আমরা সবাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাই। চাই সুন্দর সুঠাম দেহ। কিন্তু বিষয়টি কেবল চাওয়ার ওপর নির্ভর করে না। সে জন্য নিয়মিত ব্যায়াম, পরিশ্রম এবং ডায়েটিং প্রয়োজন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় আমরা প্রতিদিন ব্যায়ামের পরিকল্পনা করি কিন্তু করা হয়ে ওঠে না। হতে পারে এই না করার পেছনে আমাদের ব্যস্ততাও দায়ী। কিন্তু বিষয়টি যদি এমন হয় কেবল খাদ্যাভাসে কিছু পরিবর্তন এনে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ও স্লিম এবং ফিট থাকা সম্ভব, তবে কেমন হয় বলুন? বিশ্বাস হচ্ছে না? বেশ নিচের পদ্ধতিগুলো প্রয়োগ করে দেখুন স্রেফ জাদু দেখাবে।
কখনই ব্রেকফাস্ট বাদ দেবেন না
প্রবাদ আছে, ‘রাজার মতো নাস্তা করুন, রাজপুত্রের মতো লাঞ্চ আর নিঃস্বের মতো ডিনার।’ এতে কোন সন্দেহ নেই সকালের নাস্তা সারাদিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আহার। স্বাস্থ্যকর নাস্তা আপনাকে দেবে সারাদিনের কর্মশক্তি। যত ব্যস্ততাই থাকুক ব্রেকফাস্ট বাদ দেবেন না। তবে ঘুম থেকে উঠে এক ঘণ্টার মধ্যে নাস্তা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন যা আপনার পরিপাকেও সাহায্য করবে।
খাদ্যে মনোনিবেশ করুন
আমরা অনেকেই টিভি দেখি আর খাই। মায়ের বকুনি না খেলে এই কাজটি আমরা অনেকেই করে থাকি এবং এর ফলে খাওয়ার পরিমাণের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। এভাবেই আমরা অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করি। আপনি কতটুকু খাচ্ছেন এ ব্যাপারে মনোনিবেশ করা জরুরী। এভাবে বাঁচতে পারেন অতিরিক্ত ওজন যোগ হওয়া থেকে।
২৮ বার চিবিয়ে তবে খান
খুব ব্যস্ততাকালীন আমরা ঠিকমতো না চিবিয়েই খাবার গ্রহণ করি। এই তাড়াহুড়ো কখনই ভাল নয়। গবেষণায় জানা গেছে যারা সময় নিয়ে ঠিকমতো চিবিয়ে খাবার খায় তারা খাবারে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে পারেন ও ক্যালরি গ্রহণ করেন কম। তাই প্রতিটি গ্রাস অন্তত ২৮ বার চিবিয়ে খান। শুনতে যাই শোনাক একবার অভ্যাসটি তৈরি হলে আখেরে আপনারই লাভ হবে। আর খাবারের সময় ফোন কল গ্রহণ বা টেলিভিশন থেকে দূরে থাকুন।
এক সঙ্গে অধিক খাবার কখনই নয়
আমাদের শরীর এক প্রকার যন্ত্র। ইঞ্জিনের মতোই এর চাই নিয়মিত জ্বালানি। একসঙ্গে অধিক খাদ্য গ্রহণ আপনার পরিপাক ব্যবস্থাকে সøথ করে দেয়। সঙ্গতকারণেই যা স্বাস্থ্যকর নয়। আপনি অল্প করে দিনে ছয় বার খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলুন। যা আপনাকে সারাদিনের কর্ম শক্তি যোগাবে আর পরিপাকতন্ত্রকে রাখবে ভাল।
প্লেট বাছাইয়ে যতœবান হোন
যতই অবাস্তব শোনাক প্লেট বাছাই আপনার খাদ্য গ্রহণে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সাহায্য করে। ছোট প্লেট ব্যবহার আপনাকে ২০% কম খাদ্য গ্রহণে সাহায্য করবে। বড় প্লেটে খাবার পরিবেশিত হলে দেখতে কম দেখায় যা আপনাকে বেশি খেতে প্ররোচিত করে।
রাত ৮টার পূর্বে রাতের আহার গ্রহণ
পুরনো প্রবাদ, ‘আর্লি টু বেড আর্লি টু রাইজ, মেকস এ ম্যান হেলদি, ওয়েলদি এ্যান্ড ওয়াইজ।’ পুরনো হলেও প্রবাদটির গুরুত্ব কম নয়। যে কোন মূল্যে রাত ৮টার পূর্বে ডিনার গ্রহণ করুন। এর আরেকটি সুবিধা আগে ডিনার করলে আপনাকে ডিনার পূর্ববর্তী নাস্তা করতে হবে না। আরও ভাল হয় ডিনার শেষে দাঁত ব্রাশ করে এক কাপ সবুজ চা পান করুন।
নিয়ন্ত্রিতভাবে পানি পান করুন
এটা সবারই জানা যে, সারাদিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত। কিন্তু কয়জন তা মেনে চলি? আর কেবল ৮ গ্লাস পানি পান করাই যথেষ্ট নয় কখন পান করছেন তাও গুরুত্বপূর্ণ। দিনের মধ্যবর্তী সময়ে আহার গ্রহণ শেষে, সঙ্গে সঙ্গে পানি পান ঠিক নয়। বরং চেষ্টা করুন খাবার গ্রহণের ১৫ মি. পর পানি পান করতে।
অতিরিক্ত ধোয়া বা সেদ্ধ করা পরিহার করুন
ফল এবং তরিতরকারিতে আছে প্রয়োজনীয় খনিজ। অতিরিক্ত ধোয়া বা সেদ্ধ করলে গুণাগুণ নষ্ট করে দেয়। এটি পরিহার করুন।
ভারি খাবারের আগে ফল
আপনি জানেন কি, আপনার স্টমাক পূর্ণ হয়েছে ব্রেন থেকে এ সঙ্কেত আসতে ২০ মি. সময় লাগে? তাই ধীরে খান, চিবিয়ে খান। আর আপনার শরীর ডি-টক্সিফিকেশনে ফল একটি চমৎকার উপকরণ। যে কোন ভারি খাবারের ৩০ মি. পূর্বে ফল খেয়ে নিন। যা আপনাকে কেবল শক্তি যোগাবে না পরিপাকেও সাহায্য করবে।
চোখের আড়ালে রাখুন
চোখে পড়লে আমরা সহজেই জাঙ্ক ফুড বা অনেক অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ফেলি। তাই চেষ্টা করুন এদের স্রেফ চোখের আড়ালে রাখতে।
শীর্ষ সংবাদ: