ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

উজানে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা ভারতের

সিন্ধু নদের পানি বণ্টন নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দ্বারস্থ পকিস্তান

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬

সিন্ধু নদের পানি বণ্টন নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দ্বারস্থ পকিস্তান

পাকিস্তান শনিবার বিশ্বব্যাংকের প্রতি সিন্ধু নদের পানি বণ্টন চুক্তি অনুযায়ী প্রতিশ্রুতি পূরণের আহ্বান জানিয়েছে। দেশটির অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার এক চিঠিতে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমের প্রতি এ আহ্বান জানান বলে রেডিও পাকিস্তানের খবরে বলা হয়েছে। দার ওই চিঠিতে বলেন, চুক্তিতে কোন পক্ষকেই উল্লিখিত বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার সুযোগ দেয় না। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, শালিস আদালতের চেয়ারম্যান নিয়োগের কাজটি বিলম্বিত হচ্ছে, তাই ইন্ডাস ওয়াটার ট্রিটি বা আইডব্লিউটি অনুযায়ী বিশ্বব্যাংকের এক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি পালন করা উচিত। ভারত সম্প্রতি সিন্ধু নদীর উজানে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করার ফলে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। গত সোমবার বিশ্বব্যাংক নয়াদিল্লী ও ইসলামাবাদের মধ্যে শালিসী প্রক্রিয়া স্থগিতের কথা ঘোষণা করে বিকল্প উপায়ে মতভেদ নিরসনের জন্য দেশ দুটির প্রতি আহ্বান জানায়। বিশ্বব্যাংকের এ ঘোষণা পাকিস্তানের স্বার্থ ক্ষুণœ করেছে বলে দারের চিঠিতে বলা হয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত আইডব্লিউটির আওতায় ভারত পুরো অধিকার প্রয়োগের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ লক্ষ্যে শুক্রবার এক উচ্চপর্যায়ের আন্তঃমন্ত্রণালয় টাস্কফোর্সের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সুষ্ঠু সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে পাঞ্জাব এবং জম্মু ও কাশ্মীরকে একই অবস্থানে আনার ওপর আলোকপাত করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নৃপেন্দ্র মিশ্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় পশ্চিমের তিনটি নদী সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাবের পানি সংগ্রহ করার জন্য জম্মু ও কাশ্মীরে জলবিদ্যুত প্রকল্প ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের ওপর আলোচনা হয়। পূর্বাঞ্চলীয় নদী ব্যবস্থায় ভারতের অধিকার রয়েছে বলে পুরো প্রক্রিয়ায় পাঞ্জাবের অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ এবং তাই রাজ্যের প্রধান সচিব বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। টাস্কফোর্সের আগামী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে জানুয়ারিতে। দুই দেশের মধ্যে ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত আইডব্লিউটির শর্তানুযায়ী পূর্বাঞ্চলীয় নদীগুলোর পানি ভারত পাবে। নদীগুলোর পানিপ্রবাহ প্রদানে ভারতের ওপর বাধ্যবাধকতা থাকলেও দেশটি গৃহস্থালি কাজে ব্যবহারসহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে পশ্চিমাঞ্চলের তীরবর্তী এলাকায় ৩৬ লাখ একর ফুট (এমএএফ) পর্যন্ত জলাধার নির্মাণ করতে পারবে। তারপরও এ পর্যন্ত ভারত কোন জলাধার সুবিধা গড়ে তোলেনি। চুক্তি অনুযায়ী সেচ ব্যবস্থায় পানি ব্যবহারের যে কোটা রয়েছে সে সুযোগও গ্রহণ করেনি ভারত। পাঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রধান সচিবরা ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেনÑ এনএমএয়ের অজিত দোভাল, পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্কর। অর্থ সচিব অশোক লাভাসা ও পানিসম্পদ সচিব শশি শেখর। তারা চেনাব ও এর তিনটি উপনদীতে প্রস্তাবিত জলবিদ্যুত প্রকল্প দ্রুত নির্মাণের জন্য সরকারের অগ্রাধিকারের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। উপনদী সাওয়ালকোটে ১ হাজার ৮শ’ ৫৬ মেগাওয়াট, পাকাল দুলে ১ হাজার মেগাওয়াট ও বুরসারে ৮শ’ মেগাওয়াট জলবিদ্যুত নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে। -ডন অনলাইন
×