ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সমান শক্তির লড়াই ভাবছেন বিরাট কোহলি

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সমান শক্তির লড়াই ভাবছেন বিরাট কোহলি

স্পোর্টস রিপোর্টার হায়দরাবাদ থেকে ॥ বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম আজ হায়দরাবাদে শুরু হতে যাওয়া বাংলাদেশ-ভারত একমাত্র টেস্টকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিতে না চাইলেও ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি কিন্তু ঠিকই এই টেস্টকে ‘ঐতিহাসিক’ টেস্ট বলে দিয়েছেন। সঙ্গে এও জানিয়ে দিয়েছেন, ‘সমান শক্তির লড়াই এটি।’ ভারত টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর দল। দলে প্রতিপক্ষকে হারিয়ে দেয়ার মতো ক্রিকেটারের অভাব নেই। বিরাট কোহলি নিজে ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন তো যে কোন দলের জন্যই রীতিমত আতঙ্ক। সেই দলটির বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। যারা টেস্ট খেলাটাই ঠিকমতো খেলে না। এরপরও বাংলাদেশকে সমীহ করেই কথা বলেছেন কোহলি। ভারত অধিনায়ক বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘এটা সমান শক্তির লড়াই। বাংলাদেশের ব্যাটিংকে ছোট করে দেখার কারণ নেই। নিউজিল্যান্ডে তারা দারুণ করেছে। ওয়ানডেতে ৩৫০-এর বেশি রান করার শক্তি আছে তাদের। তাই কোনদিক থেকেই তাদের আমরা হাল্কাভাবে নিতে পারি না। তাদের মানসম্মত ক্রিকেটার আছে।’ ২০০০ সালে প্রথম টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট খেলে টেস্টের অভিজাত আঙ্গিনায় পা রাখে। অথচ সেই ভারতই ১৬ বছর হয়ে গেলেও বাংলাদেশকে দ্বিপাক্ষিক কোন সিরিজে এতদিন আমন্ত্রণ জানায়নি। অবশেষে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সেটি আবার টেস্টে। কোহলি এ নিয়ে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে এসে খেয়াল করলাম বাংলাদেশ কখনও ভারত সফরে আসেনি। আমরা গিয়েছি। কিন্তু বাংলাদেশ এরআগে কখনই দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে আসেনি।’ যেহেতু ভারতের মাটিতে প্রথমবার টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ, তাই টেস্টটাকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যাই দিলেন কোহলি। এটা নাকি ভারতের জন্যও ‘ঐতিহাসিক’ টেস্ট। কোহলি জানালেন, ‘হ্যাঁ, দুই দল বা দেশ যাই বলুন না কেন, এটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এটি বিশেষ একটি মুহূর্ত। ঘটনাক্রমে আমি অধিনায়ক হিসেবে পাচ্ছি এই ম্যাচ। কিন্তু দিনটি অবশ্যই হতে যাচ্ছে স্পেশাল।’ সঙ্গে ভারতের মাটিতে বাংলাদেশকে আরও খেলতে দেখতে চান কোহলি, ‘আমার মনে হয় এমন সময় আরও আসবে। আমরা তাদের ওখানে অনেক গিয়েছি। তাদেরও আমাদের এখানে সেভাবেই আসা উচিত। ভারতে দু’দলের সিরিজ আরও বেশি হওয়া উচিত। ভারতে এসে খেলা তাদের জন্য দারুণ হবে। কারণ ক্রিকেট খেলার জন্য ভারত সেরা জায়গা।’ বাংলাদেশকে আরও বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ দেয়ার পক্ষেও কথা বলেছেন কোহলি, ‘আমার তো মনে হয় ওদের স্কিল যথেষ্টই আছে। সমস্যা হলো খুব বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ ওরা পাচ্ছে না। টেস্ট স্কোয়াড হিসেবে আত্মবিশ্বাসটাও তাই অর্জন করতে পারছে না। খুবই মৌলিক ব্যাপার এটা। ওয়ানডেতে ওরা এত ভাল দল হয়ে উঠেছে কারণ প্রচুর ওয়ানডে খেলেছে। নিয়মিত খেলে। ওয়ানডেতে ওরা সবদলকেই হারিয়েছে। কারণ জানে এই ফরমেটে কিভাবে খেলতে হয়। টেস্ট ক্রিকেট খুব বেশি না খেললে কখনই মাইন্ডসেট বোঝা যায় না। অনুশীলন যতই করুন, ম্যাচ খেলা সবসময়ই ভিন্ন ব্যাপার। সামর্থ্য ওদের আছেই। কিন্তু মাইন্ডসেট একেক ফরমেটে একেকরকম থাকতে হয়। যত বেশি টেস্ট খেলবে, ততই ওরা এসব বুঝতে পারবে। আমি নিশ্চিত, আরও বেশি খেলার সুযোগ পেলে ওরাও দারুণ টেস্ট ক্রিকেটার হয়ে উঠবে, দারুণ দল হয়ে উঠবে।’ বাংলাদেশের প্রশংসা করলেও হায়দরাবাদ টেস্টে নিজের দলের কথাই ভাবছেন কোহলি। জানিয়েছেন, ‘ওদের (বাংলাদেশের) স্কিল এত ভাল যে প্রতিপক্ষ হিসেবে আমি চিন্তিত। দারুণ প্রতিভাবান ওরা। আমরা মনোযোগ দিচ্ছি দল হিসেবে ওদের বিপক্ষে কতটা কি করতে পারি। কোন দলই অপরাজেয় নয়। ক্রিকেট খেলা। তাই দুই দলের জন্যই সুযোগ থাকে। তবে আমরা নিজেদের খেলা ঠিক রাখতে চাই।’ ভারত কোচ অনীল কুম্বলে ইন্টারেস্টিং একটা টেস্টের অপেক্ষাতেই আছেন। বলেছেন, ‘বাংলাদেশ এখন আগের চেয়ে অনেক ভাল দল। ওদের সমীহ করতেই হবে। প্রতিপক্ষ যে-ই হোক, আমরা সবসময় সমানভাবেই নেই। নিজেদের পারফর্মেন্স নিয়েই ভাবছি আমরা। নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করতে পারলে ফল আমাদের পক্ষেই আসবে। বাংলাদেশের দারুণ কিছু ক্রিকেটার আছে। আছে ভাল অলরাউন্ডার। টেস্ট ম্যাচটি হতে যাচ্ছে দারুণ ইন্টারেস্টিং।’ দেখা যাক এখন ‘ঐতিহাসিক’ টেস্টটি কেমন হয়।
×