ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভাইরাস আক্রান্ত মসুর ক্ষেত

প্রকাশিত: ০৪:১২, ২৩ জানুয়ারি ২০১৭

ভাইরাস আক্রান্ত মসুর ক্ষেত

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীতে এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে মসুর ডালের চাষ করে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। গমসহ অন্যান্য রবি শস্যের আবাদ ছেড়ে লাভের আশায় মসুরে ঝুঁকেছিলেন কৃষক। কিন্তু কুয়াশায় ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে পুড়ে যাচ্ছে ক্ষেত। ফলে কপাল পুড়ছে কৃষকের। কৃষকরা বলছেন, গাছে ফুল আসতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে মাঠের পর মাঠ মসুরের ক্ষেতে রোগ-বালাই দেখা দিয়েছে। প্রথমে মসুর গাছের ওপরের অংশ পুড়ে লাল হয়ে যাচ্ছে। এরপর পুরো গাছটিই খুব দ্রুত শুকিয়ে মারা যাচ্ছে। এতে জমির বেশিরভাগ অংশই ফাঁকা হয়ে পড়ছে। কৃষি বিভাগ বলছে, রুট রচ ও স্টেম ফাইলাম রোগের প্রভাবে এমনটি হচ্ছে। বৃষ্টি, কুয়াশা, মেঘলা আকাশ, স্যাঁতসেঁতে মাটি ও অতিরিক্ত শিশিরের কারণে এ রোগ দুটি দেখা দেয়। সম্প্রতি বরেন্দ্র অঞ্চলে বৃষ্টির পর অতিরিক্ত কুয়াশা ও আকাশ মেঘলা থাকায় এ বালাই এসেছে। তবে সময়মতো ছত্রাকনাশক স্প্রে করলে নিস্তার মিলতে পারে। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯ উপজেলায় এবার ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে মসুর ডালের চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলায় মসুরের চাষ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব এলাকার বেশিরভাগ মসুর ক্ষেতও কুয়াশার প্রভাবে নষ্টের উপক্রম হয়েছে। জানা গেছে, জেলা-উপজেলায় এবার গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ জমিতে মসুর ডালের চাষাবাদ হয়েছে। উপজেলার বোজোড়া এলাকায় সাড়ে তিন বিঘা জমিতে মসুর চাষ করেছেন ফরিদপুর গ্রামের কৃষক তেজামুল হক (৫০)। তিনি জানান, কিছুদিন আগেই তার জমিতে মসুরের গাছে ফুল আসতে শুরু করে। ঠিক ওই সময়ই আকাশ থেকে ঝরে বৃষ্টি। এরপর থেকে কুয়াশা লেগেই আছে। এখন কয়েকদিন আগে থেকে তার জমির মসুরের গাছ পুড়তে শুরু করে। কৃষি বিভাগের স্থানীয় সহকারী কর্মকর্তা আবদুস সামাদ বলেন, রোগ নিয়ন্ত্রণে তারা কাজ করছেন। কৃষকদের এই মুহূর্তে কী করণীয় তা তাদের জানানো হচ্ছে। এতে রোগ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বৈরি আবহাওয়া ও অপরিশোধিত বীজের কারণে এসব রোগ হতে পারে। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালি বলেন, কয়েকদিন আগে বরেন্দ্র অঞ্চলে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পর অতিমাত্রায় কুয়াশা পড়েছে। এ থেকেই রোগের সূত্রপাত। এখন যেগুলো নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে সেগুলো মেঘলা আকাশ ও স্যাঁতসেঁতে মাটির কারণে হচ্ছে। তবে রোগ নিয়ন্ত্রণে কৃষি বিভাগ চেষ্টা করছে। তিনি জানান, মসুর ক্ষেতের রোগ নিয়ন্ত্রণে কৃষি বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তা ও ব্লক সুপারভাইজারদের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, কৃষকদের সচেতন করতে আমরা পুরো উপজেলায় মাইকিং, লিফলেট বিতারণ করেছি। এমনকি বিভিন্ন জায়গায় উঠান বৈঠক করে কৃষকদের কীটনাশক ব্যবহারের পরার্মশ দেয়া হচ্ছে।
×