ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মনিরামপুরে অবাধে বালু উত্তোলন ॥ প্রশাসন নীরব

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মনিরামপুরে অবাধে বালু উত্তোলন ॥ প্রশাসন নীরব

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের ঝাঁপা বাঁওড় থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে এ বাঁওড় থেকে দীর্ঘ ৫ মাস ধরে বালু উত্তোলন করলেও নীরব রয়েছে প্রশাসন। এদিকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে চরম হুমকির মুখে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্যিক কেন্দ্র রাজগঞ্জ বাজারসহ ঝাঁপা গ্রাম। জানা গেছে, ঝাঁপা বাঁওড়ের তিনটি স্থানে বালু উত্তোলনের তিনটি মেশিন বসিয়েছে ঝাঁপা দক্ষিণপাড়া গ্রামের রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। মেশিন দিয়ে বৃহত্তর এ বাঁওড় থেকে তারা প্রতিদিনই ২৫/ ৩০ ট্রাক বালু উত্তোলন করছে, যা পরবর্তীতে প্রকাশ্যে স্থানীয় লোকজন ও ভাটাসহ সড়ক নির্মাণ কাজে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। বাঁওড়ের দু’পারে বসবাসকারী সাধারণ খেটেখাওয়া মানুষ জানায়, ঝাঁপা চাকলাবেড় এলাকার রবিউল ইসলামসহ স্থানীয় কয়েকজন প্রশাসনের নাম ব্যবহার করে ঝাঁপা বাঁওড়ের তিনটি পয়েন্টে দীর্ঘ ৫মাস যাবত বালু উত্তোলনের মেশিন বসিয়েছে। প্রতিদিন এসব মেশিন থেকে ২৫ থেকে ৩০ ট্রাক বালু উত্তোলন করে। এ কারণে রাজগঞ্জ বাজার ও ঝাঁপা গ্রাম মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। সচেতন মহল মনে করেন, এভাবে চলতে থাকলে রাজগঞ্জ বাজার ও ঝাঁপা গ্রাম খুব দ্রুতই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এছাড়া অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে কৃষিনির্ভর এ গ্রাম হয়ত আর রক্ষা করা সম্ভব হবে না। শুধু এ গ্রাম নয় পার্শ্ববর্তী এলাকার ১০ কিলোমিটারের বড় অংশ বর্ষা মৌসুমে নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে। সেই সাথে চরম হুমকির মুখে পড়বে ২০১৫ সালে নির্মিত ঝাঁপা গ্রাম রক্ষার একমাত্র বেড়িবাঁধও। স্থানীয়রা বলছে, বালু উত্তোলনের ফলে গ্রাম রক্ষার এ বাঁধে ফাটল দেখা দিতে পারে। আর যদি সেটা হয় তাহলে বর্ষা মৌসুমে তলিয়ে যাবে ঝাঁপা গ্রামসহ রাজগঞ্জ, হানুয়ার, দোদাড়িয়া, কোমলপুর, জোঁকা, দীঘিরপাড়, ষোলখাদা, মল্লিকপুর, খালিয়া ও চ-িপুরের একটি অংশসহ পার্শ্ববর্তী হরিহরনগর ইউনিয়নের ডুমুরখালি, তাজপুর ও রূপসপুর গ্রাম। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে এ ১০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের। এছাড়াও ভাঙ্গনের মুখে পড়বে ঝাঁপা গ্রামের একমাত্র যাতায়াতের রাস্তা ও মল্লিকপুরে নবনির্মিত ব্রিজের দু’পার। তবে, এ মুহূর্তে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে যে কোন সময় ব্রিজটির দুটি পার ধসে পড়তে পারে বলে মনে করেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে রবিউল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বন্যা কবলিত ঝাঁপাবাসীকে বাঁচাতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে, বালু উত্তোলনে কারও লিখিত অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান মৌখিকভাবে ওপরের নির্দেশ আছে।
×