছিল গানার্সরা। ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে গত ছয় আসরেই শেষ ষোলো থেকে বিদায় নেয় আর্সেনাল। যার দুটি মৌসুমে বেয়ার্নের কাছে হেরেই বিদায় নেয় দলটি। এই আসরেও মোটামুটি বিদায় নিশ্চিত আর্সেন ওয়েঙ্গারের দলের। ম্যাচের শুরু থেকেই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে বেয়ার্ন। ১১ মিনিটে কাক্সিক্ষত গোলটি পেয়েও যায় বাভারিয়ানরা। ২৫ গজ দূর থেকে অসাধারণ বাঁকানো শটে লাল উৎসবের শুরু করেন ডাচ তারকা আরিয়েন রোবেন। সমতায় ফিরতে সময় নেয়নি আর্সেনাল। ডি বক্সের মধ্যে কোসিয়েলনিকে ধাক্কা মারেন লেভানডোস্কি। পেনাল্টি পায় অতিথিরা। ৩০ মিনিটে এ্যালেক্সিস সানচেজের স্পট কিক অবশ্য রুখে দেন বেয়ার্ন গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নিউয়ের। ফিরতি বলে ফের শট নিলেও পায়ে বলে সংযোগ হয়নি চিলিয়ান তারকার। মুহূর্তেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে ফিরতি শটে গোল করেন সানচেজ। বিরতি থেকে ফিরে আর্সেনালের ওপর দিয়ে বড় রকমের একটা ঝড় বইয়ে দেয় স্বাগতিকরা। ৫৩ থেকে ৬৩ এই দশ মিনিটেই তিনটি গোল করে বেয়ার্ন। শুরুটা করেন লেভাডোস্কি। লামের পাসে বল পেয়ে হেডে বল জড়িয়ে দেন পোলিশ স্ট্রাইকার। ৫৬ মিনিটে লেভার ব্যাক পাসে বল পেয়ে সহজ গোল করেন থিয়াগো। সাত মিনিট পর আবার গোল করেন এই স্প্যানিয়ার্ড। আর খেলা শেষের দুই মিনিট আগে আর্সেনালের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন মুলার। ম্যাচ শেষে আর্সেনাল কোচ ওয়েঙ্গার বলেন, দ্বিতীয় গোলটি হজমের সঙ্গে সঙ্গেই পুরো দল মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। লরাঁ কসিয়েলনি চোটের কারণে মাঠ ছাড়লে, অন্যরা যেন হারার আগেই হেরে গেল। তিনি আরও বলেন, আমি কোন অজুহাত খুঁজছি না। আমি একটি কথাই বলতে চাই, বেয়ার্ন আমাদের চেয়ে অনেক ভাল দল। তারা ম্যাচে আমাদের চেয়ে অনেক ভাল ফুটবল খেলেছে।
×