ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষাবঞ্চিত শিশুরা

সমস্যায় জর্জরিত ভৈরবে আশ্রয়ণ প্রকল্পবাসী

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ১২ ডিসেম্বর ২০১৬

সমস্যায় জর্জরিত ভৈরবে আশ্রয়ণ প্রকল্পবাসী

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভৈরব, ১১ ডিসেম্বর ॥ অনিশ্চিত ভবিষ্যত নিয়ে বেড়ে উঠছে ভৈরবের কালিকাপ্রসাদের ছিদ্দিরচর এলাকার আদর্শ গুচ্ছগ্রাম, আশ্রয়ণ আর আবাসন প্রকল্পের শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত শত শত শিশু। প্রকল্প এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় প্রয়োজনবোধ করলেও দারিদ্র্যপীড়িত অভিভাবকরা দূরের স্কুলে তাদের সন্তানদের পাঠাতে পারছেন না। অপরদিকে সরকারী উদ্যোগে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেও নাগরিক অধিকারবঞ্চিত ওইসব প্রকল্পের অধিবাসীরা বাধ্য হচ্ছেন মানবেতর জীবনযাপনে। কোথাও কিছু নেই। কেউ যেন নেই তাদের জন্য। জানায়, প্রকল্পের অসহায়, দরিদ্র অধিবাসীরা। জানা গেছে, ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের ছিদ্দিরচর বাজার এলাকায় আদর্শ গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পে ৪৭, আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৫০ এবং আবাসন প্রকল্পে ২০টিসহ মোট ১১৭টি ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসিত করে সরকার। ১৯৯৭ সালে ৭ অক্টোবর আদর্শ গুচ্ছগ্রাম, ২০০০ সালের ১৮ নবেম্বর আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তৎকালীন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী জিল্লুর রহমান। আর ২০০২ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের তত্ত্বাবধানে নির্মিত আবাসন প্রকল্প বুঝে নিয়ে অধিবাসীদের কাছে হস্তান্তর করে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। বাসিন্দারা জানায়, বিগত ১৮-১৯ বছরে প্রকল্প এলাকায় বরাদ্দ পাওয়া তাদের ঘরগুলোর উপরের চালাসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনে ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে বৃষ্টির পানি আর শীতের শিশির বাইরে পড়ার আগেই তাদের ঘরের ভেতর পড়ে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। এতে করে শিশু আর বৃদ্ধসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের চরম দুর্ভোগ সইতে হচ্ছে। তাদের এইসব দুঃখ-দুর্ভোগের কথা স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনে বহুবার জানিয়েও কোন ফল পায়নি বলে জানিয়েছেন আদর্শ গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের সর্দার সাদেক মিয়া। এ প্রকল্পে বসবাসকারী শিশুদের শিক্ষার জন্য কোন সরকারী-বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়নি। শুরুতে শিক্ষার জন্য ব্র্র্যাকের সহায়তায় তিন বছর মেয়াদী একটি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা করে স্থানীয় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা, সাদ বাংলাদেশ। সেটি বন্ধ হওয়ার পর এখানকার শিশুদের শিক্ষার জন্য আর কোন প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসেনি। পানি সরবারাহের জন্য বসানো ৯টি টিউবওয়েলের সবকটি বিকল হয়ে যাওয়ায় নদী-নালার পানি ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছেন ওখানে বসবাসকারী বাসিন্দারা। ফলে তাদেরসহ শিশুদের নানা ধরনের রোগ-বালায় লেগে থাকে বলে জানান তারা। এ বিষয়ে অনেক দেনদরবার করেও কোন নতুন বরাদ্দ তাদের জন্য জোটেনি বলে অভিযোগ তাদের। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় টয়লেটের ময়লা-আবর্জনা উপচে পড়ে আঙিনায়। আর একটুখানি বৃষ্টি হলেই সেই নোংরা ময়লা পানি ঘরের ভেতর ঢুকে বাস অযোগ্য পরিবেশ তৈরি করে বলেও জানায় তারা। বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসকের এক কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, ইতোমধ্যে প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। সমস্যাগুলো নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে কথা বলে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। শীঘ্রই এসব সমস্যার সমাধান করা যাবে।
×