ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা অপরিহার্য ॥ রাষ্ট্রপতি

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৩ জানুয়ারি ২০১৭

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা অপরিহার্য ॥ রাষ্ট্রপতি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে সোমবার বঙ্গভবনে জাতীয় পার্টি-জেপি’র সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। বৈঠকে রাষ্ট্রপতি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শুধু একটি নির্বাচন কমিশনই যথেষ্ট নয়, এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতাও অপরিহার্য। বৈঠকে জাতীয় পার্টি- জেপি’র পক্ষ থেকে সুষ্ঠু ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথে পদে পদে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেগুলো নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। একইসঙ্গে দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নবগঠিত কমিশনে সাধারণত সবাই নতুন থাকেন, যাদের নির্বাচনের বিষয়ে তেমন পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকে না। সংবিধান অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) পুনরায় সিইসি এবং কমিশনারদের নতুন করে কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়া যায় না। সেজন্য পুরনো কোন অভিজ্ঞ ও জ্যেষ্ঠ কমিশনারকে সিইসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া যায় কি-না, তা বিবেচনার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া রাষ্ট্রপতি নিজ বিচার-বিবেচনায় বিভিন্ন বিভাগ থেকে অন্য কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন, যেখানে নারী প্রতিনিধিত্বও থাকবে, এমন প্রস্তাবও দিয়েছে জাতীয় পার্টি-জেপি। বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে পরমত সহিষ্ণুতার সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। আর বৈঠকে জাতীয় পার্টি-জেপি’র চেয়ারম্যান এবং বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য দরকার। নির্বাচন কমিশনের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য একাধিক ধাপে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগেরও প্রস্তাব করেন তিনি। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য নির্বাচনের সময় সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার বাইরে থেকে নির্বাচনী কর্মকর্তা নিয়োগেও প্রস্তাব করেছে জেপি। জাতীয় পার্টি-জেপি চেয়ারম্যান এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বে দলের ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল বিকেল পৌনে চারটার দিকে বঙ্গভবনে প্রবেশ করে। চারটা থেকে তাঁরা দীর্ঘ এক ঘণ্টার বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে। প্রতিনিধি দলে ছিলেন- দলের মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহিম, শাহ রফিকুল বারী চৌধুরী, এ এইচ সালাহউদ্দিন মাহমুদ, মফিজুল হক বেবু, এজাজ আহমেদ মুক্তা, এটিএম আমিনুল ইসলাম পিন্টু, রুহুল আমিন এমপি, শেখ জয়নাল আবেদীন, নাজমুন্নাহার বেবী, নির্বাহী সম্পাদক সাদেক সিদ্দিকী, ভাইস-চেয়ারম্যান আজিজ বাঙ্গাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান খলিল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দফতর সম্পাদক এম. সালাহ উদ্দিন আহমেদ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কায়ের সিদ্দিকী আবু। এছাড়া রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোঃ সরোয়ার হোসেন ও রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বঙ্গভবনের গেটে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের বলেন, একটা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথে নানা বাধা রয়েছে, এবার ইউনিয়ন পরিষদ ও সর্বশেষ জেলা পরিষদ নির্বাচনেও টাকা-পয়সার কথা উঠেছে, এগুলো নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি নিজেও সাতবার নির্বাচন করে সংসদ সদস্য হয়েছেন, কাজেই নির্বাচনের বিষয়ে বর্তমান রাষ্ট্রপতি অত্যন্ত অভিজ্ঞ, আমাদেরও নির্বাচনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে নানা বাধা আছে। এগুলো একদিনে সমাধান হবে না, পর্যায়ক্রমে নিরসন করতে হবে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি অত্যন্ত অভিজ্ঞ একজন মানুষ, তিনি তাঁর বিচার-বিবেচনা দিয়ে যেই সিদ্ধান্ত নেবেন তা সরকারী দল, বিরোধী দল, সংসদের বাইরের দলগুলোসহ আমরা সবাই মেনে নেব। না মানলে নির্বাচন হবে কীভাবে?
×