ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

এমন নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে পিছু হটবেন না ট্রাম্প

নতুন নির্বাহী আদেশের চিন্তা

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

নতুন নির্বাহী আদেশের চিন্তা

সাত মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের আবেদন খারিজের পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন নির্বাহী আদেশ জারির কথা ভাবছেন। ট্রাম্প বলেছেন, তার নির্দেশ আদালতে বহাল হবে এবং আগামী সপ্তাহে আবারও কিছু জাতীয় উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে আইনী লড়াইয়ে জয়ের আশাও ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, তার ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার প্রতি আইনী চ্যালেঞ্জে তার প্রশাসন শেষ পর্যন্ত জয়ী হবে। এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। খবর বিবিসি অনলাইন ও ওয়েবসাইটের। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সাত দেশের শরণার্থী ও নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ট্রাম্পের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্বাহী নির্দেশের বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে রায় দেন সিয়াটেলের এক ফেডারেল বিচারক। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপীলে আদালত বৃহস্পতিবার রায়টি বহাল রাখে। হোয়াইট হাউস এখন ট্রাম্পের ২৭ জানুয়ারির নির্দেশ ভিন্নভাবে লেখার সম্ভাবনা বাতিল করে দিচ্ছে না। ট্রাম্পের নির্দেশে ইরান, ইরাক, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান। সিরিয়া ও ইয়েমেনের নাগরিকদের ৯০ দিনের জন্য এবং সিরিয়া ছাড়া অন্য দেশগুলোর শরণার্থীদের ১২০ দিনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। সিরিয়ার শরণার্থীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় অনির্দিষ্টকালের জন্য। নির্দেশটিতে জঙ্গিদের হামলা রোধে এক জাতীয় নিরাপত্তা পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। সফররত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আরের সঙ্গে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশকে নিরাপদ রাখার জন্য আমরা যে কোন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি। তিনি কোন নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার স্বাক্ষর করবেন কিনা, এ প্রশ্নের সরাসরি কোন উত্তর দেননি রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেছেন, আমাদের দেশের জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা সম্পৃক্ত কিছু করছি আমরা দ্রুতই। আগামী সপ্তাহেই এর কিছুটা দেখবেন। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নির্দেশ পুনরায় লেখার ব্যাপারে তিনি আভাস দিচ্ছেন কিনা, তা তিনি স্পষ্ট করেননি। তিনি বলেন, তার প্রশাসন আদালত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়া অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, আমার কোন সন্দেহ নেই যে, শেষ পর্যন্ত ওই বিশেষ মামলায় আমরা জয়ী হব। তিনি সানফ্রান্সিসকোয় নাইন্থ সার্কিট কোর্ট আপীলের তিন বিচারক প্যানেলের বৃহস্পতিবারের রুলিংয়ের প্রসঙ্গ টেনে এ কথা বলেন। প্রশাসন যতটা সম্ভব শুক্রবার সুপ্রীমকোর্টে ৯ম সার্কিট রুলিংয়ের বিরুদ্ধে আপীল করতে পারে। প্রশাসন বৃহত্তর বিচারক প্যানেলে এর আপীলের পুনঃশুনানীর জন্য ৯ম সার্কিটের প্রতি আহ্বান জানাতে পারে। ট্রাম্প টুইটারে ৯ম সার্কিট রুলিংকে লজ্জাকর বলে নিন্দা জানিয়েছেন। এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের একটি নতুন ভাষ্য বিষয়ে কাজ করছেন হোয়াইট হাউসের আইনজীবীরা। নির্দেশটি ফেডারেল আদালতের অনুমোদন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, কীভাবে অগ্রসর হওয়া যায় তার সকল বিকল্প নিয়ে ভাবছে প্রশাসন। কিন্তু আমরা চাই, আদালতে এ মামলায় আমরা জয়ী হতে। সিয়াটেলের জজ জেমস রবার্টের বৃহস্পতিবারের রুলিংটি ছিল মাত্র নির্দেশটি স্থগিত করা সম্পৃক্ত সিদ্ধান্ত এবং এতে ওয়াশিংটন ও মিনেসোটা রাজ্য-আনীত নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে চলমান মামলার বিষয়ে কোন সমাধান দেয়া হয়নি। ‘নতুন’ নির্বাহী আদেশের কথা ভাবছেন ট্রাম্প ॥ অন্যদিকে হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ফেডারেল কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রীমকোর্টে আইনী লড়াইয়ে আপাতত তারা কোন পরিকল্পনা করছেন না। নাইন্থ সার্কিট আপিল কোর্ট বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশে নিম্ন আদালতের দেয়া স্থগিতাদেশ বহাল রাখার আদেশের কথা জানায়। ওই আদেশের পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তাৎক্ষণিক এক টুইটে তিনি লেখেন : এর সঙ্গে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত এবং বিষয়টি তিনি আদালতেই দেখবেন। আদালতের ওই আদেশকে ‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত’ আখ্যায়িত করে শেষ রায় পক্ষে যাবে বলেও আশার কথা শুনিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে শুক্রবার ফ্লোরিডা থেকে ওয়াশিংটনের পথে থাকা এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঝটিকা সাক্ষাতে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সুর ছিল খানিকটা ভিন্ন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি একটি নতুন নির্বাহী আদেশের কথা ভাবছেন, যা সোম বা মঙ্গলবারের মধ্যে জারি করা হতে পারে। হোয়াইট হাউসও অবশ্য পৃথকভাবে বলেছে, ‘আমরা সক্রিয়ভাবেই পুরনো আদেশে পরিবর্তন অথবা নতুন আরেকটি নির্বাহী আদেশ জারির পরিকল্পনা করছি, যেটি আমাদের দেশকে সন্ত্রাসবাদ থেকে মুক্ত রাখবে।’ ‘অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশটি আমরা সুপ্রীমকোর্টে না নিয়ে বিচার ব্যবস্থায় আর কি কি বিকল্প রয়েছে তাও খতিয়ে দেখছি।’ যুক্তরাষ্ট্র সরকার সার্কিট কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রীমকোর্টে গেলে সেখানেই নির্ধারিত হওয়ার কথা গত ২৭ জানুয়ারি ট্রাম্পের দেয়া নির্বাহী আদেশের ভাগ্যে।
×